কলকাতা: চাকরির ক্ষেত্রে স্বজনপোষণের অভিযোগ এখন আকছাড়৷ এবার সেই তালিকায় জুড়ল উত্তর দমদম পুরসভার নাম৷ স্বজনপোষণের অভিযোগে সরগরম পুরসভা৷ এই পুরসভাতেই চাকরি করছেন প্রাক্তন পৌরপ্রধান সুবোধ সরকারের ছেলে৷ আবার সম্প্রতি এখানেই কাজে যোগ দিয়েছেন এক প্রভাবশালী কাউন্সিলারের মেয়ে৷ দুর্নীতি করেই তাঁরা এই চাকরিতে ঢুকেছেন বলে শাসকদলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছে বিরোধী শিবির৷
এই অভিযোগ অবশ্য কার্যত ফুৎকারে উড়িয়ে দেন পৌরপ্রধান ও বর্তমান প্রশাসক সুবোধ চক্রবর্তী৷ এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রাক্তন পৌরপ্রধান সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আপনার ছেলে যদি পরীক্ষা দিয়ে মিডিয়ায় চাকরি পায়, তার মানে কি আপনি তাঁকে চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন? আমার ছেলে পরীক্ষার জন্য আবেদন জানিয়েছিল৷ পরীক্ষা ও ইন্টারভিউ দিয়েই সে চাকরি পেয়েছে৷ আমি কারোর কাছে ছেলের জন্য সুপারিশ করিনি৷ ইন্টারভিউ বোর্ডেও আমি ছিলাম না৷ এতে অপরাধ কোথায়?’’
সাফাই দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘‘গত মার্চ মাসে ৫০ জন গ্রুপ ডি পদে লোক নিয়েছিলাম৷ এর মধ্যে মুর্শিদাবাদ, মালদা, হাবড়া, বারাসাত, বিরাটি, উত্তর দমদম সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রার্থীরা এসেছেন৷ সবাই কি প্রভাবশালী ব্যক্তির লোক? এই পৌরসভায় কারোর কোনও প্রভাব নেই৷ সকলেরই সমান অধিকার৷ এখানে যাঁরা রয়েছেন তাঁরা কেউ প্রভাবশালী নয়, সকলেই অভাবশালী৷’’ বিভিন্ন জায়গার থেকে আসা প্রার্থীরা এই পুরসভায় কাজ করছে৷ ফলে স্বজনপোষণের অভিযোগ ধোপে টেকে না বলেই দাবি প্রাক্তন পুরপ্রধানের৷
অন্যদিকে, সম্প্রতি এই পুরসভারই এক প্রভাবশালী কাউন্সিলারের মেয়ের চাকরি হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধী শিবির৷ গত ফেব্রুয়ারি মাসে ওই প্রার্থী তাঁর নিয়োগপত্র হাতে পেয়েছেন বলেও দাবি৷ এই নিয়োগ পরীক্ষায় একযোগে স্বজনপোষণের দাবি তোলে বাম, কংগ্রেস এবং বিজেপিরা৷ কিন্তু সেই দাবি অস্বীকার করে সুবোধবাবু বলেন, স্বচ্ছভাবেই ওই পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে৷ কোনও স্বজনপোষণ হয়নি৷ অন্যদিকে, এক অদ্ভূত কথা শোনালেন প্রভাবশালী ওই কাউন্সিলার৷ তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমার মেয়ের চাকরি পাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই৷ সে এখন কলেজ ছাত্রী৷ আমার পরিবারে অন্য কোনও সদস্যও নেই৷ এটা সম্পূর্ণ মিথ্যে অভিযোগ৷’’ অথচ ওই কাউন্সিলারের মেয়ের নামেই গত ২৭ এপ্রিল ইস্যু করা পে- স্লিপ সংবাদমাধ্যমের হাতে এসেছে৷ যা আরও একবার প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে উত্তর দমদম পুরসভাকে৷
দুর্নীতি শব্দটা কোনও একটা শাসকদলের সমার্থক হয়ে যাবে, এটা এযাবাৎকালে হয়নি বলেও দাবি তুলেছেন বিশিষ্টজনেরা৷ তৃণমূল জমানায় পিএসসি পরীক্ষাতেও দুর্নীতি হচ্ছে বলেও অভিযোগ৷