কলকাতা: করোনা পরিস্থিতিতে ফের অমানবিকতার নজির গড়ল কলকাতার বেসরকারি হাসপাতাল৷ হাসপাতালে ভর্তি হলে আগাম ৩ লক্ষ টাকা জমা দিতে হবে করোনা আক্রান্ত রোগীকে৷ ক্রেডিট কার্ডের ব্যালেন্স শেষ হয়ে যাওয়ায় কম পড়ে ২০ হাজার টাকা৷ সেই মুহূর্তে ২০ হাজার টাকা দিতে না পারায় অ্যাম্বুল্যান্সেই মৃত্যু হল করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধার৷
আরও পড়ুন- রোগীদের ভর্তির টাকা নিয়ে সমস্যা চলছেই, শীঘ্রই সমাধানের আশ্বাস কোভিড ইউনিটের
জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের এক বৃদ্ধ কলকাতায় চিকিৎসা করা এসে মারা যেন৷ এরপরেই তাঁর স্ত্রীর শরীরে করোনা ভাইরাস ধরা পড়ে৷ তাঁকে ডিশান হাসপাতালে ভর্তি করার তোড়জোড় শুরু করে পরিবার৷ জানানো হয়, করোনা রোগীকে ভর্তির জন্য প্রাথমিকভাবে তিন লক্ষ টাকা জমা দিতে হবে৷ রোগীর পরিবার তৎক্ষণাৎ ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা মিটিয়ে দিলেও ২০ হাজার টাকা মেটাতে পারেননি৷
আরও পড়ুন- টানা ৫ ঘণ্টা মস্তিস্কে অস্ত্রোপচার, কেমন আছেন প্রণব মুখোপাধ্যায়?
পরিবারের তরফে হাসপাতালে জানানো হয়, তাঁদের কাছে যে ক্রেডিট কার্ড ছিল, তার লিমিট শেষ হয়ে গিয়েছে৷ তাঁরা রাত ১২টার পর বকেয়া ২০ হাজার টাকা মিটিয়ে দেবেন৷ কিন্তু হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, ৩ লক্ষের এক টাকাও কম হলে হাসপাতালে ভর্তি করা যাবে না৷ রোগীর পরিবারকে হাসপাতালে অনলাইনে টাকা পাঠাতে বলা হয়৷ এসবের মধ্যেই অ্যাম্বুল্যান্সের মধ্যে বৃদ্ধার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে৷ বার বার ডিশান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলার পরেও তারা কোনও ভ্রূক্ষেপ করেনি৷ অ্যাম্বুল্যান্সের মধ্যেই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়৷ ক্ষুব্ধ পরিবার এই ঘটনায় আনন্দপুর থানায় অভিযোগ জানিয়েছে৷ স্বাস্থ্য কমিশনেও অভিযোগ জানানোর উদ্যোগ নিচ্ছেন তাঁরা৷
করোনা পরিস্থিতিতে বেসরকারি হাসপাতালের ভূমিকা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে৷ করোনায় আক্রান্ত এক রোগীর বিল ইএম বাইপাসের একটি হাসপাতাল থেকে ১০ লক্ষ চার্জ করা হয়েছে৷ এই নিয়েও একাধিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে৷ এরপরেই স্বাস্থ্য কমিশনের তরফে একটি নির্দেশিকায় জানানো হয়, করোনা রোগী ভর্তির সময় ৫০,০০০ বেশি নেওয়া যাবে না, সেই নির্দেশিকা বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলি অসহায় করোনা আক্রান্ত রোগীর পরিবারের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা নিচ্ছে, এই ঘটনা তার প্রমাণ বলছে রোগীর পরিবার৷