বিশ্বভারতীর ঘটনা লজ্জায় মাথা হেঁট করে দিচ্ছ, মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি রাজ্যপালের

বিশ্বভারতীর ঘটনা লজ্জায় মাথা হেঁট করে দিচ্ছ, মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি রাজ্যপালের

 

কলকাতা: বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে তৃণমূল বিধায়কের নেতৃত্বে বিশাল মিছিল, বেপরোয়া তাণ্ডব, বুলডোজার দিয়ে বিশ্বভারতীর গেট, অফিস ভাঙচুরক, বেপরোয়া তাণ্ডবের বিরুদ্ধে আরও একবার কড়া প্রতিক্রিয়া দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর৷ এবার সরাসরি বিশ্বভারতীর ঘটনায় পুলিশ-প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠালেন রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকার৷ মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যপাল৷ বিশ্বভারতীর ঘটনা লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন তিনি৷ আইনের শাসন ভঙ্গ হচ্ছে বলেও তুলেছেন অভিযোগ৷

পুলিশ প্রশাসন দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে বলেও অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল৷ গোটা ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র বলেও উল্লেখ করেছেন রাজ্যপাল৷ গোটা ঘটনায় গোয়েন্দাদের ব্যর্থতার কথা জানিয়েছেন তিনি৷ কবিগুরুর ভাবনা কার্যকর করার সময় এসেছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেন রাজ্যপাল৷

মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে রাজ্যপাল উল্লেখ করেছেন, ‘‘বিশ্বভারতীর ঘটনা দেখে লজ্জায় মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে৷ এটা আমরা কোথায় চলেছি? শান্তিনিকেতনে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে৷ অধ্যাপক থেকে শুরু করে কর্মচারী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন৷ শান্তিনিকেতন বাংলার গর্ব৷ বাঙালির গর্ব৷ তাকেই দুষ্কৃতীদের হাত থেকে বাঁচানো গেল না৷ এটা দূর্ভাগ্য৷ প্রকাশ্য দিবালোকে একের পর এক তাণ্ডব চালানো হল৷ দুষ্কৃতীরা এখন  পুলিশ প্রশাসনকে ভয় পাচ্ছে না৷ পুলিশ প্রশাসন দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে৷ এই ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র৷ গোয়েন্দাদের চূড়ান্ত ব্যর্থতা প্রমাণ করছে এই ঘটনা৷ কবিগুরুর ভাবধারা কার্যকরের করার সময় এসেছে৷’’ চিঠির শেষে রাজ্যপাল কবিগুরুর লেখা ব্যবহার করে লেখেন, ‘চিত্ত যেথা ভয় শূণ্য উচ্চ যেথা শির৷’’

পদাধীকার বলে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্ত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেকটর৷ বিশ্বভারতীর ঘটনায় তাঁর আরও মত, ‘‘যা হয়েছে তা সবাইকে নাড়িয়ে দিয়েছে৷ যা হয়েছে লজ্জায় মাথা নত হয়ে যাচ্ছে৷ গুন্ডাদের হাতে বিশ্বভারতীকে আমরা রক্ষা করতে পারলাম না৷ শান্তিনিকেতন বাংলার গর্ব, কিন্তু তাকেও আমরা রক্ষা করতে ব্যর্থ৷ পুলিশকে তোয়াক্কা না করে তাণ্ডব চলেছে শান্তিনিকেতনে৷ এই ঘটনা দেখিয়ে দিল, পুলিশ প্রশাসনের রাজনীতিকরণ৷ প্রশাসনের এরকম দুঃখজনক ঘটনা আমাদের তাড়িয়ে বেড়াবে৷ প্রত্যেক সমাজ এই ঠিক আর ভুলের মধ্যে বিভাজন থাকে৷ বিশ্বভারতীর পবিত্রতা রক্ষায় একসঙ্গে কাজ করতে হবে৷’’

যদিও গতকাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবান্ন থেকে সাফ জানিয়েছিলেন, তিনি কোনোভাবেই চান না বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেলার মাঠের নির্মাণ কাজ শুরু হোক৷ প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংস করে পাঁচিল তোলার বিষয়েও আপত্তি জানিয়েছিলেন তিনি৷ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী আপত্তি জানালেও ক্যাম্পাসের অন্দরে তৃণমূল বিধায়কের নেতৃত্বে মিছিল, বুলডোজার দিয়ে গেট ভাঙচুর, বেপরোয়া তাণ্ডবের বিরুদ্ধে কোনও নিন্দামন্দ করেননি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nine − 6 =