গান স্যালুটে শেষ শ্রদ্ধা শহিদ জওয়ান রাজেশকে, আবেগে বিহ্বল বাংলা

গান স্যালুটে শেষ শ্রদ্ধা শহিদ জওয়ান রাজেশকে, আবেগে বিহ্বল বাংলা

f5ac41507f9c17a425e13256ffdb1050

বর্ধমান: পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চিন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে শহিদ হয়েছেন ভারতের ২০ জওয়ান৷ এর মধ্যে ছিলেন দুই বঙ্গসন্তানও৷ রাজেশ ওরাং এবং বিপুল রায়৷ শুক্রবার সকালে বীরভূমের মহম্মদবাজারের বেলগড়িয়া গ্রামে পৌঁছয় রাজেশের কফিনবন্দী নিথর দেহ৷ ছেলের মৃত্যুতে শোকে পাথর গোটা পরিবার৷ বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন তাঁর বাবা-মা৷ ঘরের ছেলেকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বেলগড়িয়ায় উপস্থিত হন কয়েক হাজার মানুষ৷ চোখের জলে বিদায় জানাল গ্রামবাসীরা৷ গান স্যালুটে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয় রাজেশকে৷ দেওয়া হয় গার্ড অফ অনার৷

রাজেশ ওরাংকে যেখানে শায়িত করে হবে, সেই জায়গাটি ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছে৷ উপস্থিত রয়েছেন সেনাবাহিনীর জওয়ানরা৷ রয়েছেন রাজেশের বাবা, মা, বোন, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবরা৷ তাঁরা কেউই কথা বলার মতো পরিস্থিতিতে ছিলেন না৷  শেষ সময় রাজেশ যে বেল্ট পরেছিলেন, সেই বেল্টও  হাতে তুলে দেওয়া হবে তাঁর পরিবারের হাতে৷

বৃহস্পতিবার সন্ধে সাড়ে ৭ টার কিছু পরে নামে রাজেশ ওরাংয়ের মৃতদেহ। পানাগড় বায়ুসেনা ক্যাম্প থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় পানাগড় মিলিটারি ক্যাম্পে। রাতে মিলিটারি সেনা হাসপাতালে রাখা হয়েছিল তাঁর দেহ। শুক্রবার ভোর ৫টা নাগাদ প্রথমে তাঁর কফিন বেরোয়। সেখানে ফুলের মালা দিয়ে শহিদকে শ্রদ্ধা জানান সেনাবাহিনীর কর্মীরা। এরপরই বীরভূমের মহম্মদবাজারের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয় তাঁর মরদেহ। 

এদিন সকালে জাতীয় সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, যাতে রাস্তায় জানজট না হয়৷ রাস্তার পাশে রাজেশকে শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় পতাকা হাতে উপস্থিত হয়েছিল মানুষজন৷ বাইরের গ্রাম থেকেও বহু মানুষ তাঁর গাড়ির পিছনে হাঁটতে হাঁটতে বেসগড়িয়া আসেন৷ রাজেশের দেহ নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর বাড়িতে৷ যেখানেই কেটেছে তাঁর ছেলেবেলা৷ এই বাড়ি থেকেই মাকে বলে গিয়েছিলেন, আবার ফিরে আসব৷ কিন্তু আর ফিরল না রাজেশ৷ রাজেশকে মাটিতে শায়িত করার আগে শেষবার খুলে দেওয়া হয় কফিন৷ আরও একবার ছেলেকে জড়িয়ে ধরে তাঁর পরিবার৷ 

অন্যদিকে, সাত মাস পরেই অবসরের কথা ছিল শহিদ জওয়ান বিপুল রায়ের৷ স্ত্রী ও ৬ বছরের মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফেরার কথা ছিল তাঁর৷ কিন্তু ফিরছে বিপুল রায়ের নিথর দেহ৷ হাসিমারায় রাখা হয়েছে মরদেহ৷ ঘরের ছেলের অপেক্ষায় রয়েছে আলিপুরদুয়ার৷ হাসিমারা থেকে তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে বিপুলের গ্রামের বাড়ি বিন্দিপাড়ায়৷ বাড়ির সামনেই তৈরি হয়েছে শহিদ মঞ্চ৷ ইতিমধ্যেই বিন্দিপাড়ায় তাঁর বাড়ির সামনে জাতীয় পতাকা হাতে জড়ো হয়েছেন বিপুলের বন্ধু-বান্ধব, আত্মীস্বজন, পাড়াপ্রতিবেশিরা৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *