ফের রণংদেহি রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রীকে আলোচনার পাঠ রাজ্যপালের

রাজ্যপাল ডাকলে রাজভবনে এসে রিপোর্ট করে যাওয়া মুখ্যমন্ত্রীর সাংবিধানিক কর্তব্য। তিনি তা পালন করুন। ২৪ ঘন্টার মধ্যে ফের টুইটে মুখ্যমন্ত্রীকে বার্তা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্যপালের।

কলকাতা: এমনিতেই একাধিক বিষয় নিয়ে সংঘাত লেগেই রয়েছে। আরও একবার রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে পুলিশ প্রশাসন থেকে মুখ্যমন্ত্রী সকলের বিরুদ্ধেই সোচ্চার তিনি। শুক্রবারই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে টুইটে একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন রাজ্যপাল দিলীপ ধনকর। এক ভিডিও বার্তায় সরাসরি রাজ্যের পুশলিশকে শাসকদলের কর্মী হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। করোনা পরিস্থিতিতেই হাজারো ব্যস্ততার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে সময় বের করে তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। সম্ভবত এর কোনও প্রত্যুত্তর না মেলায় ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই শনিবার ফের টুইটে বাক্যবান রাজ্যপালের। রাজ্যের বিরোধী দলের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করতে গিয়ে এদিন পুলিশবাহিনীকে একেবারে “০০৭' এর ঠান্ডা মাথার খুনি” বলে উল্লেখ করেছেন। রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন এর সঙ্গে জড়িতদের মজা দেখিয়ে ছাড়বেন।

টুইটে রাজ্যপাল লিখেছেন “বিরোধী নেতা বা সাংসদদের বিরুদ্ধে '007'এর ঠান্ডা মাথায় খুনির মতো আচরণ দেখা যাচ্ছে। রাজ্যপাল হিসাবে এই জঘন্য কাজ বন্ধ করার জন্য যা যা করার করছি। সংশ্লিষ্টরা টের পাবেন।” পুলিশ প্রশাসন ঠিক কেমন হওয়া উচিত সেবিষয়েও জ্ঞানমূলক বার্তা দিয়ে টুইটে তিনি আরও লিখেছেন “ত্রয়ীর প্রশাসনে পুলিশ দল- পরিচালিত সংস্থা। আচরণে আইপি অফিসাররা রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ হবেন সেটাই দস্তুর। তাঁদের কেউ কেউ মর্জিমাফিক আইনের ব্যবহার করছেন।' তাঁর রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা নিয়ে বরাবরই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন শাসকদলের অনেকেই। এদিনের টুইটের সেই পক্ষপাতদুষ্টতা যেন অনেকটাই স্পষ্ট।

তবে এই টুইটে তাঁর বর্দ্ধিত ক্ষোভের কারণ কিন্তু ততটাই স্পষ্ট। যেমন শুরুতেই তিনি মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে লিখেছেন, “উদ্বেগজনক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং পুলিশের রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট অবস্থান নিয়ে  @MamataOfficial কে ডেকে পাঠিয়েছিলাম। বিরোধীদের বেছে বেছে হেনস্তা করা হচ্ছে। রাজ্যপাল ডাকলে রাজভবনে এসে রিপোর্ট করে যাওয়া মুখ্যমন্ত্রীর সাংবিধানিক কর্তব্য। তিনি তা পালন করুন।” রাজ্যপালের এক্তিয়ারভুক্ত কার্যকলাপের বাইরে  মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি এহেন ব্যক্তিগত আক্রমণ নিয়ে শাসকদলের একাধিক সমালোচনা সত্ত্বেও তিনি অপ্রতিরোধ্য। 

রাজ্যের সাম্প্রতিকতম কিছু ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে বেশ কিছু অভিযোগ জমা হয়েছে বিরোধী শিবিরে। যেমন, করোনা বা আমাফানের পর বিজেপি নেতা কর্মীদের ত্রাণ বিলতে বাধা, জেলায় জেলায় দলীয় কর্মীদের ওপর হামলা, আর সম্প্রতি এক বিজেপি বিধায়কের গলায় ফাঁস লাগানো মৃতদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের রিপোর্টে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করার হলে, ঘটনায় ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিত খুনের অভিযোগ এনে শাসকদলের দিকেই আঙুল তুলেছে বিরোধী শিবির৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *