হাবড়া: বাড়িতে চরম অবহেলিত হাইস্কুল শিক্ষকের বাবা৷ বাধ্য হয়ে দিন কাটছে বাড়ির সামনে ত্রিপল আশ্রয়ে। দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ায়৷ ঘটনায় চোখ কপালে প্রতিবেশীদের৷ একজন হাই স্কুলের শিক্ষক কীভাবে তাঁর বাবার সঙ্গে এমন ব্যবহার করতে পারেন সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বাসিন্দারা৷
অনেক কষ্টে ছেলেকে উচ্চ শিক্ষার শিক্ষিত করেছেন বছর ৬৫ বয়সের মিহির রায়৷ ছেলে এখন হাইস্কুলের শিক্ষক৷ কিন্তু ছেলের বারান্দা বাড়ি থাকার পরেও বাবাকে সেখানে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ৷ বাধ্য হয়ে বাড়ির সামনে ত্রিপল খাটিয়ে রয়েছেন মিহিরবাবু৷ মিহির রায় বলেন, তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় সিকিউরিটির কাজ করেন৷ লকডাউনের জেরে সেখানে তাঁর কাজ চলে গিয়েছে৷ বাধ্য হয়ে তিনি বাড়ি ফেরেন৷ কিন্তু বাড়ি ফিরে দেখেন, ছেলে ঘরে তালা দিয়ে মাকে নিয়ে মেদিনীপুরে চলে গিয়েছেন৷ তালাবন্ধ বাড়ি, কোথায় যাবেন? বাড়ির সামনে ত্রিপল খাটিয়ে থাকতে শুরু করেছেন তিনি৷ আমফানের জেরে ত্রিপল অনেক জায়গায় উড়ে গিয়েছে৷ জোড়া তালি দিয়ে তিনি থাকতে শুরু করেছেন৷ তিনি জানান, ‘অনেক কষ্টে ছেলেকে লেখাপড়া শিখিয়েছি৷ স্কুলে ভর্তি করিয়েছিলাম৷ নিজে একবেলা খেয়ে, লোকের বাড়িতে ছুতোর কাজ করে পড়াশোনা করিয়েছি ছেলেকে৷ সেই ছেলে এখন আমাকে দেখছে না৷’’
ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি নিজের টাকায় ওই বাড়ি করেছি৷ ওটা আমার বাড়ি৷ ওই বাড়ির তালা আমি খুলব না৷ বাবার যদি আমাদের সঙ্গে থাকতে হয়, মেদিনীপুরে আসতে হবে৷ আমার কাছে৷’’ মিহিরবাবু অভিযোগ, ওই বাড়িটি তাঁর৷ কিন্তু লকডাউনে তিনি মেদিনীপুরে যাবেন কীভাবে? সেই নিয়ে তিনি কোনও কথা বলেননি৷ ছেলেকে লিখে দিয়েছেন৷ ওই শিক্ষকরের ছোটবেলার প্রাইভেট টিউটর মানিক বিশ্বাস জানিয়েছেন, শিক্ষক মানে মানুষ গড়ার কারিগর। যে ছেলে বাবাকে ঘরে ঢুকতে দেয় না, সে ছোটদের কী শেখাবে। হাবড়া পুলিশের দ্বারস্থ হলে, সেখান থেকে বলা হয়েছে, বাড়ি জমি যেহেতু ছেলের নামে রেজেস্ট্রি। তাই ঘরে ঢুকতে গেলে বৃদ্ধকে আদালতের দ্বারস্থ হতে হবে৷