ক্যানিং: সুন্দরবনের জলে জঙ্গলে মানুষ যেখানেই বিপদে পড়েন, কালক্ষেপ না করে ছুটে যান সিপিএম নেতা কান্তি গাঙ্গুলি। এক সময় রায়দীঘির বিধায়ক ছিলেন। তবে, তাঁকে সরিয়ে রায়দিঘির মানুষ দেবশ্রী রায়কে বিধায়ক করেন। কিন্তু, রায়দীঘির মানুষকে মন থেকে সরিয়ে দিতে পারেননি ক্ষিতি। ফোনি থেকে আমফন – রায়দীঘির পাশেই আছেন কান্তি।
ঘূর্ণি ঝড়ের পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখেছেন কান্তি। চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, “ঘূর্ণিঝড় ও অতি বৃষ্টিতে নদী বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ফলে, জনপদের সমস্ত জলাশয়, নলকূপ ও পানীয় জলে উৎস লবনাক্ত হয়ে যায়। ফলে এই সমস্ত উৎসের জল আর পানীয় যোগ্য থাকে না। দূষিত ও লবনাক্ত জল থেকে কলেরা, আন্ত্রিক সক্রামণ হতে পারে, বর্তমান সময়ে যা থেকে ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে, তাই বিশুদ্ধ পানীয় জলের নিরবিচ্ছিন্ন যোগান নিশ্চিত করতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমানে PHE-র জলের পাউচ মজুত রাখার সাথে সাথে একটি কার্যকরী উপায় হল – বিভিন্ন জায়গায় নদীর উপরে যে ব্রীজ বা সেতুগুলি আছে সেখান থেকে ফায়ার ব্রিডেগের গাড়ি থেকে বিশুদ্ধ পানীয় জল সেতুর নিচে রাখা ভেসেলে ১০০০ লিটার জলধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ট্যাঙ্কের পাইপের সাহায্যে ভরে নিতে হবে। আয়লার সময় এই পদ্ধতিতে বিস্তীর্ণ জনপদে পানীয় জলের যোগান নিশ্চিত করতে পেরেছিলাম। যার ফলে একজন মানুষও প্লাবিত জনপদে জলবাহিত সংক্রমণে অসুস্থ হয়নি।”
মুখ্যমন্ত্রীকে তিনি আরও জানিয়েছেন, “উপযুক্ত আগাম সতর্কমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে, বর্তমানে মানুষের জীবনহানি এড়ানো গেলেও, উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় গবাদি পশুর ও অন্য প্রাণীর মৃত্যু হয়ে, এই ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগে। জলে ফুলে মৃতদেহগুলিতে দ্রুত পচন ধরে, যা থেকে বিভিন্ন ধারণের সংক্রমণ ছাড়িয়ে পড়তে পারে। তাই মরদেহগুলি, প্রচুর পরিমাণে ব্লিচিং ছড়িয়ে দ্রুত কবর দিয়ে দিতে হবে।”
এছাড়া, কান্তি মনে করেন, এই ধরণের ঘূর্ণিঝড়ে দীপাঞ্চলের বিস্তীর্ণ অংশর নদীবাঁধের ভাঙ্গন অবশ্যাম্ভাবী। ঝড়ের পরবর্তী অমাবস্যার পরে কোটাল পর্যন্ত প্রায় পনেরো দিনের অবকাশে, ক্ষতিগ্রস্থ নদীবাঁধের মেরামত ও পুনঃ নির্মাণ একটা সুযোগ থাকে। এই জন্য লোকবলের সাথে প্রচুর বাঁশ, দড়ি, তার, পেরেকও সেই সাথে অনেক পরিমান বালিব্যাগ (মোট ভর্তি বস্তা) মজুদ রাখা দরকার। সুন্দরবনের মানুষকে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে আওতাভুক্ত করে ও জনপ্রতি খাদ্যসামগ্রীর প্যাকেজ দিলে বাঁধ পুণঃনির্মানে প্রয়োজনীয় লোকবল পাওয়া যাবে, অতীত অভিজ্ঞতা থেকেই তাঁর এই বিশ্বাস।
তবে, রাজনৈতিক ভাবে পরাজিত হলেও ওই এলাকার ভাল মন্দে থাকেন কান্তি। অন্য দিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কান্তিকে পছন্দ করেন। কান্তি সৎ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, তা তিনি টিভি চ্যানেলে বলেছেন। কান্তির প্রস্তাব রাজ্য সরকার কতটা মানে তাই দেখার।