করোনায় প্রাণ গেল লালবাজারের ওসি’র, আক্রান্ত পুলিশ কমিশনার!

হাসপাতাল সূত্রে খবর, শুক্রবার সকালে তাঁর হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে পড়ে। সকাল পৌনে ন’টা নাগাদ হাসপাতালেই মৃত্যু হয় তাঁর।

 

কলকাতা ও পশ্চিম বর্ধমান: রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে ঘণ্টায় ঘণ্টায়। সদ্য করোনার শিকার হয়ে প্রাণ হারালেন কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের ইকুইপমেন্ট সেলের অফিসার ইনচার্জ অভিজ্ঞান মুখোপাধ্যায়। অন্যদিকে, আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার সুকেশ জৈন’র করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশ্যে এল। রাজ্য জুড়ে করোনায় পুলিশ অফিসারদের মৃত্যু নিয়ে চিন্তিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

কয়েকদিন আগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ১৯৯৫ ব্যাচ-এর অফিসার অভিজ্ঞান মুখোপাধ্যায়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, শুক্রবার সকালে তাঁর হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে পড়ে। সকাল পৌনে ন’টা নাগাদ হাসপাতালেই মৃত্যু হয় তাঁর। ওই হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, অনেক চেষ্টা করেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়, অভিজ্ঞানবাবু একেবারে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করছিলেন এবং তাতেই আক্রান্ত হন তিনি। ওই অফিসারের পরিবারের হাতে রাজ্য বিমা যোজনা অনুযায়ী, ১০ লক্ষ টাকা দ্রুত তুলে দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে।

আরও পড়ুন: NRS হাসপাতালে করোনা সংক্রমণ! চিকিৎসক-নার্স-রোগীসহ আক্রান্ত ১৩৬ জন

 

অন্যদিকে, সোমবার থেকে শারীরিক অসুস্থতা অনুভব করায় আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার সুকেশ জৈন নিজেকে অফিস থেকে সরিয়ে নেন। সেদিন থেকে নিজেকে সরকারি বাসভবন ইসকোর গেস্ট হাউসে কোয়ারেন্টাইনে রেখেছেন। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে জানা যায় তিনি করোনা আক্রান্ত। ঝাড়খণ্ড সীমানা এলাকার ডুবুডিহি চেকপোস্টে তিনি কর্মরত ছিলেন। এই চেকপোস্ট দিয়েই ফিরছিলেন ভিনরাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকরা। অনুমান করা হচ্ছে সেখান থেকেই কোনওভাবে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন সুকেশবাবু। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তাঁর বর্তমান অবস্থা স্থিতিশীল, যদিও তিনি বাড়ি থেকেই কাজ করছেন। এর আগেও আসানসোল–দুর্গাপুর কমিশনারেটের ১৪ জন পুলিশকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

আরও পড়ুন: প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে লড়ছেন আয়ুষ চিকিৎসকরা, রাজ্যে মিলছে না আর্থিক সাহায্য

গত শনিবার করোনায় মৃত্যু হয় কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন গোয়েন্দা প্রধান পল্লবকান্তি ঘোষে’র স্ত্রী’র। রিপোর্টে তাঁদের দুজনেরই করোনা পজিটিভ আসে। পল্লববাবু এখন একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এর আগেও কলকাতার দুই পুলিশকর্মীর করোনার থাবায় প্রাণ গেছে। ৭ জুন কোভিডের শিকারে মৃত্যু হয় শেক্সপিয়র সরণি থানার এক কনস্টেবলের। ১৩ জুন একইভাবে আরও এক কনস্টেবল দিলীপ সরদারের মৃত্যু হয়। দিলীপ শিয়ালদহ ট্রাফিক গার্ডে কর্মরত ছিলেন। পুলিশ মহলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে একের পর এক মৃত্যুর খবরে উদ্বিগ্ন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্মীদের যথাযথ সুরক্ষা নিতে অনুরোধ করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − four =