কলকাতা: সম্প্রতি রাজ্য বাজেট পেশ করার সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার 'বাংলার সহায়তা কেন্দ্র' নামে একটি প্রকল্প গ্রহণের কথা ঘোষণা করেছিল৷ বর্তমানে অনলাইনে হচ্ছে একাধিক সরকারি পরিষেবা প্রদানের কাজ। কিন্তু সাধারণ মানুষ এখনও এই অনলাইন পরিষেবায় ততটা সড়গড় হয়ে উঠতে পারেননি। মূলত তাঁদের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে৷ এবার এই প্রকল্পেই রাজ্য থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার কর্মী নিয়োগের কাজ শুরু করল তৃণমূল সরকার৷
প্রকল্প রূপায়নের জন্য রাজ্যে মোট ২ হাজার ৭১১টি কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। সরকারি সংস্থা ওয়েবেল টেকনোলজি লিমিটেড বা ডবলুটিএল কর্তৃক, প্রতিটি কেন্দ্রে দু’জন করে ডেটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করা হয়েছে। এই প্রকল্পটির রূপায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরকে। এই দফতরের আধিকারিকদের অনুমোদনে ডবলুটিএল কর্মী নিয়োগের দায়িত্ব পেয়েছে। এই সংস্থা মূলত চুক্তিভিত্তিক ভাবে বিভিন্ন সরকারি দফতরের তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত কাজের জন্য কর্মী নিয়োগ করে থাকে।
সংস্থার প্রধান সম্পাদক অফিসার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় প্রত্যেক জেলার জেলাশাসকদের চিঠি দিয়ে কর্মী নিয়োগের কথা জানিয়েছেন। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, বাংলা সহায়তা কেন্দ্রের পরিকাঠামো তৈরি থাকলে খুব শীঘ্রই কর্মীদের কাজে পাঠানো হবে। আর যদি পরিকাঠামো তৈরিতে কিছুটা বিলম্ব ঘটে, সেক্ষেত্রে পরিকাঠামো গড়ে উঠলেই কর্মীদের সেখানে নিয়োগ করা হবে। রাজ্য তরফে প্রতি কেন্দ্রের পরিকাঠামোর জন্য নির্দিষ্ট ৯৫ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ওই টাকায় প্রতি কেন্দ্রে দুটি ইন্টারনেট সংযোগ যুক্ত কম্পিউটার, একটি স্ক্যানার, একটি প্রিন্টার এবং প্রয়োজনীয় আসবাব সামগ্রি কেনার কথা বলা হয়েছে। রাজ্যের পেশ করা বাজেটে এই প্রকল্পের জন্য সর্বমোট ১০০ কোটি টাকা ধার্য করা হয়েছে।
এই প্রকল্পের জন্য আলাদা করে কোনও ভবন গড়ে তোলা হচ্ছে না। স্থানীয় বিডিও, এসডিও কিংবা জেলা শাসকের অফিস অথবা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত লাইব্রেরি, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, গ্রামীণ হাসপাতালেই এই প্রকল্পের কেন্দ্রগুলি গড়ে তোলা হচ্ছে। এর মধ্যে ৯০৬টি কেন্দ্র প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এবং ৭৮টি কেন্দ্র লাইব্রেরিতে গড়ে তোলার কথা হয়েছে। এক্ষেত্রে লাইব্রেরি ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্বাভাবিক অবস্থা যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয়, তার দিকেও নজর রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি সরকারি কর্মী সংগঠনের প্রবীন নেতা মনোজ চক্রবর্তীর কথায়, বর্তমানে অনেক গ্রামীণ লাইব্রেরিই কর্মীর অভাবে বন্ধ হয়ে আছে, সেখানে এই সহায়তা উদ্যোগ কার্যকরী করা হলে ভবিষ্যতে লাইব্রেরিগুলির অস্তিত্ব সংকটে পড়তে পারে। প্রসঙ্গত, এই কেন্দ্রগুলিতে জাতিগত শংসাপত্র, সরকারি বিভিন্ন ফি জমা দেওয়া, কন্যাশ্রী ইত্যাদি বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য আবেদন করা যাবে। মুর্শিদাবাদে রাজ্যের মধ্যে সবথেকে বেশি ২০৫টি কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে। কলকাতায় এই প্রকল্পের কোনও কেন্দ্র গড়া হচ্ছে না আপাতত।