আমি চাই না ওখানে কোনও নির্মাণ হোক, বিশ্বভারতী তাণ্ডবে বার্তা মমতার!

আমি চাই না ওখানে কোনও নির্মাণ হোক, বিশ্বভারতী তাণ্ডবে বার্তা মমতার!

 

কলকাতা: বিশ্বভারতী ক্যাম্পাসে বেপরোয়া তাণ্ডব৷ বুলডোজার দিয়ে ভাঙা হয়েছে ঐতিহ্যবাহী বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের তোরণ৷ তছনছ অস্থায়ী ক্যাম্পাস৷ পাঁচিল ভেঙে তাণ্ডব৷ সোমবার সাতসকালে মেলারমাঠ বাঁচাও কমিটির বিশাল মিছিলের নেতৃত্ব দেন দুবরাজপুরের তৃণমূল বিধায়ক নরেশ বাউড়ি থেকে শুরু করে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব৷ মিছিল থেকে শুরু হয় বেপরোয়া তাণ্ডব৷ নিরাপত্তার অভাবের অভিযোগ তুলে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বিশ্বভারতী বন্ধ  রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ তৃণমূল নেতৃত্বের উপস্থিতিতে বিশ্বভারতীতে তাণ্ডবের ঘটনায় বাংলাজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে৷ আর এই প্রসঙ্গে এবার নবান্ন থেকে মুখ খুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷

আজ নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, তিনি কোনও ভাবেই চাই না, ওখানে কোনও নির্মান হোক৷ পাঁচিল নির্মাণের আপত্তি জানিয়ে বিশ্বভারতীর সৌন্দর্য নষ্ট নিয়ে তুলেছেন প্রশ্ন৷ তবে, ক্যাম্পাসে তাণ্ডবের বিরুদ্ধে একটি শব্দও ব্যবহার করেননি মুখ্যমন্ত্রী৷ কিন্তু কেন মুখ্যমন্ত্রী এই ঘটনার নিন্দা করলেন না? তৃণমূল বিধায়কের নেতৃত্বে মিছিল, তাণ্ডবের অভিযোগ উঠেছে বলেই কি কৌশলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি? কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক থাকলেও তাণ্ডবের বিরুদ্ধে কি কড়া বার্তা দিতে পারতে না? প্রশ্ন তুলছেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তন থেকে বর্তমান পড়ুয়াদের একাংশ৷

আজ নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিশ্বভারতী কেন্দ্রীয় সরকারের ইউনিভার্সিটি৷ হ্যাঁ, গভর্নর আগে টুইট করেছিলেন৷ তারপর আমাকে ফোন করেছিলেন৷ তিনি আমাকে ফোন করে জানিয়েছেন, একটি সমস্যা চলছে৷ আমি ওনাকে বললাম, বিশ্বভারতী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন তৈরি করেছিলেন, তাঁর উদ্দেশ্য ছিল, ফাঁকা জায়গায়, প্রকৃতির পরিবেশে, খোলা আলোয়, পাখির ডাকে, গাছ তলায়, বসন্ত উৎসব থেকে শুরু করে পৌষ মেলা থেকে শুরু করে শান্তিনিকেতন শান্তির একটা জায়গা৷ সেখানে কাঠ-খড়, সেখানে কনস্ট্রাকশন দিয়ে নয়, প্রাকৃতিক পরিবেশ বজায় রেখে শান্তিনিকেতন কে তৈরি করেছিলেন৷ শান্তিনিকেতন শান্তির জায়গা৷ আমাদের ভীষণ প্রিয়৷’’

এরপর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি যতটুকু খবর পেয়েছি, তাতে আমি শুনেছি, একটা কনস্ট্রাকশনের কাজ চলছিল৷ পৌষ মেলা যেখানে হয়, তার আশেপাশে এবং সেখানে আরও কিছু লোকজন উপস্থিত ছিল৷ যাদের উপস্থিত থাকাটা উচিত ছিল না৷ তারা বহিরাগত৷ যখন কনস্ট্রাকশনকে সুরক্ষা দেওয়া হচ্ছিল, যখন নির্মাণ কাজ করা হচ্ছিল, তখন সুরক্ষার জন্য ছিল বহিরাগতরা৷ ছাত্রছাত্রীরা ও বোলপুরের মানুষ এটা পছন্দ করেননি৷ তাই সেখানে স্টুডেন্ট ও সাথে বন্ধু-বান্ধব তারা এটা প্রতিবাদ জানান৷ এটা আমার কানে যখন আসে, আমি তখন সেটা পুলিশকে বলি, ডিএমকে বলো একটা মিটিং করতে৷ ভিসি বক্তব্য বলুক৷ ছাত্রদের বক্তব্য বলুক৷ সাধারণ মানুষের যদি কোন উপস্থিত থাকে, একজন-দুজনকে ডাকুন৷ কথা বলুন৷ এটা সমাধান করুন শান্তিপূর্ণভাবে৷ আমি চাই না, ওখানে কোনও কনস্ট্রাকশন হোক৷ যে কনস্ট্রাকশন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যকে আটকে দেবে৷’’

এরপর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমাদের একটাই অনুরোধ থাকবে, এমন কিছু না হয়, যাতে আমাদের বাংলার ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিশ্বভারতী, আমরা ওখানে বিশ্ববাংলা উনিভর্সিটি করছি পাশে, বিশ্বভারতীর কোনও গরিমা, গৌরব ও সৌন্দর্য আঘাতপ্রাপ্ত না হয়, সেটা আমাদের সকলের দেখা উচিত৷’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − 7 =