কলকাতা: সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী শ্যামল চক্রবর্তীর মৃত্যুতে ইতি পড়ল একটি রাজনৈতিক অধ্যায়ের৷ তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমছে রাজনৈতিক মহলে৷ মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। শ্যামল চক্রবর্তীর জন্ম ১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি। মতিঝিল ও বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করেন। ১৯৭৮ সালে বামফ্রন্টের সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। ১৯৮৯ থেকে সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য হন শ্যামল চক্রবর্তী। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।
আরও পড়ুন- কর মুকুব থেকে কর্মী নিয়োগ, নবান্নে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
ছাত্র আন্দোলন থেকে শুরু করে শ্যামল চক্রবর্তীর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের সমাপ্তি ঘটল আজ৷ সর্ব ভারতীয় স্তরে ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি৷ ছাত্র আন্দোলনে নতুন প্রাণের সঞ্চার করেছিলেন শ্যামল চক্রবর্তী৷ মার্কসবাদী পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন শ্যামলবাবু৷ রাজ্য সভার সাংসদও হয়েছিলেন তিনি৷ মাণিকতলা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে প্রথমবার বিধায়ক হন৷ রাজ্যে পরিবহণ দফতরের মন্ত্রী পদেও দায়িত্ব সামলেছিলেন এই বর্ষীয়াণ নেতা৷ বহু প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন তিনি৷ ছাত্রদের, শ্রমিকদের সংগঠিত করে পার্টিকে মজবুত করার জন্য কলকাতার জেলা কমিটির সদস্য, রাজ্য কমিটির সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন৷ বহু বামপন্থী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি৷
আরও পড়ুন- সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কর মকুবের ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর, অনুমোদন মন্ত্রিসভার
এর আগেও বেশ কয়েক বার অসুস্থ হয়েছেন শ্যামল চক্রবর্তী৷ কিন্তু সেই অসুস্থতাকে উপেক্ষা করেই শেষ দিন পর্যন্ত দলের হয়ে কাজ করে গিয়েছেন এই বাম নেতা৷ জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে দিন কয়েক আগেই উল্টোডাঙার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিলেন৷ জ্বর ও শ্বাসকষ্টের সঙ্গে অনিয়মিত প্রস্রাবের সমস্যাও ছিল তাঁর। সিওপিডি থাকার কারণে শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে আগেও ওই নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন থেকেছেন তিনি। সেখানে তাঁর নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। করোনা পরীক্ষার রিপোর্টও পজিটিভ আসে। এরপরই তাঁকে বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিন দুপুরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি৷ তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে একটিও লাগেনি দুর্নীতির কালি৷ দুর্নীতি-মুক্ত হয়ে আজ বঙ্গ রাজনীতির ময়দানকে বিদায় জানালেন তিনি৷
আরও পড়ুন- লকডাউনে কী কী কাজ করেছেন শিক্ষকরা? নাম ধরে হিসাব নেবে বিকাশ ভবন
এই বর্ষীয়ান নেতার প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শ্যামল চক্রবর্তীর মৃত্যুতে রাজনৈতিক জগতের ক্ষতি হল বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। শ্যামল চক্রবর্তীর পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের প্রতি সমবেদনাও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।