কলকাতা: বস্তিবাসীদের ফ্ল্যাটবাড়ি দিতে বদ্ধপরিকর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বিষয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সমস্যা নতুন কিছু নয়। এবার সেখানে যোগ হল এক নতুন প্রকল্প, ‘বাংলার বাড়ি’। স্বাভাবিক ভাবেই এই প্রকল্পের জন্যেও কেন্দ্র থেকে কোনও অনুদান পাওয়া যায়নি। মমতা’র দাবি, যেখানে রাজ্যকেই প্রকল্পের জন্য বেশি অর্থভার বহন করতে হবে, সেখানে প্রকল্পের কেন্দ্রীয় নামকরণ অর্থহীন।
ইতিমধ্যেই, বাগবাজারে ‘সারদা মায়ের বাড়ি’ সংলগ্ন বস্তিবাসীদের জন্য নতুন ফ্ল্যাটবাড়ি নির্মাণ করার কাজ শেষ করেছে কলকাতা পুরসভা। এবার রাজ্য সরকার নিজের অর্থেই ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে আরও তিনটি জায়গায় বস্তিবাসীদের জন্য গৃহনির্মাণের কাজ হাতে নিল।
পুরসভা সূত্রে খবর, ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডে তৈরি হচ্ছে একটি আবাসন, যেখানে ৮০টি ফ্ল্যাট থাকবে। এটি সম্পূর্ণ করতে প্রায় ৯ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা খরচ হবে। এর পাশাপাশি, ১৩২ নম্বর ওয়ার্ডে ‘সকল দেও সিং বস্তি’র কাছে তৈরি হচ্ছে ৯০টি ফ্ল্যাট, যা করতে খরচ হচ্ছে প্রায় ১১ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: স্কুলে অমিল মিড ডে মিলের চাল-আলু, অসন্তোষ দিনহাটায়
এর একটা টাকাও কেন্দ্র থেকে না নিয়ে, রাজ্য তহবিল থেকেই করা হচ্ছে বলে জানায় কলকাতা পুরসভা। ভবিষ্যতে, আরও ৪০টি ফ্ল্যাট তৈরির চিন্তা ভাবনা আছে। তবে এর থেকেও বড় প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের ক্যানাল সাউথ রোডে। সেখানে ৫ বিঘা জমিতে ২৫৬টি আবাসন তৈরির নীল নকশা জমা পড়েছে পুরসভার কাছে। পুরসভার এক আধিকারিকের কথা অনুযায়ী, চলতি বছরেই ১৩১ ও ১৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু লকডাউনের জেরে তা থমকে যায়। বর্তমানে কাজ শুরু হলেও কর্মীর অভাবে তা ঢিমেতালে চলছে।
আরও পড়ুন: রাজ্যে একলাফে করোনা আক্রান্ত আরও ৫৪, পজিটিভ ৪ চিকিত্সক!
কেন্দ্রীয় অংশীদারিত্বের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘মায়ের বাড়ি প্রকল্পের সময় ইউপিএ সরকার ছিল, ম্যাচিং গ্রান্ট পাওয়া যেত। কিন্তু বর্তমান মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রকল্পের নাম বদলে গেছে ঠিকই কিন্তু সেক্ষেত্রে রাজ্যের অংশীদারিত্ব বাড়িয়ে দেওয়া হয় প্রকল্পে।’
কলকাতা পুরসভার সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন পুর-প্রশাসক মণ্ডলীর অন্যতম সদস্য বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সত্যিই মানবদরদী। বস্তিবাসীদের স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে তিনি বদ্ধপরিকর। রাজ্য সরকার যেখানে বেশি অর্থ বহন করবে, সেখানে কেন প্রকল্পের নাম কেন্দ্রীয় নামকরণ অনুযায়ী হবে বলে প্রশ্ন তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার তাই সেই কথা মাথায় রেখে তিনি পুরসভাকে রাজ্যের অর্থেই প্রকল্প চালুর নিদান দিয়েছেন। সেই মতোই কাজ এগোচ্ছে বলে জানায় পুরসভা।