আলিপুরদুয়ার: আলিপুরদুয়ার জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান পদ থেকে শিক্ষাকর্মী অনুপ চক্রবর্তীকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হল শিক্ষিকা গার্গী নার্জিনারি নারাইনকে। মার্চ মাসে শিক্ষকদের একাংশ শিক্ষাকর্মী অনুপ চক্রবর্তীকে ওই পদ থেকে অপসারণের আবেদন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে ডেপুটেশন জমা দিয়েছিলেন। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে ওই পদে শিক্ষিকাকে বসানো হল। শিক্ষা দফতর ইমেল করে শিক্ষিকাকে তাঁর নতুন পদ সম্পর্কে জানিয়ে দিয়েছে৷
যদিও অনুপ বাবুকে কেন সরানো হল এ নিয়ে কেউ মুখ খোলেননি। তবে কামাখ্যাগুড়ি গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষিকা গার্গী নার্জিনারি নারাইনকে এই পদে বসানোয় শিক্ষকদের মধ্যে খুশির হাওয়া ছড়িয়েছে। ২০১৭ সালের ৮ সেপ্টেম্বর অনুপ চক্রবর্তীকে ডিপিএসসি'র চেয়ারম্যান পদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। অনুপ বাবু পেশায় আলিপুরদুয়ার হাইস্কুলে করণিক ছিলেন। শোনা গেছে, এর ফলে শিক্ষকদের একাংশ অপমানিত বোধ করেন এবং তাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। এরপরেই শিক্ষকরা একত্রিত হয়ে চলতি বছর ৯ মার্চ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরে এ বিষয়ে ডেপুটেশন দিয়ে অনুপ বাবুকে অপসারণের জন্য আবেদন করেন।
জানা গেছে, মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি শিক্ষকেরা তাদের ক্ষোভের কথা তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কেও জানিয়েছিলেন। মনে করা হচ্ছে, মূলত আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের কথা ভেবেই, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শিক্ষকদের এই ক্ষোভ দ্রুত প্রশমন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আলিপুরদুয়ারের বীরপাড়া নেতাজি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক তমোঘ্নকিশোর সরকার স্পষ্ট করে বলেছেন, “একজন শিক্ষাকর্মী কীভাবে শিক্ষকদের চেয়ারম্যান হন! এই কারণে আমরা প্রত্যেকেই অসম্মানিত বোধ করছিলাম। আর সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমরা আবেদন করেছিলাম।”
এদিকে অনুপ বাবুর এ বছর সেপ্টেম্বর মাসেই কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। সেক্ষেত্রে আর মাত্র দুটো মাস অপেক্ষা না করেই কেন তাঁকে অপসারণ করা হল এ বিষয়ে জানতে চাইলে অনুপ বাবু বলেছেন, “আমাকে কেন সরানো হল তা নিয়ে কিছু বলতে চাইনা। শুধু এটুকু বলতে পারি আমি আমার সাধ্যমতো যেটুকু দায়িত্ব ছিল তা পালন করেছি।” জানা গেছে, নতুন চেয়ারম্যান ওই শিক্ষিকা আগে মাদারিহাট বিধানসভার কংগ্রেস বিধায়ক ছিলেন। বর্তমানে কালচিনির হাসিমারার গুরুদোয়ারের বাসিন্দা শিক্ষিকা গার্গী দেবী তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী'র অনুগামী বলেই পরিচিত। নতুন পদ সম্পর্কে তাঁর কাছে জানতে চাওয়ায় তিনি বলেছেন, “শিক্ষা দফতর আমাকে যে দায়িত্ব দেবে আমি তার যথাযথ পালন করার চেষ্টা করব। শিক্ষাকর্মীর এই পদে থাকায় শিক্ষকরা অসম্মান বোধ করেছিলেন, তাই আমি সবাইকে সঙ্গে নিয়েই কাজ করব।