কলকাতা: ঘূর্ণিঝড়ে তাণ্ডবের ছ’দিন পরেও ফেরেনি বিদ্যুৎ৷ খাস কলকাতা থেকে শুরু করে দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ এখনও ফেরেনি৷ গোটা দক্ষিণজুড়ে বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দিলেও আশার আলো দেখাচ্ছে রাজ্য সরকারি পরিসংখ্যান৷
মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে উমপুনের ক্ষয়ক্ষতি ও রাজ্যের তৎপরতার খতিয়ান দিলেন স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি জানান, রাজ্যে ১৬টি জেলা উমপুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৬ কোটি মানুষ৷ মৃত্যু হয়েছে ৮৬ জনের৷ ৮,১৩,০০০ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হয়েছে৷ এখনও বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরে আটকে রয়েছেন আছেন ৩ লক্ষ মানুষ৷
শহর কলকাতা ও গ্রামীণ বাংলার বিদ্যুতের পরিসংখ্যানও তুলে ধরেন তিনি৷ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় অবস্থা স্বাভাবিক হতে যে আরও কিছুদিন সময় লাগবে তা একপ্রকার স্পষ্ট করে দেন স্বরাষ্ট্র সচিব৷ তিনি জানান, রাজ্যের বিদ্যুৎ বণ্টন পর্যদ WBSEDCL তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছে৷ ১০৩টি পুর শহরের মধ্যে ৯৪টিতে বিদ্যুৎ ফেরানো সম্ভব হয়েছে৷ ৯টা পুরসভায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে৷ পুজালি, বজবজ, সোনারপুর, বাদুরিয়া, হাসনাবাদ, হাবরা, অশোকনগর, গোবরডাঙ্গায় তৎপরতার সঙ্গে কাজ চলছে৷ খুব শীঘ্রই সেখানে বিদ্যুৎ ফিরে আসবে বলে তাঁরা আশাবাদী৷ গ্রামাঞ্চলের ৯০ শতাংশের বেশি জায়গায় বিদ্যুৎ ফিরেছে৷
বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা জানিয়েছে, হুগলী জেলায় ৯০ ভাগের বেশি জায়গায় বিদ্যুৎ চলে এসেছে৷ পূর্ব মেদিনীপুরে অর্ধেকের বেশি জায়গায় বিদ্যুৎ ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে৷ নদিয়াও অনেকটাই স্বাভাবিক৷ উত্তর ২৪ পরগণা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণার বিধ্বস্ত এলাকাগুলিতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে৷ অন্যদিকে সিইএসসি জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব শহরতলিতে এবং দক্ষিণ পশ্চিম শহরতলিতে তারা কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে৷ বিদ্যুৎ ফেরানোর জন্য তৎপরতার সঙ্গে কাজ চলছে৷ সমস্যার মধ্যেই যথাসাধ্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে৷ অধিকাংশ হাসপাতাল সহ গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলিতে বিদ্যুৎ চলে এসেছে৷ রাজস্থান থেকে টিম আনা হয়েছে৷ পাটুলি, পঞ্চসায়র এলাকায় কাজ করছে সেই টিম৷
স্বরাষ্ট্র সচিব আরও জানান, গ্রামাঞ্চলেও জল সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে৷ তবে যে সকল অঞ্চল অত্যন্ত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেখানে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ হলেও, স্বাভাবিক হতে আরও কিছু দিন সময় লাগবে৷ রাজ্যের বিভিন্ন এজেন্সির ২ লক্ষেরও বেশি কর্মচারী দিন রাত কাজ করছেন৷ সকল ন্যাশনাল হাইওয়ে এবং রাজ্য হাইওয়ে খুলে দেওয়া সম্ভব হয়েছে৷ টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা ৮৫ শতাংশ স্বাভাবিক হয়েছে৷ আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ৫০ লক্ষ জলের পাউচ বিতরণ করা হয়েছে৷ ৫০০টি জলের ট্যাঙ্কার দেওয়া হয়েছে৷ বহু লক্ষ ত্রিপল বিতরণ করা হয়েছে৷ বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরে খাদ্য বণ্টন করা হচ্ছে৷ বহু জায়গায় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিও সরকারের সঙ্গে সহায়তা করছে৷