নয়াদিল্লি: বাংলার বিধানসভা ভোট ক্রমশ এগিয়ে আসছে। মূলত বাংলাদেশ থেকে আসা অমুসলিমদের নাগরিকত্ব আইনের মধ্যে ফেলে তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। জানা গিয়েছে, পুজোর আগেই পাইলট প্রকল্প হিসাবে এই কাজ শুরু করে দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে।
বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে ভারতে আসা শরনার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা উল্লেখ করেছিলে মোদী সরকার। এদের বেশিরভাগই অ-মুসলিম, ধর্মীয় নিপীড়নের কারণেই অন্য দেশ থেকে এ দেশে চলে এসে পাকাপাকি ভাবে রয়ে গিয়েছেন৷ বাংলাদেশ থেকে আগত শরনার্থীদের সংখ্যা সবথেকে বেশি। কেন্দ্রের মতে, এই আইনের ফলে সবচেয়ে বেশি সুবিধা পেতে চলেছে মাতুয়া সম্প্রদায়। এরা দীর্ঘদিন ধরেই নাগরিকত্বের দাবি তুলেছিলেন। এই সম্প্রদায়ের মানুষেরা মূলত বাংলার সীমান্ত সংলগ্ন অঞ্চল যেমন কোচবিহার, নদিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় বসবাস করেন।
দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে বিজেপি নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে। বিজেপি ভেবেছিল, এই আইনের ফলে রাজ্য-রাজনীতিতে তাদের জায়গা মসৃণ হবে, কিন্তু বাস্তবে হয়েছিল তার ঠিক উল্টো! ওই বিল ঘিরে নানা জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল৷ মানুষের মনে নাগরিকত্ব চলে যাওয়ার ভয় দেখা দিয়েছিল৷ তাই এই আইন পাশের ফলে উপনির্বাচনে বিজেপি কার্যত পর্যুদস্ত হয়েছিল৷ এরপর থেকেই বিজেপি নাগরিকত্ব আইন নিয়ে 'ধীরে চলো' নীতি গ্রহণ করে৷
সোমবার, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দিল্লিতে এক বৈঠকে জানিয়েছেন, এই আইন নিয়ে বাংলার শাসক দল মানুষকে ভুল বুঝিয়েছেন৷ যেখানে এই আইনের ফলে মানুষের উপকার হবে, সেখানে তৃণমূল সরকার মানুষকে ভয় দেখিয়েছেন৷ বিজেপি সূত্রে খবর, এই আইন দু-ধারী তলোয়ার৷ মানুষকে এই আইন সম্পর্কে সরকার সঠিকভাবে বোঝাতে ব্যর্থ হলে তা লাভের চেয়ে ক্ষতি করতে পারে বেশি৷ তাই বিজেপি নেতৃত্ব এই আইন নিয়ে পাল্টা প্রচারে নামার সিদ্ধান্ত হয়েছে৷
পুজোর আগেই পাইলট প্রকল্পের কাজ শুরু করে দিতে চাইছে বিজেপি৷ নজর রয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের। দেশের করোনা পরিস্থিতি সবকিছুকেই পিছিয়ে দিয়েছে৷ কিন্তু সেখানে যত বাংলার বিধানসভা নির্বাচন এগিয়ে আসছে, তখন আর দেরি করতে নারাজ বিজেপি৷ তাদের মতে, একবার এই কাজ শুরু হয়ে গেলে, মানুষ নাগরিকত্ব পেতে শুরু করলে বিরোধীদের অপপ্রচার থেমে যাবে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি না কাটলে এই কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, প্রথমে একটি জেলায় এই কাজ শুরু করা হবে। নোটবন্দির মতো দুর্ভোগ যাতে মানুষকে না পোহাতে হয় তার জন্য ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জেলায় দলীয় কর্মীদের পাশাপাশি এ কাজে পেশাদারদের নিয়োগ করা হয়েছে বিজেপি তরফে।