কেন্দ্রকে তুলোধোনা, ২১-এর আগে তৃণমূলের নয়া কর্মসূচি

কেন্দ্রকে তুলোধোনা, ২১-এর আগে তৃণমূলের নয়া কর্মসূচি

কলকাতা: করোনা পরিস্থিতিতে চলতি বছর বদল এসেছে রাজনীতির আঙিনাতেও৷ তাই ২১ জুলাই তৃণমূলের চিরাচরিত ‘শহিদ দিবস’-এ এই বছর জমবে না ধর্মতলার ভিড়৷ বরং শহিদ দিবসে হবে ভার্চুয়াল সমাবেশ৷ শহিদ দিবসের আগে আগামী ৭ জুলাই থেকে সপ্তাহব্যাপী পালিত হবে তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক কর্মসূচি৷ শুক্রবার দলীয় নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে আগামী কর্মসূচির নীল নকশা ছকে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷    

এদিনের ভার্চুয়াল বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতি এবং বাংলার বিরুদ্ধে বঞ্চনাকে তুলে ধরাই হবে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান লক্ষ্য৷ তিনি দলীয় নেতাদের বলেন, ‘‘এমন নেতাদের হাতে দেশের দায়িত্ব সঁপা হয়েছে, যাঁরা ক্রমাগত বাংলাকে বঞ্চিত করে চলেছেন৷’’ 

আগামী ৭ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মসূচি৷ যেখানে রেলের বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলবেন দলীয় কর্মীরা৷ স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং সোশ্যাল ডিস্টেনসিং বজায় রেখেই প্ল্যাকার্ড ও পোস্টার হাতে নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করবেন তাঁরা৷  লাগাতার জ্বালানি তেল এবং কেরোসিনের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ৮ জুন বিক্ষোভ দেখাবেন তৃণমূলকর্মীরা৷ প্রসঙ্গত, টানা ২২ দিন ধরে লাগাতাল পেট্রোল, ডিজেলের দাম বাড়ায় সমস্যায় পড়েছে আমজনতা৷ বাড়ছে পরিবহণের খরচ৷ এর সঙ্গে জুড়েছে করোসিনও৷ 

৯ জুলাইয়ের কর্মসূচিতে কোল ইন্ডিয়া এবং টি বোর্ডের সদর দফতর সরানোর প্রতিবাদে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মুখর হবে তৃণমূল৷ কো-অপারেটিভ ব্যাংককে রিজার্ভ ব্যাংকের আওতায় আনার সিদ্ধান্তেও নাখুশ তৃণমূল সুপ্রিমো৷ এর আগে নবান্নের বৈঠকেও এই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজের উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন তিনি৷ ১০ জুলাই এর প্রতিবাদেই চলবে তৃণমূলের বিক্ষোভ৷ 

পরবর্তী তিনদিন মানুষের দরবারে তুলে ধরা হবে তৃণমূল কংগ্রেসের জনহিতকর কর্মকাণ্ডের খতিয়ান৷ সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প এবং ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত ‘খাদ্য সাথী’ প্রকল্পে বিনা পয়সায় রেশন বণ্টনের বিষয়টি তুলে ধরা হবে৷  এছাড়াও কন্যাশ্রী, যুবশ্রী এবং সবুজ সাথী প্রকল্প থেকে রাজ্যের পড়ুয়ারা কী ভাবে উপকৃত হচ্ছে, এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে সেই ব্যাখ্যাও দেওয়া হবে৷ রাজ্যের প্রতিটি প্রান্তে জেলায় জেলায় গিয়ে রাজ্য সরকারের এই সকল প্রকল্প সম্পর্কে মানুষকে ওয়াকিবহাল করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ 

তৃণমূলের দাবি, রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প থেকে উপকৃত হয়েছে বাংলার ৭.৫ কোটি মানুষ৷ এই প্রকল্পে বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা দিয়ে থাকে সরকার৷ এছাড়াও কোভিড পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় ১ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে বলেও জানানো হয়েছে৷ ৭৮টি হাসপাতালকে কোভিড হাসপাতালে পরিণত করা হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা কোভিড-১৯ এবং আমপানের ধ্বংসযজ্ঞ মোকাবেলায় একটি বলিষ্ঠ অর্থনৈতিক কৌশল নিয়েছি। এই দুর্যোগেও বাংলার বেকারত্বের হার সারা ভারতের থেকে অনেক ভালো৷ সিএমআইই জানাচ্ছে, ২০২০ সালের জুন মাসে পশ্চিমবঙ্গের বেকারত্বের হার ৬.৫ শতাংশ, সেখানে ভারতে বেকারত্বের হার ১১ শতাংশ, উত্তরপ্রদেশে ৯.৬ শতাংশ এবং হরিয়ানায় ৩৩.৬ শতাংশ৷

তবে ২১-এর উৎসব নিয়ে এখনও চূড়ান্ত নীল নকশা তৈরি করেনি তৃণমূল৷ তবে ওই দিন দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সেই সঙ্গে ৭৭ হাজার পোলিং বুথে দলীয় পতাকা উত্তোলন করবেন দলের কর্মীরা৷ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বুথে বুথে পালিত হবে শহিদ দিবস৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 2 =