আবিষ্কার হলেও কি ভ্যাকসিন পাবে সব স্তরের মানুষ, উঠছে প্রশ্ন

আবিষ্কার হলেও কি ভ্যাকসিন পাবে সব স্তরের মানুষ, উঠছে প্রশ্ন

c581e39397fde6221be16d37bd4f8fb8

নিজস্ব প্রতিবেদন: বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারির আকার নিয়েছে, ক্রমশ ভয়াবহ হচ্ছে পরিস্থিতি। গোটা বিশ্বই তাকিয়ে আছে প্রতিষেধক আবিষ্কারের দিকে। কিন্তু আবিষ্কার হলেও কি তা সব দেশের সব মানুষের কাছে পৌঁছবে, উঠছে সেই প্রশ্নই।

করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা চলছে দ্রুতগতিতে। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং চিনের বেজিং ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির তৈরি ভ্যাকসিন ইতিমধ্যেই দুই দফার পরীক্ষায় সফল হয়েছে। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির তরফে ব্রিটিশ ও সুইডিশ ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা আস্ট্রাজেনেকা এই ভ্যাকসিন তৈরির লাইসেন্সপ্রাপ্ত। অন্যদিকে এর সঙ্গে ভারতের বৃহৎ ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থা সিরাম ইনস্টিটিউট চুক্তিবদ্ধ। চলতি বছরের শেষ থেকে সিরামে তৈরি হবে ১০০ কোটি ডোজ প্রতিষেধক। অন্যদিকে আস্ট্রাজেনেকা ২০০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন তৈরি করবে। কিন্তু সামগ্রিক ভাবে দেখলে সারা পৃথিবীর চাহিদা মেটাতে ৭৮০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দরকার। এই সংখ্যার কাছাকাছি ডোজের ভ্যাকসিন থাকলে তবেই করোনা ঠেকানো সম্ভব হবে।

যেহেতু নতুন আবিষ্কার হওয়া ওষুধ কিংবা ভ্যাকসিন যে সংস্থা সেটা আবিষ্কার করছে কিছু বছর তার স্বত্ব শুধুমাত্র তার কাছেই থাকবে, তাই পুঁজির দিক দিয়ে দেখলে একাধিপত্য স্থাপনের প্রসঙ্গ এসেই যায়। এখন প্রশ্ন হল, এই পুঁজির দিক বাঁচিয়ে সংস্থা ভ্যাকসিনের যা দাম করবে তা সাধারণের আয়ত্তে থাকবে কি না। অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন তৈরির পর তা কীভাবে সরবরাহ করা হবে তাও ভাবা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু একটি মাত্র কোম্পানির হাতে ক্ষমতা থাকলে একচেটিয়া ব্যবসার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আবিষ্কৃত ডোজের মধ্যে ৪০ কোটি ডোজ শুধু আমেরিকা ও ব্রিটেন পাবে। তারপর ৩০ কোটি ডোজ পেতে মরিয়া ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি ও নেদারল্যান্ডস।

এরপরের ৩০ কোটি ডোজ নির্ধারিত হয়েছে উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্যে। কিন্তু তারপরেও অনুন্নত দেশগুলি পড়ে থাকে, যেখানে বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে। সেই সমস্ত দেশের প্রতিষেধক পাওয়া নিয়ে এখনও কোনও কিছু ঠিক করা হয়নি। ভ্যাকসিনের মূল্য ঠিক করতেও গবেষণা শুরু হয়েছে। শোনা যাচ্ছে অক্সফোর্ড তাদের মেধাস্বত্বাকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তৈরি কোভিড ১৯ অ্যাকসেস পুলে জমা দিতে পারে। এখানে আবিষ্কারের ফর্মুলা যদি ভাগ করে নেওয়া হয়, তাহলে গোটা পৃথিবীর সব মানুষই ভ্যাকসিন পাবে। কিন্তু বড় বড় ওষুধ সংস্থার পুঁজিতন্ত্র তা হতে দেবে কি না সেটাই ভাবাচ্ছে গরিব দেশগুলিকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *