কলকাতা: কাউকে হট ছবি পাঠানোর প্রস্তাব, তো কারও কাছে নিজের বিকৃত কামনা মেটানোর আর্জি৷ একের পর এক অভিযোগে কাঠগড়ায় বামপন্থী নেতা ঋদ্ধ চৌধুরী৷ কোনও রকম রাখঢাক না রেখেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খুললেন হিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়, ঋষা চট্টোপাধ্যায় এবং সাগরিকা মৃণালিনী চট্টোপাধ্যায়৷ ঋদ্ধর অশালীন মন্তব্যের প্রমাণ দিয়ে তাঁদের কথোপকথনের ছবি তুলে ধরলেন এই ত্রয়ী৷ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়৷
ঋদ্ধর পর্দা ফাঁস করে নিজের ফেসবুক ওয়ালে হিয়া লেখেন, ‘‘আমি আর কারও নাম গোপন রাখতে চাই না৷ আমি বিতৃষ্ণ৷’’ হিয়া জানান, তিনি একজন প্রশিক্ষিত ধ্রুপদী নৃত্যশিল্পী৷ তিন বছর বয়স থেকেই নাচের সঙ্গে যুক্ত৷ একজন শিল্পী হিসাবে এর আগে কোনও দিন এতটা অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়নি তাঁকে৷ এতটা বিরক্ত বোধ করেননি তিনি৷
আরও পড়ুন- ফের লকডাউনের দিন বদল রাজ্যে, পিছনে ‘সাম্প্রদায়িক’, ‘ছ্যাবলামি’, ‘প্রশাসনিক খ্যাপামি’?
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় হিয়াকে আরও বেশি করে নাচের ছবি আপলোড করতে বলেন ঋদ্ধ৷ সেই সঙ্গে লেখেন, ‘‘চোখেই খিদে মেটাই আরকি৷’’ হিয়া বলেন, ‘‘একজন শিল্পী হিসাবে এবং সর্বোপরী একজন নারী হিসাবে এই নোংরা শব্দগুলো দেখার পর আমি ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠি৷’’ হিয়া আরও জানান, এই ঘটনার পর নাম মাত্র ক্ষমা চাওয়ার পরই ফের তাঁকে টেক্সট করেন ঋদ্ধ৷ এবং তিনি বলেন, হিয়ার কাছ থেকে তিনি এটা আশা করেননি৷ এর পরিপ্রেক্ষিতে হিয়ার পাল্টা জবাব, ‘‘এবার আশা করতে শুরু করে দাও৷ কারণ তোমার নোংরামি আর সহ্য করা হবে না৷’’
আরও পড়ুন- IIT-IIM’এ অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থা? UGC, AICTE-র পরামর্শ চাইল কেন্দ্র
আরও পড়ুন- ‘বন্ধু’ পাকিস্তানকে আর তেল-ঋণ দেবে না ‘ক্ষিপ্ত’ সৌদি! মাথায় হাত প্রধানমন্ত্রীর
একই রকম অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছেন ঋষাও৷ একটি নির্দিষ্ট পরীক্ষার বিষয়ে ঋদ্ধর সাহায্য চেয়েছিলেন ঋষা৷ সেখান থেকেই তাঁদের কথাবার্তা শুরু৷ ঋষা জানান, তাঁকে ‘হট’ ছবি পাঠানোর জন্য স্কাইপি ডাউনলোড করতে ভীষণভাবে চাপ দিয়েছিলেন ঋদ্ধ৷ আপত্তি জানানোর পর আরও বেশি করে প্ররোচিত করার চেষ্টা শুরু করেন৷ ব্যর্থ হওয়ার পর তাঁকে ম্যানিপুলেট করার চেষ্টাও করা হয়৷ এমনকী ঋদ্ধ এও বলেন, ‘‘পবিত্রতার মূল্যবোধের সামনে কেন নিজেকে দমন করছ?’’ ঋষা বলেন, প্রত্যেকবার আমি তাঁর সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছি৷ ঋষার কথায়, ‘‘আমি কোনও সম্পর্কে ছিলাম কি ছিলাম না, সেটা বিবেচ্য নয়৷ আমি তাঁর কুপ্রস্তাবে সায় দিইনি৷ কিন্তু ক্রমাগত আমকে বিরক্ত করে গিয়েছেন ঋদ্ধ৷ ’’
ঋষা জানান, প্রেসিডেন্সি কলেজে ইতিহাসের ছাত্রী ছিলেন তিনি৷ আর ‘বড়দা’ ছিলেন জিওলজির ছাত্র৷ এদিন প্রকাশ্যেই এই বাম নেতার উদ্দেশে ঋষা বলেন, ‘‘ঋদ্ধ দা আমাকে ফোন করা বন্ধ করো৷ তোমার কিছু বলার থাকলে, তা প্রকাশ্যে বল৷ তোমার সঙ্গে ফোনে কথা বলতে আমি বিন্দুমাত্র আগ্রহী নই৷’’ তিনি আরও জানান, ঋদ্ধর মুখোশ খুলতে তাঁর কাছ থেকে পাওয়া মেসেজের একটি মাত্র নমুনা পোস্ট করেছেন তিনি৷ ঋষা বলেন, ঋদ্ধর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে কিছুটা সময় নিয়েছেন ঠিকই৷ তিনি জানাতেন এই পোস্টের পর তাঁর উপর আক্রমণ আসবেই৷ কারণ ঋদ্ধ বামপন্থী যুব রাজনীতির প্রথম সারির মুখ৷
ঋদ্ধর সঙ্গে কথোপকথন সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁস করেছেন সাগরিকাও৷ ওই পোস্টে সাগরিকাকে রাত্রি কাটানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্সি কলেজের ‘বড়দা’৷ নেটপাড়ায় বিদ্যুতের গতিতে অভিযোগ ছড়িয়ে পড়ায় নিজের প্রোফাইল নিস্ক্রিয় করে রেখেছেন ওই বাম নেতা৷ যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগ ওঠা বাম নেতা ঋদ্ধ চৌধুরীর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷ ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সায়নদীপ মিত্র সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় ওঠা অভিযোগ সত্যি হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷