নবান্নে কোভিড যুদ্ধের রূপরেখা নির্মাণ মুখ্যমন্ত্রীর, তৈরি ১৪০ সেফ হোম সেন্টার

নবান্নে কোভিড যুদ্ধের রূপরেখা নির্মাণ মুখ্যমন্ত্রীর, তৈরি ১৪০ সেফ হোম সেন্টার

a27f243d8c69c3a785fa9f6b74c957ec

কলকাতা:  করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার নবান্নের বৈঠকে রাজ্যের বর্তমান পরিসংখ্যান তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি জানান, রাজ্যে ৩১ মে পর্যন্ত রাজ্যে করোনা পজেটিভের হার ছিল ২.৭ শতাংশ৷ কিন্তু এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩.৪ শতাংশে৷ মুখ্যমন্ত্রী জানান, আক্রান্তদের মধ্যে ১০ শতাংশই বাইরে থেকে এসেছেন৷ ফলে রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে৷

ধীরে ধীরে রাজ্যে ল্যাবের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে৷ ফলে টেস্টিংয়ের সংখ্যাও বাড়ছে৷ মে মাসের শেষ পর্যন্ত ২ লক্ষ টেস্ট হয়েছিল রাজ্যে৷ কিন্তু ১৬ জুন পর্যন্ত সাড়ে তিন লক্ষের বেশি টেস্ট করা হয়েছে৷ দিনে গড়ে ৯,৫০০ টেস্ট করা হচ্ছে৷

মুখ্যমন্ত্রী জানান, ১৫ কোটি বাড়িতে পৌঁছেছেন আশাকর্মীরা৷ আমাদের রাজ্যে ৭৭টি কোভিড হাসপাতাল আছে৷ রয়েছে ১০,১০৫টি বেড, ৯৪৮টি আইসিইউ, ৩৪৫টি ভেন্টিলেটর৷ ৮ হাজার চিকিৎসক কাজ করছেন৷ ট্রেনি মিলিয়ে রয়েছে প্রায় ৯ হাজার নার্স৷

আজ পর্যন্ত রাজ্যে করোনা আক্রান্ত ৫,৭৭৭৷ কিন্তু ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন ৬,৫৩৩ জন করোনা রোগী৷ বাংলায় করোনা থেকে সুস্থতার হার ৫০.৬৮ শতাংশ বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী৷  মুখ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সবরকম ভাবে তৈরি রাজ্য৷ আগাম সতর্কতা হিসাবে ১০৪টি সেফ হোম সেন্টার করা হয়েছে৷ যাঁদের মধ্যে সামান্য লক্ষণ দেখা দিয়েছে, তাঁদের এই সেফ হাউজে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ যাতে অযথা হাসপাতালের বেড আটকে না থাকে৷ সেফ হাউজেও দিনে দু’বার চিকিৎসকরা গিয়ে রোগীদের দেখে আসবেন৷ সেফ হাউজেও সমস্ত ব্যবস্থা থাকবে৷

তিনি বলেন, অনেকেই মাস্ক পরছেন না৷ মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক৷ ঘণ্টায় ঘণ্টায় হাত ধুতে হবে৷ কোনও একটি জায়গায় একটানা বসে থাকবেন না৷ তাঁর আবেদন, করোনা লুকিয়ে রাখবেন না৷ কারণ করোনা কোনও অপরাধ নয়৷ লুকালে বিদপ আরও বাড়বে৷ বেসরকারি হাসাপাতালগুলির কাছে মুখ্যমন্ত্রীর আর্জি, কোনও রোগীকে ফেরাবেন না৷ অন্যান্য রোগীদের চিকিৎসা করুন৷ টেস্টের রিপোর্ট আসা পর্যন্ত মুমূর্ষ রোগীকে ফেলা রাখা হচ্ছে৷ আগে চিকিৎসা শুরু করতে হবে৷ পরে কোভিড টেস্ট করুন৷ টেস্টের দেরি হলে মহাভারত অশুদ্ধ হবে না৷

তিনি জানান, আলোচনার মাধ্যমে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ যাঁরা স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত, কিংবা পুলিশ, পৌরসভা বা আশা কর্মী, যাঁরা কোভিড নিয়ে কাজ করছেন, তাঁদের ‘ডিফিকাল্ট এরিয়া সিস্টেম’ হিসাবে বিবেচনা করা হবে৷ যে সকল কোভিড যোদ্ধা পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করছে, তাদের পিজিটির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ করে ইনসেনটিভ দেওয়া হবেও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, তিন বছর কাজ করলে প্রতি বছর ১০ শতাংশ করে ইনসেনটিভ পাবেন৷

অন্যদিকে, হাউস স্টাফের সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে৷ সিনিয়র রেসিডেন্টদেরও কাজে লাগানো হবে বলে উল্লেখ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি বলেন, ইনটার্নরা টিচিং, ট্রেনিংয়ের পর ইচ্ছুক হলে কোভিড চিকিৎসায় জন্য কাজ করতে পারবেন৷ রোটেশনে তাঁরা কাজ করবে৷ আগামী দিনে তাঁদের কোভিড যোদ্ধা সার্টিফিকেট দেওয়া হবে৷ পরবর্তীকালে এই সার্টিফিকেট কাজে আসবে৷ ফাইনাল ইয়ারের ডাক্তারি ছাত্রদেরও কোভিড ট্রেনি হিসাবে ব্যবহার করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে৷  মুখ্যমন্ত্রী জানান, এবার থেকে সাধারণ মানুষের স্বার্থে প্রতি প্রতিদিন ঘণ্টায় ঘণ্টায় কোভিড বেডের হিসাব জানানো হবে৷ যাতে কোন হাসপাতালে গেলে বেড পাওয়া যাবে তা, সহজেই বুঝতে পারে মানুষ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *