কলকাতা: করোনা আবহে এবার চরম সমস্যার মুখে পড়তে চলেছেন বাংলার বহু শিক্ষক৷ ডিএলএড শংসাপত্র দেওয়াকে কেন্দ্র করে এনআইওএসর নয়া নির্দেশিকা ঘিরে চরম বিভ্রান্তিতে পড়েছেন তুলনায় কম নম্বর পাওয়া শিক্ষকদের একাংশ৷ নয়া নির্দেশকা কার্যকর হওয়ায় প্রশিক্ষণ থাকা সত্ত্বেও একাধিক প্রাথমিক শিক্ষকের রোজগার বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে৷
নতুন নির্দেশিকা জারি করে এনআইওএস সাফ জানিয়ে দিয়েছে, এখন থেকে যে সমস্ত ডিএলএড প্রার্থী তাঁদের উচ্চমাধ্যমিকের নম্বর বাড়িয়ে ৫০% করেছেন, শুধুমাত্র তাঁরাই পাবেন শংসাপত্র। আর তাতেই চকম বিপাকে পড়তে চলেছেন বাংলার বহু প্রাথমিক শিক্ষক৷ ডিএলএডের পাঠ্যক্রম শেষ করেও অনেকেই শংসাপত্র হাতে পাননি। ২০১৭ সালে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক বিজ্ঞপ্তি জারি করে ডিএলএড প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করেছিল।
বলা হয়েছিল, বাধ্যতামূলক ভাবে রাজ্যের সকল প্রশিক্ষণহীন শিক্ষক শিক্ষিকাকে ডিএলএড প্রশিক্ষণে ভর্তি হতে হবে। এক্ষেত্রে, কর্মরতদের যাঁদের উচ্চমাধ্যমিকে ৫০ শতাংশ নম্বর নেই তাঁদের ডিএলএড করতে হলে 'আপগ্রেডেশন' অথবা পুনরায় পরীক্ষা দিয়ে নম্বর বাড়াতে হবে না। কিন্তু নতুন ফরমানে সেই নোটিশের বিপরীত অবস্থান দেখা গেল। বর্তমানে একমাত্র তাঁরাই শংসাপত্র পাবেন, যাঁদের উচ্চমাধ্যমিকের নম্বর ৫০ শতাংশে আপগ্রেড করা হয়েছে।
হঠাৎ করে সময়সীমা বেঁধে দেওয়ায় অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছে একাধিক ডিএলএড প্রশিক্ষিত প্রার্থী। এতদিন কোনও সময়সীমা ছিল না এ বিষয়ে। প্রার্থীদের মধ্যে প্রসেনজিৎ রায় জানিয়েছেন, গত ৭ আগস্ট এনআইওএস হঠাৎ করে সময়সীমা বেঁধে দেওয়ায় চিন্তিত শিক্ষক শিক্ষিকাদের একাংশ। তাঁর মতে, এতদিন নির্দিষ্ট কোনও সময়সীমা না থাকায়, বাড়তি নম্বরের সংস্থান করে ওঠা হয়নি। তাই তাঁরা দাবি করেছেন, ২০২০ সাল পর্যন্ত যাঁরা ডিএলএড প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, তাঁদের সকলকে নম্বর 'আপগ্রেড' করার সময় দিতে হবে।
অন্যদিকে, এনআইওএস সাফ জানিয়ে দিয়েছে, শুধু প্রশিক্ষণ নিলেই হবে না, ২০১৯ এর মে মাসের মধ্যে যাঁরা তাদের উচ্চমাধ্যমিকের নম্বর আপগ্রেড করে ৫০শতাংশ করেছেন তাঁরাই কেবল শংসাপত্র পাবেন। ফলে বিপাকে পড়ে অনেকেই রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয়ে নম্বর বাড়াতে ভর্তি হয়েছেন। নিখিল বঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহন দাস পণ্ডিতের মতে, প্রশিক্ষিত হয়েও যদি ডিএলএডের শংসাপত্র না মেলে তাহলে তার কোনও গুরুত্ব থাকবে না। এ বিষয়ে এনআইওএসের থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি।