ভোট আসে ভোট যায়, অ্যাম্বুলেন্স নেই পতিরামের ৫০ হাজার বাসিন্দার

জানা গেছে, বিগত বাম আমলে বিধায়িকা মাফুজা খাতুনের বিধায়ক তহবিল থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া গেছিল এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের জন্য। কালের নিয়মে নষ্ট হয়ে গিয়েছে সেটাও। তাই এখন এত মানুষের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য একমাত্র ভরসা প্রাইভেট গাড়ি।

বিশ্বদীপ নন্দী: স্বাধীনতার পর ৭৩ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। বিশ্বের কাছে আধুনিক দেশ হিসেবে ধীরে ধীরে উঠে এসেছে ভারত। ঝাঁ চকচকে রাজপথ, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, ভিনগ্রহে যান পাঠানো সবই হয়েছে। কিন্তু খাদ্য, স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা, এই তিনটি প্রাথমিক পরিষেবা কি সম্পূর্ণ হয়েছে দেশজুড়ে। পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার একটি অঞ্চলের চিত্র কিন্তু অন্যরকম কথা বলছে। স্বাস্থ্য পরিষেবার মতো জরুরি বিষয় সেখানে অবহেলিত।  

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট ব্লকের ছোট্ট জনপদ পতিরাম অঞ্চল। পতিরাম গ্রাম পঞ্চায়েত, নাজিরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কিছু অংশ, ডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের কিছু, বোল্লা গ্রাম পঞ্চায়েতের কিছুটা অংশ ছাড়াও আরও দু'একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের খানিকটা করে অংশ নিয়ে গঠিত প্তিরাম অঞ্চল। এই অঞ্চলে বাস ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষের। কিন্তু এই বিশাল সংখ্যক জনসাধারণের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য নেই কোনও অ্যাম্বুলেন্স। ওই এলাকার মানুষের সমস্যা তাই সহজেই অনুমেয়। 

জানা গেছে, বিগত বাম আমলে বিধায়িকা মাফুজা খাতুনের বিধায়ক তহবিল থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া গেছিল এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের জন্য। কালের নিয়মে নষ্ট হয়ে গিয়েছে সেটাও। তাই এখন এত মানুষের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য একমাত্র ভরসা প্রাইভেট গাড়ি। কিন্তু এখন চলছে অতিমারির পরিস্থিতি। সংক্রমণের ভয়ে প্রাইভেট গাড়ির চালকরা রোগী নিয়ে যেতে ভয় পাচ্ছেন। রাতবিরেতে হঠাৎ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাই আক্ষরিক অর্থেই ভগবানই ভরসা পতিরাম এলাকার বাসিন্দাদের। 

প্রত্যেক নির্বাচনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা প্রথামতো নানান অঙ্গীকার করে যান। যেই জয়ী হোন না কেন, পরিস্থিতির বিন্দুমাত্র নড়চড় হয় না পতিরামের মানুষদের। সেই ভগবানই ভরসা থেকে যান। পতিরাম অঞ্চলের মানুষ বালুরঘাট তপন ও কুমারগঞ্জ বিধানসভার ভোটার।  বালুরঘাটের বাম বিধায়ক কিংবা তপনের ও কুমারগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক, কেউই এখানকার মানুষের জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দেয়নি। বিধায়ক তো দূর, পাশে দাঁড়াননি বালুরঘাটের নির্বাচিত সাংসদ। পতিরাম গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান হিসেবে ক্ষমতায় আছেন বিজেপি সদস্য। তিনিও খেটে খাওয়া, সাধারণ মানুষের দুর্দশায় বিন্দুমাত্র বিচলিত নন। যেমন দুর্ভোগ আগে ছিল, তেমনই সঙ্গী হয়ে রয়েছে পতিরামের। স্বাস্থ্য পরিষেবার মতো প্রাথমিক এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কবে নজর দেবে স্থানীয় প্রশাসন, কবে আসবে একটা নতুন অ্যাম্বুলেন্স তা কেউ বলতে পারছে না। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − 8 =