কলকাতা: নবান্নের ভার্চুয়াল প্রশাসনিক বৈঠকে বাংলার আবাস যোজনা, বাংলা সড়ক যোজনা এবং ১০০ দিনের কাজের উপর জোড় দিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ কোন জেলায় কোন প্রকল্পের কাজ কতদূর এগিয়েছে তার খুঁটিনাটি হিসাব নিলেন তিনি৷ সেইসঙ্গে খারাপ পারফরম্যান্সের জন্য ধমকও দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
আরও পড়ুন- বাংলায় কর্মসংস্থানে মিরাকেল হবে, আড়াই লক্ষ নিয়োগ ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
১০০ দিনের কাজে কোন জেলার কেমন পারফরম্যান্স এদিন সেই হিসাবও নেন মুখ্যমন্ত্রী৷ ১০০ দিনের কাজের উপর অধিক গুরুত্ব দেন তিনি৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বৃষ্টি বেশি হওয়ায় বহু জায়গায় চাষের জমিতে জল জমে গিয়েছে৷ প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য প্লাবনের আশঙ্কা রয়েছে৷ কৃষকরা নতুন করে চাষাবাদ শুরু হয়েছে৷ ফলে জল জমে থাকলে ফসল পচে যাবে৷ সেচ, জল ধরো জল ভরো দফতর পঞ্চায়ের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ১০০ দিনের কাজকে সামনে রেখে অবিলম্বে মাঠের জল পরিষ্কার করতে হবে৷ একযোগে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি পালন করতে হবে৷ ১০০ দিনের কাজের মাধ্যমে কৃষকদের সাহায্য করতে হবে৷ ১০০ দিনের কাজের মাধ্যমে জমা জল বার করতে হবে৷
তিনি বলেন, ‘‘কোভিড পরিস্থিতিতে যখন সব কিছু বন্ধ, তখন মাস্ক এবং স্যানিটাইজার তৈরি করে কয়েক কোটি কর্ম সংস্থান তৈরি করেছিলাম আমরা৷’’ তাঁর কথায়, আগামী বছর ভোট আসছে বলে কাজ না করে এই কয়েক মাস চালিয়ে নিতে চাইলে তা চলবে না৷ কারণ, ‘নির্বাচন আসবে যাবে, সরকার কিন্তু চলবে।’
আরও পড়ুন- ‘নির্বাচন আসবে যাবে, সরকার কিন্তু চলবে’, সাফ বার্তা মমতার
এর পর বাংলার আবাস যোজনায় কোন জেলায় কত কাজ হয়েছে সেই হিসাব নেন মুখ্যমন্ত্রী৷ হিসাব নেন সড়ক যোজনার কাজেরও৷ তিনি বলেন, অনেক ছোট ছোট রাস্তা ভেঙে গিয়েছে৷ সেগুলি সার্ভে করে দেখতে হবে৷ গ্রামীণ রাস্তা তৈরির উপর অগ্রাধিকার দিতে হবে৷ বাজেট বুঝে কাজ করতে হবে৷ বড় সড়কের কাজ আগেও হয়েছে, পরেও আবার হবে, কিন্তু এখন ছোট রাস্তার কাজ চাই। এই কথার পরই স্বরাষ্ট্র সচিব জানান, পশ্চিম বর্ধমানের মতো কিছু জেলায় গ্রামীণ রাস্তাঘাটে ভারী যান চলাচলের ফলে তা ভগ্নপ্রায় দশায় পরিণত হচ্ছে। মমতার সাফ বার্তা, ছোট রাস্তায় বড় যানবাহন চলতে দেওয়া যাবে না। এরপরেই পুলিশের ডিজিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘এই কথা তো আমি আগেও বলেছি। আর কতবার বলতে হবে? এরপর যদি আবার এই শুনি তাহলে কিন্তু ছাড়ব না। কড়া পদক্ষেপ নেব।’
মুখ্যমন্ত্রী জানান, বাংলার সড়ক যোজনায় পুরুলিয়ায় টার্গেট দেওয়া হয়েছে ১৫০ কিলোমিটার৷ কিন্তু কাজ হয়েছে মাত্র ২৩ কিলোমিটার রাস্তার৷ কেন এত কম কাজ হল? জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী৷
আরও পড়ুন- পুলিশে করোনা, আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে কেন? তালিকা দেখে উদ্বেগ মুখ্যমন্ত্রীর
বাঁকুড়ায় বাংলা সড়ক যোজনায় ২০-২১ সালে টার্গেট দেওয়া হয়েছে ১৫০ কিলোমিটার৷ সেখানে মাত্র ৩৫.৪২৩ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করা হয়েছে৷ বীরভূম জেলার অবস্থাও তথৈবচ৷ ৭৫ কিলোমিটার লক্ষ্যমাত্রায় কাজ হয়েছে মাত্র ৯ কিলোমিটার৷ মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, পুরুলিয়ায় লক্ষ্য ছিল ১৫০ কিলোমিটার৷ কিন্তু কাজ হয়েছে মাত্র ২৩ কিলোমিটার৷ কাজের এই অগ্রগতিতে বেজায় ক্ষিপ্ত হয়ে যায় মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি জানতে চান, কোন পঞ্চায়েত কাজ করছে না? কেন করছে না? তোমরা কেন নিজেরা বেরচ্ছ না? এই ভাবে কাজ করলে চলবে না বলেও সাফ জানিয়ে দেন তিনি৷
অন্যদিকে, পূর্ব বর্ধমানে লক্ষ্য দেওয়া হয়েছিল ৯৫ কিলোমিটার৷ লক্ষ্যমাত্র পূরণ হয়েছে মাত্র ১৫.৬৭ কিলোমিটার৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, লজ্জা করছে না শুনতে? খুব খুব খারাপ পারফরম্যান্স বলেও জেলাশাসককে ধমক দেন তিনি৷ বাংলা আবাস যোজনা, বাংলা সড়ক যোজনা, ১০০ দিনের কাজ নিয়ে টিম করে প্রতিটি ব্লকে কাজ করার নির্দেশ তাঁর৷