২০ বছর বয়সে মাথায় টাক! অবসাদে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী যুবকের

কালনা জেলার ধাত্রীগ্রামের বাসিন্দা সুরজিত বসাক। টাক পড়ে যাওয়ায় দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। শেষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজের বাড়িতেই গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে পড়েন এই বছর ২০ এর যুবক। ঘটনায় পরিবাররে নেমেছে গভীর শোকের ছায়া। কালনা কলেজে স্নাতক স্তরের তৃতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছিলেন মেধাবী সুরজিত।

 

কালনা: সম্প্রতি বাংলা ছবি 'টেকো' কিংবা হিন্দি ছবি 'বালা'র বিষয় বস্তু হিসাবে মাথায় টাক পড়ার ব্যাপারটি ফুটে উঠেছে। দেখা গিয়েছে, নব প্রজন্ম এই ব্যাপারটিকে নিয়ে মানসিক অবসাদে ভুগছেন। জীবনের সব ক্ষেত্রেই এই টাক পড়া ব্যাপারটি বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু এতো গেল সিনেমার কথা, বাস্তবে যে এর জলজ্যান্ত প্রমাণ মিলবে, সেকথা ভাবা যায়! হ্যাঁ, মাত্র ২০ বছর বয়সে মাথায় টাক পড়ার বিষয়ে মানসিক অবসাদের শিকার হয়ে আত্মঘাতী হলেন বাংলার এক কলেজ পড়ুয়া।

কালনা জেলার ধাত্রীগ্রামের বাসিন্দা সুরজিত বসাক। টাক পড়ে যাওয়ায় দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। শেষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজের বাড়িতে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে পড়েন এই বছর ২০-র যুবক। ঘটনায় পরিবাররে নেমেছে গভীর শোকের ছায়া। কালনা কলেজে স্নাতক স্তরের তৃতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছিলেন মেধাবী সুরজিত। কয়েক বছর আগে থেকেই মাথায় টাক পড়তে শুরু করে তাঁর। ক্রমশ সমস্ত চুল উঠে যেতে থাকে। চিকিৎসকের সঙ্গেও পরামর্শ করেছিলেন সুরজিত, কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। এরপর ক্রমশ মানসিক অবসাদের শিকার হতে থাকেন তিনি।

সুরজিতের সব চুল পড়ে যাওয়ায় বন্ধুরাও তাঁকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করতে শুরু করে। পড়তে গেলে তাঁকে নিয়ে বন্ধুদের তামাশার শিকার হতে হত। নিজেকে সবার থেকে আড়াল করে নিয়েছিলেন সুরজিত। বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-পরিজন সবার থেকেই নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখতেন। এমনকি দীর্ঘদিন পারিবারিক কোনও অনুষ্ঠানে যেতেও রাজি হতেন না সুরজিত। বাড়িতেই থাকতেন, মাঝেমাঝে বাবার তাঁতের ব্যবসার কাজ করতেন। কিন্তু এর মাঝেও অন্যান্যদের মাথা ভরা চুল দেখে ক্রমশ মানসিক অবসাদের তলানিতে চলে যান তিনি। গত বৃহস্পতিবার বাড়ি ফাঁকা থাকার সুযোগটা হাতছাড়া করেননি সুরজিত। শোকস্তব্ধ সুরজিতের কাকা রমেশ বসাক বলেছেন, 'খুব মেধাবী ছিল সুরজিত, পরিবারের সকলের আদরের সন্তান ছিল। মাথায় টাক পড়া নিয়ে দীর্ঘদিন দুশ্চিন্তায় ভুগছিল ছেলেটা। কিন্তু শেষমেশ ও যে এমন একটা সিদ্ধান্ত নেবে তা আমরা কেউ ধারণা করতেও পারিনি৷’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *