৩ মাসে ৪ টাকা কমছে চালের দাম, তলানিতে জনতার চাল কেনার ক্ষমতা

৩ মাসে ৪ টাকা কমছে চালের দাম, তলানিতে জনতার চাল কেনার ক্ষমতা

 

কলকাতা: জোগান পর্যাপ্ত৷  অথচ চাহিদা নেই৷ আর তাতেই করোনা কালে কমছে দাম৷ কালোবাজারি দূরঅস্ত, খোলা বাজারেও চালের দাম পড়তে শুরু করেছে বলে খবর৷ কেজিতে অন্তত ২-৪ টাকা পর্যন্ত কমেছে কোথাও কোথাও৷ কিন্তু, হঠাৎ কেন কমছে চালের দাম?

পর্যবেক্ষক মহল এর পিছনে দু’টি কারণ খুঁজে পেয়েছেন৷ প্রথমত, রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ফ্রিতে ১ বছর রেশন দেওয়া ঘোষণা করা হয়েছে৷ করোনায় কাজ হারিয়ে বহু মানুষ অর্থকষ্টে রয়েছেন৷ ফলে, কেনার ক্ষমতা হারিয়েছেন তাঁরা৷ আর তাই রেশন থেকে চাল সংগ্রহ করে খেতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা৷ দ্বিতীয় কারণ হতে পারে, সরকারি রেশন ব্যবস্থান চালের গুনমান কিছুটা উন্নত হওয়ায় নিম্মবিত্ত পরিবার একপ্রকার বাধ্য হয়ে রেশনের চাল খেতে বাধ্য হচ্ছে৷ করোন-কালে আয় কমে যাওয়ার কারণে রেশন নির্ভরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় খোলা বাজারে চাহিদা কমেছে৷ আর তাতেই মাছি তাড়াচ্ছে খোলা বাজার৷ খদ্দের নেই৷ বিক্রি হচ্ছে মূলত সরু চাল৷ ফাইন রাইসও কম বিক্রি হচ্ছে৷

বর্ধমানের পরিসংখ্যান বলছে, রাজ্যের সবচেয়ে বেশি রাইস রয়েছে এই বর্ধমান জেলায়৷ আগের তুলনায় ওই জেলার ৪০ ভাগ চালও বাজারে বিক্রি হচ্ছে না বর্তমান পরিস্থিতিতে৷ লকডাউনের আগে কমন রাইস বা মোটা চালের দাম ছিল ২৮ টাকা৷  এখন সেই চাল কেজি প্রতি ২৪ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে৷ মিনিকিট চালের দাম কেজিতে কমেছে ২-৩ টাকা৷ চাল বিক্রেতাদের দাবি, সারা জীবন যাঁরা সরু চাল কিনে খেয়েছেন, তাঁরাও এই মহামারীর দিনে রেশনের চাল তুলে সরু চালের সঙ্গে রেশনের চাল মিশিয়ে নিচ্ছেন৷ ফলে, আগের থেকে বিক্রি রমেছে৷

করোনা-কালে আয় কমেছে সাধারণ মধ্যবিত্ত জনতার৷ কাজ হারিয়ে বাড়ি ফিরেছেন কয়েক লক্ষ শ্রমিক৷ করোনা যে তাঁদের পকেটে টান ধরিয়েছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না৷ যতটা কম খরচ করে দিন চালানো যায়, সেই পথ খুঁজছে আম জনতা৷ জীবন চালাতে মোটা-লাল-কাকরযুক্ত রেশনের চাল সংগ্রহ করতে বাধ্য হচ্ছেন সাধারণ জনতা৷ ফলে, খোলা বাজার থেকে চাল কেনার চাহিদা কমেছে কমতেই বেশিরভাগ চালের দোকানেই মাছি তাড়ানোর অবস্থা৷ অথচ কিছুদিন আগেও এই সব দোকানে ভিড় থাকত৷ এমনকি মোটা চালের খদ্দেরদেরও ভিড় থাকত যথেষ্ট৷ বহু  অভাবী মানুষ ক্ষুদ বা ভাঙা চালও কিনতেন৷ এখন সেই খুদ কিনতেও আসছেন না ক্রেতারা৷ আসবেন কীভাবে, করোনা-কালে তাঁদের জীবনই যে প্রশ্নের মুখে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

13 + eleven =