কলকাতা: সরকারি কর্মচারীদের বহু প্রত্যাশিত মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ সংক্রান্ত মামলার রায়দানের পর একমাস অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছে৷ তবে এখনও উচ্চ আদালতে আবেদন করেনি রাজ্য সরকার৷ ২০১৭-র ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ট্রাইবুনাল ও কলকাতা হাইকোর্টে দফায় দফায় এই মামলার শুনানি হয়। বকেয়া ৫০ শতাংশ ডিএ চেয়ে মামলা করে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের অন্যতম সংগঠন 'কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ'। এই বিষয়ে বর্তমান পরিস্থিতিত কী, তা জানালেন মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী প্রবীর চট্টোপাধ্যায়৷
আরও পড়ুন- রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য সুখবর! জোড়া বিজ্ঞপ্তি অর্থ দফতরের
তিনি জানান, রাজ্য সরকার উচ্চ আদালতে আপিল করছে কিনা, সে বিষয়ে তাঁর কাছে কোনও আপডেট নেই৷ চাঁচাছোলা ভাষাতেই তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের স্বভাবটাই হল টালবাহানা করা৷ যতটা সম্ভব দেরি করানো৷ সে কারণেই রাজ্য সরকার উচ্চ আদালতে যাওয়ার চেষ্টা করতেও পারে৷ তবে তাতে বিশেষ লাভবান হবে না৷ উচ্চ আদালতেও ট্রাইবুনালের রায় বহাল থাকবে বলেই আমার দৃঢ় বিশ্বাস৷’’
রায় বেরনোর এক মাসের মধ্যেই কি উচ্চ আদালতে আপিল করতে হয়? এই প্রশ্নের জবাবে আইনজীবী প্রবীর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অবশ্যই এক মাসের মধ্যে আবেদন করতে হয়৷ তবে এই সময়সীমার মধ্যে আবেদন না করলে সেকসন ৫-এ বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে পিটিশন দাখিল করা যেতে পারে৷ এর আগেও প্রায় চার-পাঁচ মাস পর রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছিল রাজ্য সরকার৷’’ রাজ্য সরকার যদি উচ্চ আদালতে রিভিউ পিটিশন দাখিল না করে, তাহলে ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা পাওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের কর্মীরা পুরোদস্তুর এগিয়ে যাবে বলেই মন্তব্য করেন আইনজীবী প্রবীর চট্টোপাধ্যায়৷ তিনি বলেন, কনটেম্পট গতি পেয়ে গিয়েছে৷ তবে আদালত বন্ধ থাকায় এই মুহূর্তে কনটেম্পট করা সম্ভব হচ্ছে না৷ আদালতের কাজ স্বাভাবিক হওয়ার পরই এটি প্রধান মামলা হিসাবে উল্লেখ করা হবে বলে জানান তিনি৷
আরও পড়ুন- মিলবে না পেনশন, সরকারি কর্মচারীদের স্বেচ্ছাবসর প্যাকেজে ‘আচ্ছে দিনে’র আতঙ্ক
আদালত বন্ধ থাকলেও, কিছু মামলা অনলাইনে চলছে৷ সুযোগ হলে ডিএ মামলাও অনলাইনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করা হবে৷ অনলাইনে কনটেম্পট মামলা করা যায় কিনা, শুক্রবারের মধ্যে ট্রাইবুনালের কাছে সেই খবর নেবেন বলে জানান প্রবীরবাবু৷ তিনি বলেন, রাজ্য সরকার যদি সেকসন ৫-এ নতুন করে আবেদন না করে, তাহলে ট্রাইবুনাল এবং হাইকোর্টের রায় দুটোই বহাল থাকবে৷ এই রায় মেনে নিতে হবে রাজ্য সরকারকে৷ পরবর্তী সময়ে ডিএ দিতে বাধ্য থাকবে রাজ্য সরকার৷
আরও পড়ুন- ভারতের সব থেকে বড় বুদ্ধমূর্তি গড়ার বরাত পেলেন কুমারটুলির মৃৎশিল্পী!
প্রবীর চট্টোপাধ্যায় আরও জানান, রাজ্য সরকারের পদক্ষেপের চেয়ে কনটেম্পট মামলার দিকেই এখন বেশি নজর রয়েছে তাঁর৷ কারণ কনটেম্পট মামলায় রাজ্য সরকারের উপর এমন ভাবে চাপ সৃষ্টি করা হবে, যাতে তারা ডিএ দিতে বাধ্য হয়৷ অর্থসচিব হকিকৃষ্ণ দ্বিবেদি এবং মুখ্যসচিব রাজীব সিনহার উপর চাপ সৃষ্টি করাই তাঁর লক্ষ্য৷ মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী হিসাবে আপাতত তাঁর সুপারিশ, লকডাউনের জন্য একটু ধৈর্য্য ধরতে হবে সরকারি কর্মীদের৷