কলকাতা: রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা থাকলেও শিক্ষক বদলি প্রক্রিয়া আটকে আছে বিভিন্ন কারণে! জেলা স্কুল পরিদর্শক অফিস থেকে শূন্যপদ না দেখানোয় বদলির নোটিশ পাচ্ছিলেন না শিক্ষকরা৷ অন্যদিকে ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে পিএফ সংক্রান্ত কাজের বিবরণ চেয়ে ডিআইদের চিঠি পাঠাতে বলল বিকাশ ভবন৷ ভবনের এই সক্রিয়তায় চাপের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক সমিতি৷ যদিও পরে বিজ্ঞপ্তি জারি করে অলাইনে নোটিশ বিলির উদ্যোগ নেওয়া হলেও এখনও থমকে বহু বদলি প্রক্রিয়া৷
স্কুলশিক্ষা ডিরেক্টরেটের গ্রান্ট-ইট-এইড সেকশনের ডেপুটি ডিরেক্টর একটি চিঠি পাঠিয়েছেন জেলা স্কুল পরিদর্শকদের৷ যেখানে গত বছরের অর্ডার অনুযায়ী ইপিএফ-এর কাজ কতদূর এগিয়েছে কিংবা সেই কাজ এখনও পর্যন্ত শুরু হয়েছে কি না সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে। বাধ্যতামূলকভাবে, সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে বিকাশ ভবনে পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সব ডিআইদের। সূত্র মারফত পাওয়া খবরে জানা যাচ্ছে, গত বছর জুলাই থেকে একবছর পেরিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও অর্ডার অনুযায়ী প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু করা হয়নি উচ্চমাধ্যমিক স্তরের চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের।
আরও পড়ুন: আগস্ট থেকে স্কুলে হাজিরার নির্দেশ, ক্ষোভে ফুঁসছে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী মহল
অন্যদিকে, কোনও কোনও জেলা তৎপরতার সঙ্গে বদলির কাজ এগিয়ে নিয়ে গেলেও সামগ্রিক ভাবে রাজ্যে সেই তৎপরতা না থাকায় উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক বদলির কাজ করা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শকদের বক্তব্য, অনেক জেলাতে সরাসরি কলকাতা থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলির তালিকা যাচ্ছে। ডিআইদের সেগুলিকে অগ্রাধিকার দিতে হচ্ছে, কিন্তু কিসের ভিত্তিতে এই অগ্রাধিকার সে সম্পর্কে নির্দিষ্ট করে তাদেরও কোনও ধারণা নেই।
আরও পড়ুন: বিজেপি করব না, বাঁচব ফুটবলার পরিচয়ে! ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বিজেপি ছাড়লেন মেহতাব
এদিকে, আনলক-১ শুরু হতেই শিক্ষক শিক্ষিকারা জেলা স্কুল পরিদর্শকের অফিস থেকে বিকাশ ভবন ছুটতে ছুটতে পায়ের জুতো ছিঁড়ে ফেলেছেন৷ এ বিষয়ে নদিয়ার একজন শিক্ষিকার অভিজ্ঞতা খুবই অভিনব। তেহট্ট এলাকায় কর্মরত বাংলার শিক্ষিকা কল্যাণীর কাছাকাছি কোনও স্কুলে বদলির আবেদন করেছিলেন। স্কুলশিক্ষা দফতর, স্কুল সার্ভিস কমিশন হয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ থেকে সম্প্রতি যে তালিকা বেরিয়েছে, তাতে নিজের নাম দেখে তিনি খুবই খুশি হয়েছিলেন, কিন্তু মুহূর্তেই তা বদলে গিয়েছিল উদ্বেগে। তিনি দেখেন, যে স্কুলে তিনি কর্মরত তাঁকে সেখানেই পোস্টিং দেওয়া হয়েছে।
অল পোস্ট গ্রাজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন যাবতীয় বদলি প্রক্রিয়া দ্রুত করার দাবিতে শিক্ষা কমিশনারকে চিঠি লিখেছে। তারা জেলাগুলিতে অনলাইন বদলি প্রক্রিয়া চালু করার কথা লিখেছেন। তাদের দাবি মিউচুয়াল ট্রান্সফারে দ্রুততা আনতে হবে। এ বিষয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের এক আধিকারিক বলেন, এই মুহূর্তে ট্রেন বন্ধ থাকায় মিউচুয়াল ট্রান্সফারের শুনানি করা যাচ্ছে না। একমাত্র করোনা পরিস্থিতি কাটলেই তা দ্রুত করা যেতে পারে।