পেনশন প্রকল্প চালাতে সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে বিপুল ঋণ নিচ্ছে রাজ্য

তপশিলি জাতি ও জনজাতিদের জন্য চলতি বছর মার্চে রাজ্য সরকার প্রতি মাসে ১ হাজার টাকার পেনশন প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি এই প্রকল্পের জন্য রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকার ঋণ নিল মমতা সরকার। পেনশন দেওয়ায় সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়ার ঘটনা এ রাজ্যের ইতিহাসে এর আগে দেখা যায়নি। স্বাভাবিক ভাবেই সমবায় ও প্রশাসনিক মহলে এই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

 

কলকাতা: তপশিলি জাতি ও জনজাতিদের জন্য চলতি বছর মার্চে রাজ্য সরকার প্রতি মাসে ১ হাজার টাকার পেনশন প্রকল্পের ঘোষণা করেছিল। কিন্তু সম্প্রতি এই প্রকল্পের জন্য রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকার ঋণ নিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার। পেনশন দেওয়ায় সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়ার ঘটনা এ রাজ্যের ইতিহাসে এর আগে দেখা যায়নি। স্বাভাবিক ভাবেই সমবায় ও প্রশাসনিক মহলে এই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

'তপশিলি বন্ধু' ও 'জয় জোহার' এই দুটি প্রকল্পের জন্যই রাজ্য সরকার ঋণ নিয়েছেন বলে জানা গেছে। যদিও সমবায় ব্যাঙ্ক তরফে জানানো হয়েছে, আড়াই হাজার কোটি টাকার মধ্যে মাত্র দেড় হাজার কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুর করেছে ব্যাঙ্ক। কিন্তু বাজেট নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী, যে কোনও ঋণ নিতে গেলে কেন্দ্রীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অনুমোদন নিতে হয়। এক্ষেত্রে রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়ার আগে এই বিধি মেনে চলা হয়নি বলে অভিযোগ৷ রাজ্য সরকার গত আর্থিক বছরে কেন্দ্রীয় অনুদানের চার হাজার কোটি টাকা সমবায় ব্যাঙ্কে জমা রেখেছিল। সমবায় ব্যাঙ্ক তরফে এই বিষয়ে জানানো হয়েছে, যেহেতু টাকা জমা ছিলই সেক্ষেত্রে আড়াই হাজার কোটি টাকার ঋণ দিতে কোনও সমস্যা নেই। ব্যাঙ্ক কেবলমাত্র সরকারি আদেশ পালন করছে।

অন্যদিকে, প্রশাসনিক মহলের বক্তব্য, বাম আমলেও দেখা গেছে রাজ্য আর্থিক সংকটে পড়লে সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে টাকা ধার করেছে। কিন্তু সমবায় ব্যাঙ্কের টাকা থেকে সরাসরি পেনশন দেওয়ার ঘটনা এর আগে দেখা যায়নি। আমানতকারীদের টাকা ব্যাঙ্কেই রাখা থাকে ব্যাঙ্ক সেই টাকা অন্য খাতে খাটিয়ে রোজগার করে। কিন্তু মমতা সসরকারের এই সিদ্ধান্তে ভবিষ্যতে সমবায় ব্যাঙ্কের অবস্থা কি হবে সেই চিন্তায় প্রশাসনিক মহল। অর্থ দফতর মারফত জানানো হয়েছে, জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তপশিলি জাতি ও জনজাতিদের পেনশন দেওয়ার কাজ হয়ে গিয়েছে। ৬০ বছরের বেশি বয়স্ক ও অন্য কোনও প্রকল্প থেকে পেনশন পান না, এমন প্রায় ১০ লক্ষ তপশিলি জাতি ও ৩ লক্ষ জনজাতির বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে পেনশন দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।

এদিকে প্রতি মাসেই পেনশন প্রাপকের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। বর্তমানে প্রতি মাসে গড়ে ১৩০ থেকে ১৫০ কোটি টাকা এই খাতে খরচ হচ্ছে। পাশাপাশি রাজ্য সরকার কর্তৃক অন্যান্য দফতরের ৭টি পেনশন প্রকল্পকে একত্রিত করে  ‘জয় বাংলা’ নামে একটি প্রকল্প চালু করা হয়েছে। হিসাব করে দেখা গেছে, এই প্রকল্পেই ঋণ আড়াই হাজার টাকার পুরোটাই খরচ হয়ে যাবে। ব্যাঙ্ক তরফে জানানো হয়েছে রাজ্য সরকার এই প্রকল্পের জন্যই এসটি-এসসি-ওবিসি কর্পোরেশনের নামে ঋণ নিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × five =