‘ভোটের আগে টাকা পেলে নিয়ে নেবেন, শুধু ভোটটা উল্টে দেবেন’, দাওয়াই মমতার

জেএসটি থেকে কেন্দ্রের প্রাপ্য, একাধিক ইস্যুতে কেন্দ্রকে তুলোধোনা মমতার

 

কলকাতা: ছাত্র সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে দেওয়া ভাষণে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এদিন সুর চড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি বলেন, মিথ্যের কালো চাদরে ভারতবর্ষের নীল আকাশটাকে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে৷ ভুয়ো খবর তৈরি করে বিভ্রান্তি তৈরি করা হচ্ছে৷ জনগণকে এক পয়সাও দেয় না কেন্দ্র৷ রাজ্যগুলোকে তাদের প্রাপ্য দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে৷ শুধু বড় বড় ভাষণ আর ‘মন কা বাত’ চলছে৷  

 

কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, জিএসটি আইনে বলা হয়েছিল রাজ্যগুলোকে পাঁচ বছর ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে৷ কারণ জিএসটি’র নাম করে ৭০ শতাংশ টাকা তুলে নিয়ে যাওয়া যাওয়া হচ্ছে৷ হোটেলে খাওয়া-দাওয়া থেকে জামা কাপড় কেনাকাটি, প্রতিটি জায়গায় জিএসটি চাপানো হয়েছে৷ আর এই সমস্ত টাকা নিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্র৷ অথচ গত চার-পাঁচ মাস ধরে ক্ষতিপূরণের একটা টাকাও দেওয়া হয়নি রাজ্যকে৷ 

আরও পড়ুন- পরীক্ষা স্থগিতের দাবিতে রিভিউ পিটিশন রাজ্যের, UGC-কে এক হাত মুখ্যমন্ত্রীর

 

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আগে আমাদের দেশে প্ল্যানিং কমিশন ছিল৷ এখন এসেছে নীতি আয়োগ৷ ‘‘যাঁদের কোনও নীতিই নেই, তাঁদের আবার আয়োগ৷’’ সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সংবাদমাধ্যমকে ধমকানো হচ্ছে৷ সত্য খবর প্রকাশ করতে দেওয়া হচ্ছে না৷ জাতীয় সংবাদমাধ্যমগুলি তো বিজেপি যা বলবে তাই করতে বাধ্য৷ আঞ্চলিক সংবাদমাধ্যমগুলো কিছুটা সত্য প্রকাশের সাহস দেখালেও তাদের ধমকানো হচ্ছে৷ 

এখন দেশে করোনা পরিস্থিতি চলছে৷ পরিস্থিতি ঠিক হলে আবার এনআরসি, ক্যাগ চাপিয়ে দেওয়া হবে বলেও মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, কেন্দ্র কাউকে টাকা দেয় না৷ পরিযায়ী শ্রমিক, কৃষক, অসংগঠিত ক্ষেত্র, ছাত্রছাত্রী, মা-বোন কেউই কেন্দ্রের টাকা পায় না৷ অথচ নির্বাচন আসলে কারও কারও অ্যাকাউন্টে পাঁচ হাজার টাকা পাঠিয়ে দিয়ে বলা হয়, ভোট দাও৷ মুখ্যমন্ত্রীর দাওয়াই, ‘‘যা টাকা পাবেন সেটা নিয়ে নেবেন আর ভোটটা উল্টে দেবেন৷’’ 

আরও পড়ুন- সেপ্টেম্বরে হচ্ছে না পরীক্ষা, স্কুল খোলা নিয়েও বড় ঘোষণা মমতার

তিনি বলেন, লোকসভা নির্বাচনের সময়ও অনেক মিথ্যে কথা বলেছে বিজেপি৷ কখনও বলছে কালো টাকা ফিরিয়ে আনা হবে, কখনও বলেছে ১৫ লক্ষ টাকা অ্যাকাউন্টে জমা করা হবে৷ অথচ কিছুই করা হয়নি৷ দেশে কর্মসমস্থান নেই৷ কয়েক কোটি বেকার তৈরি হয়েছে৷ অথচ বছরে ২ কোটি বেকারকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কেন্দ্রের সরকার৷ সেই তুলনায় অনেক ভালো অবস্থা বাংলায়৷ গতকাল বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে ৩৯ লক্ষ উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার৷ 

ওরা সকলকে ভয় দেখায়, ‘হয় লড়বেন, না হয় মরবেন৷’  গান্ধীর আদর্শে আমরা বলি, ‘করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে’৷ আমরা বলব, হাম লড়েঙ্গে, হাম মরেঙ্গে নেহি৷ আমরা লড়াই করে দেখাব৷ ছাত্রছাত্রীরা এই লড়াই করবে৷   

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × 1 =