কলকাতা: এই বছর স্বাধীনতা দিবসটা সম্পূর্ণ ভিন্ন ছিল দূর্গাপুরের প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক চিরঞ্জিত ধীবরের কাছে৷ কারণ এই বছর স্বাধীনতা দিবসের ঠিক আগে এক অনন্য ইচ্ছে পূরণ হয়েছিল তাঁর৷ আইসিএমআর এবং ফার্মা কোম্পানি ভারত বায়োটেকের কোভিড-১৯ টিকা ‘কোভ্যাক্সিন’-এর হিউম্যান ট্রায়ালে অংশ নেওয়া বাংলার একমাত্র মুখ যে তিনি৷
আরও পড়ুন- SSC কবে হবে ভাই? উত্তরে বার্ধক্যভাতার ‘জোকস’ শোনালেন তৃণমূলের মুখপাত্র দেবাংশু
এই কোভিড-১৯ টিকা নেওয়ার জন্য বাংলা থেকে আবেদন করা ৫০ জনেরও বেশি মানুষের মধ্যে ডাক পেয়েছিলেন একমাত্র চিরঞ্জিতবাবু৷ ৩০ বছরের এই প্রাথমিক শিক্ষকই রাজ্যের একমাত্র ব্যক্তি, যিনি ভারতে তৈরি করোনা ভ্যাকসিনের হিউম্যান ট্রায়ালে অংশ নেওয়ার সুযোগ পান৷ গত ২৯ জুলাই প্রথম ০.৫ এমএল-এর একটি ডোজ প্রয়োগ করা হয় তাঁর শরীরে৷ এর পর ১২ অগাস্ট সম পরিমাণের দ্বিতীয় ডোজ নেন চিরঞ্জিতবাবু৷ প্রথম ধাপে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পর সুস্থই আছেন তিনি৷ দ্বিতীয় ডোজটি নেওয়ার পর অবশ্য জ্বর, মাথা যন্ত্রণা এবং হালকা ব্যাথা অনুভব করছেন বলে জানিয়েছিলেন চিরঞ্জিতবাবু৷ তবে এটা একেবারেই স্বাভাবিক বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা৷ এখন সম্পূর্ণ সুস্থ তিনি৷ আপাতত ভুবনেশ্বরে এসইউএম হাসপাতালে রয়েছেন বাংলার এই শিক্ষক৷
আরও পড়ুন- D.El.Ed শংসাপত্র আছে? NIOS-র নয়া নির্দেশে বিপাকে বহু শিক্ষক
করোনা টিকা ‘কোভ্যাক্সিন’ প্রয়োগের আগে গত ২৫ জুলাই সারা শরীর স্ক্রিনিং করা হয় তাঁর৷ ফিট সার্টিফিকেট মেলার পরই তিনি অংশ নেন করোনা টিকার ট্রায়ালে৷ গত এপ্রিল মাসে ট্রায়ালে অংশ নেওয়ার জন্য আইসিএমআর-এর কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন শিক্ষক তথা আরএসএস কর্মী চিরঞ্জিত ধীবর৷ অবশেষে জুলাই মাসে ডাক আসে তাঁর৷ ট্রায়ালের প্রধান ইনভেস্টিগেটর ড. ভেঙ্কট রাও এই পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য ডেকে পাঠান চিরঞ্জিৎবাবুকে৷ করোনা টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পর ২৮ দিনের জন্য আপাতত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানেই থাকতে হবে চিরঞ্জিতবাবুকে৷ আগামী ২৬ অগাস্ট বাড়ি ফিরবেন দূর্গাপুরের এই স্কুল শিক্ষক৷ এর আগে অবশ্য তাঁর রক্ত পরীক্ষা করা হবে৷ তাঁর শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে কিনা, তা পরীক্ষা করে দেখবেন চিকিৎসকরা৷ এর পর আবার ১০৪তম দিন এবং ১৯৪ তম দিনে ফের চেকআপে যেতে হবে তাঁকে৷
আরও পড়ুন- করোনা টিকা আবিষ্কারে বড় সাফল্য ভারতের, নয়া ঘোষণা নীতি আয়োগের
এই মুহূর্তে কোভ্যাক্সিনের সফাল্যের আশায় রয়েছে গোটা দেশ৷ বাংলার ছেলের এই প্রচেষ্টাও সফল হবে বলে আশাবাদী রাজ্যের মানুষ৷ ঘরে ফিরে নিজের রাজ্য আর স্কুলের নাম উজ্জ্বল করবেন চিরঞ্জিত ধীবর৷