কলকাতা: কর্মসংস্থান নিয়ে চিন্তা নেই মমতা সরকারের। বাম আমলে যাও উন্নতির দিকে এগোচ্ছিল, গত এক দশকে তা তলানিতে এসে ঠেকেছে। সব মিলিয়ে শূন্য, কর্মসংস্থানের বিষয়ে এমনই মত বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর। প্রসঙ্গক্রমে তৃণমূল ও বিজেপি পরিচালিত রাজ্য হিসেবে বাংলা ও ত্রিপুরার পরিস্থিতির উল্লেখ করেছেন তিনি।
বাম জমানায় তবু শিল্প ছিল। প্রতি বছর চাকরিও হচ্ছিল নিয়ম করে। কিন্তু শিল্পের ক্ষেত্রে যা ছিল, সেগুলোও তৃণমূলের আমলে তোলাবাজির কারণে বন্ধ হয়েছে। নেই নতুন শিল্পও। স্বাভাবিকভাবেই বেকারত্বের হার বেড়েছে। মঙ্গলবার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে এমনই তোপ দাগলেন সুজন চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, 'বাম জমানায় যেভাবে উন্নতির দিকে রাজ্য এগোচ্ছিল, ২০১১ সালের পর থেকে এই ১০ বছরে সেই পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে কঠিন হলেও সেই সমস্যার সমাধান আমাদেরই করতে হবে।'
এদিন তিনি আরও বলেন, 'প্রত্যেক বছর প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা হবে। স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা হবে। কলেজ সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা হবে। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা হবে। এগুলো তো সবাই জানতই। প্রতি বছর কনস্টেবল পদে নিয়োগ হবে, এগুলো জানত রাজ্যবাসী। গত ৭-৮ বছরে কনস্টেবল পদে কোনও নিয়োগ হয়েছে কি না খোঁজ করুন!'
শুধু তা-ই নয়, মমতার সরকার কর্মক্ষেত্র থেকে সরে আসছে। সরকার শিল্পক্ষেত্রেরও কোন দায়িত্ব নিচ্ছে না। দায়িত্ব নিচ্ছে না কৃষি ক্ষেত্রেরও। তাহলে সরকারটা কীসের জন্য? সরাসরি প্রশ্ন ছুড়লেন তিনি। বাম পরিষদীয় দলনেতা এদিন বলেন, 'কমবয়সি ছেলেমেয়েদের মুখের সামনে দাঁড়াতে আমার কষ্ট হয়। কর্মসংস্থানের বিষয়ে ওদের মনে যেসব প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে, তার উত্তর দেওয়ার যোগ্যতা আমার নেই। সেই যোগ্যতা মুখ্যমন্ত্রীর আছে?'
এমনকী, যাঁরা কাজ করছেন, তাঁরা তাঁদের যোগ্য সম্মান বা বেতনও ঠিকমতো পাচ্ছেন না। উদাহরণ হিসেবে জীবিকা সেবকদের কথা বলেন তিনি। তাঁর কথায়, '৩৮ মাস ধরে মাইনে পাচ্ছেন না। চিঠি দিয়েছি। বারবার বলেছি। কিন্তু সরকার চুপ। অথচ ওই জীবিকা সেবকরা এই করোনা পরিস্থিতিতেও কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে ডিউটি করেছে।' বেকারত্বের হার যেভাবে বেড়েছে তাতে কমবয়সি ছেলেদের জীবন নষ্ট হচ্ছে। তিনি বলেন, 'একটা প্রজন্মকে নষ্ট করছি। তাঁদের হয়ে কে বলবে?' প্রসঙ্গক্রমে উঠে আসে ত্রিপুরার কর্মসংস্থানের কথা। সুজনবাবু বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূলকে যে চেহারায় দেখা যাচ্ছে, ত্রিপুরার বিজেপি-রও একই চেহারা।'