কলকাতা: ভার্চুয়াল জনসভা ‘জনসংবাদ ব়্যালি’র মাধ্যমে বাংলায় পরিবর্তনের ডাক দিলেন অমিত শাহ৷ একের পর এক ইস্যুতে আক্রমণের তির ছুঁড়লেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে৷
এদিন ভার্চুয়াল জনসভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রীতি মতো চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে অমিত শাহ বলেন, আমি আমাদের কাজের হিসাব দিয়েছি৷ কিন্তু গত দশ বছরে কী কাজ করেছে বাংলার সরকার? সাংবাদিক বৈঠক করে সেই হিসাব দিক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তাঁর কটাক্ষ, এই হিসাব দিতে গিয়ে, রাজ্যে বিস্ফোরণ কিংবা বন্ধ কারখানার হিসাব দিয়ে বসবেন না যেন৷ হিসাব দেখাতে হলে, রাজ্যে কতটা বিকাশ হয়েছে, সেই হিসাব দেখান৷
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোটি কোটি স্মরণার্থীকে নাগরিকত্বের অধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছে নরেন্দ্র মোদি সরকার৷ তাঁদের অধিকার দিতেই সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট (সিএএ) নিয়ে এসেছে কেন্দ্র৷ অথচ সেই সময় রাগে ফেটে পড়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ শাহ বলেন, আমি তাঁর কাছে জানতে চাই, মতুয়া সম্প্রদায়, নমশূদ্র এবং বাংলাদেশ থেকে আসা মানুষরা আপনার কি ক্ষতি করেছে আপনারা? বাংলাদেশ থেকে আসা ভাইবোনদের নাগরিকত্বের অধিকার দেওয়ার বিরোধিতা কেন করছেন আপনি? আজ আপনি সিএএ-র বিরোধিতা করছেন৷ ভোট বাক্স খোলার পর একদিন বাংলার মানুষ আপনাকে রাজনৈতিক স্মরণার্থী করে দেবে৷ সিএএ-এর বিরোধিতার ফল ভুগতে হবে আপনাকে৷ শরণার্থীদের জন্যই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন আনা হয়েছে বলে সওয়াল করেন অমিত শাহ৷
তিনি আরও বলেন, এতদিন ৫০ কোটি ভারতীয় স্বাস্থ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিল৷ কিন্তু নরেন্দ্র মোদি সরকার আয়ুষ্মান ভারত যোজনা নিয়ে আসার পর ৫০ কোটি মানুষের জীবনে নতুন আলোর সঞ্চার হয়েছে৷ এই প্রকল্পে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার খরচ সম্পূর্ণ ব্যয় করে কেন্দ্রীয় সরকার৷ তিনি জানান, গত তিন বছরেরও কম সময়ের মধ্যে প্রায় এক কোটি ভারতীয় এই প্রকল্পের মাধ্যমে সফলভাবে অস্ত্রপচার করিয়েছেন৷ এর জন্য একটা টাকাও খরচ করতে হয়নি তাঁদের৷ কিন্তু এই যোজনার সুফল পায় না বাংলা৷ নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তার ভয়ে পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে আয়ুষ্মান ভারত যোজনা ঢুকতেই দেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বাংলার গরিব মানুষের কি এই সুবিধা পাওয়ার অধিকার নেই? ম
বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন তিনি৷ অমিত শাহ বলেন, রাজনীতি করার জন্য অনেক ময়দান আছে৷ সেখানে সামনা-সামনি মোকাবিলা করতে রাজি৷ কিন্তু গরিবদের কেন বঞ্চিত করা হবে? বাংলার মানুষ কি স্বাস্থ্যের অধিকার পাবে না?
শাহ বলেন, দেশের সমস্ত রাজ্য এই যোজনা মেনে নিয়েছে৷ অরবিন্দ কেজরিওয়ালও শেষ পর্যন্ত আয়ুষ্মান ভারতকে মেনে নিয়েছে৷ কিন্তু মমতাজি কেন তা মানছেন না, বাংলার মানুষ তা জানতে চায়৷ তাঁর আশ্বাস, নির্বাচন শেষ হতে দিন, রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলেই আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প চালু হবে বাংলায়৷
অমিত শাহ আরও বলেন, এ রাজ্য লকডাউনের সময় পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরাতে সবচেয়ে কম ট্রেন নিয়েছে৷ ‘করোনা এক্সপ্রেস’ বলে উনি পরিযায়ী শ্রমিকদের অসম্মান করেছেন৷ ওই ট্রেনে চড়েই তৃণমূল এ রাজ্যের বাইরে চলে যাবে৷