কলকাতা: কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে অনলক পর্ব৷ কিন্তু পরিবহণ ব্যবস্থা এখনও সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়নি৷ স্বাস্থ্য বিধি মেনেই চলানো হচ্ছে বাস, ট্যাক্সি৷ এই অবস্থায় বাস মালিকরা তাঁদের সমস্যা সমাধানের আর্জি জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর দরবারে৷ তাঁদের সেই আর্জি বিবেচনা করে পরিবহণ ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভা৷ বৃহস্পতিবার নবান্নের বৈঠকে সেই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হল৷
এদিন বৈঠকে স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ওয়েস্ট বেঙ্গল মোটর ভেহিকেলস অ্যাক্ট ১৯৭৯ অনুসারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নয়, অর্থাৎ নন-এসি বাস, মিনিবাসে যে কর ধার্য করা হয়, ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তা মুকুব করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ ১ এপ্রিল ২০২০ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ পর্যন্ত বাস, মিনিবাসের কর সম্পূর্ণ মুকুব করেছে রাজ্য সরকার৷
আরও পড়ুন- সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কর মকুবের ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর, অনুমোদন মন্ত্রিসভার
এছাড়াও ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যাডিশনাল ট্যাক্সও এই সময়সীমার জন্য মুকুব করা হয়েছে৷ ওয়েস্ট বেঙ্গল মোটর ভেহিকেলস রুলস অনুসারে যে পারমিট ফি দিতে হয়, এই বছরের জন্য সেই পারমিট ফিও মকুব করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় আরও জানান, পুরনো কর মিটিয়ে দিলে জরিমানাতেও ছাড় দেওয়া হবে৷
কোভিড প্রসঙ্গেও বেশ কিছু তথ্য জানানো হয়েছে৷ এদিন মুখ্য সচিব রাজীব সিনহা জানান, রাজ্যে এখন প্রতিদিন ২৫ হাজারেরও বেশি টেস্ট হচ্ছে৷ রাজ্যে করোনা আক্রান্তদের বেড বেড়ে ১১ হাজার ৫৬০ করা হয়েছে৷ এই মুহূর্তে রাজ্যে ১১৪৪ জন কোভিড রোগী সঙ্কটজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন৷ ১,০৪৩ রোগী মডারেট আছেন এবং ১,৯৪৬ জন রোগী মৃদু আক্রান্ত৷
আরও পড়ুন- BREAKING: প্রায়ত শ্যামল চক্রবর্তী, শ্রমিক নেতাকে হারাল বামফ্রন্ট
আমাদের রাজ্যে কোভিড পেশেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালু করা হয়েছে৷ রয়েছে টেলিমেডিসিন ব্যবস্থা৷ টেলিমেডিসিন নম্বরটি হল ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২৷ তবে এবার থেকে ২৩৫৭৬০০১ নম্বরে ফোন করলে সরাসরি চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে পরামর্শ নেওয়া যাবে৷ কোভিড ওয়ারিয়র ক্লাবের মতো কোভিড হেল্পিং হ্যান্ডস নামেও একটা ক্লাব তৈরি করা হয়েছে৷ ১ অগাস্ট থেকে রাজ্যে টেলি সাইকোলজিক্যাল কাউন্সেলিং শুরু করা হয়েছে৷ করোনা আক্রান্তদের ফোন করে কাউন্সেলিং করা হচ্ছে৷ টেলি সার্ভিসের মধ্যে ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসও রয়েছে৷ ৪০৯০২৯২৯ নম্বরে ফোন করলে সরাসরি অ্যম্বুলেন্সের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে৷ এছাড়াও কর্ড ব্লাড ব্যাঙ্ককে কাজে লাগানো যায় কিনা, তা দেখা হচ্ছে৷ করোনা মোকাবিলায় তৈরি হয়েছে প্লাজমা ব্লাড ব্যাঙ্ক৷
আরও পড়ুন- লকডাউনে কী কী কাজ করেছেন শিক্ষকরা? নাম ধরে হিসাব নেবে বিকাশ ভবন
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যে সকল প্রবীণ ব্যক্তি ফ্ল্যাটগুলোতে একা বা দু’জনে মিলে থাকেন, তাঁদের যাতে সমস্যা না হয়, সে জন্য নির্দিষ্ট পদক্ষেপ করা হবে৷ এর জন্য সংশ্লিষ্ট হাউজিং কমপ্লেক্সগুলিতে যে কমিটি থাকে, তাদের উপরেই প্রাথমিক দায়িত্ব দেওয়ার সুপারিশ করেছেন তিনি৷
আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে ৫০০ নতুন পোস্টে হাউস স্টাফ পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ এই প্রসঙ্গে মুখ্যসচিব জানান, ‘‘ পশ্চিমবঙ্গ হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড ও ওয়েস্টবেঙ্গল মিউনিসিপাল সার্ভিস কর্পোরেশন মাধ্যমে স্বাস্থ্য দফতরে বিভিন্ন টেকনিশিয়ান, চিকিৎসক, নার্স, নিয়োগ করা হয়ে থাকে৷ কিন্তু এবার সরাসরি ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ জরুরি ভিত্তিতে আমরা আপাতত যতদিন এই সমস্যা হচ্ছে, ততদিন সরাসরি ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে মিউনিসিপাল সার্ভিস কমিশন ও বাকি এলাকার জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে জন্য ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের মাধ্যমে কর্মী নিয়োগ করব৷’’