নয়াদিল্লি: দেশের ৭৪তম স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, মেয়েদের বিয়ের বয়স নিয়ে নতুন করে ভাববে দেশ৷ মেয়েদের বিয়ের বয়স বাড়ানো যায় কিনা, এবার সেই বিষয়টি চিন্তাভাবনা করা হবে৷ মেয়েদের বিয়ের বয়স ন্যূনতম কত বছর হওয়া উচিত সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখতেই একটি নতুন কমিটি গঠন করা হল৷ শনিবার একথা জানান খোদ প্রধানমন্ত্রী৷
মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স কত হওয়া উচিত, এই বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা চলছিল৷ মাতৃত্বের বয়স, মাতৃত্বকালীন মৃত্যুর হার, পুষ্টি বৃদ্ধি এবং এই সংক্রান্ত ইস্যুগুলি তাঁরা খতিয়ে দেখতে গত ৪ জুন সাংসদ জয়া জেটলি এবং নীতি আয়োগের সদস্য বিনোদ পালের নেতৃত্বে একটি ১০ সদস্যের টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়৷ ২০২০-২১ বাজেট অধিবেশনেই এই টাস্ক ফোর্স গঠনের কথা জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন৷ ৩১ জুলাই পর্যন্ত তাঁদের রিপোর্ট তৈরির সময় দেওয়া হয়৷
আরও পড়ুন- জিএসটি'র ঘাটতি মেটানোর দায় নেবে না কেন্দ্র, সবই ঈশ্বরের হাত! ঘোষণা সীতারমনের
এদিন প্রাক্তন এনসিডব্লিউ চেয়ারপার্সন এবং বিজেপি সদস্য ললিতা কুমারমঙ্গলম বলেন, ‘‘শুধু বিয়ের বয়স বাড়ালেই হবে না৷ মেয়েদের উপর সমাজের যে চাপ রয়েছে, তার হাত থেকেও তাঁদের রক্ষা করতে হবে৷’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বর্তমানে আমাদের দেশে বিয়ের ন্যূততম বয়স ১৮৷ কিন্তু দেশের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে এমনকী কিছু শহরে আজও মেয়েরা ঋতুমতী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ১২, ১৩, ১৪ বছরে তাঁদের বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়৷ এখনও আমাদের সমাজ মনে করে, মেয়েরা যদি পড়াশোনাই না শেখে, তাঁদের যদি কাজে পাঠানো না হয়, তাহলে পরিবারের কাছে সে ‘বোঝা’৷
তাই তাঁর মতে, ‘‘শুধু বিয়ের ন্যূনতম বয়স বাড়ানোই যথেষ্ট নয়৷ এর সঙ্গে প্রয়োজন সঠিক তথ্য, শিক্ষা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা৷ মেয়েদের স্কুলে পাঠানো হচ্ছে কিনা, সেটা সবার আগে নিশ্চিত হতে হবে৷ অর্থের অভাবে এবং বিনামূল্যে পরিশ্রমের জন্য সবার আগে মেয়েদেরই স্কুল থেরে ছাড়ানো হয়৷ মেয়েদের যাতে জোড় করে বিয়ে দেওয়া না হয়, তার যথাযথ বন্দোবস্ত করতে হবে কমিটিকে৷’’
আরও পড়ুন- স্বাভাবিকের পথে বিমান পরিষেবা, খাবার-পানীয়ের থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার
আবার প্রাক্তন এনসিডব্লিউ সদস্য এবং আইনজীবি চারু ওয়ালিখান্না বলেন, মেয়েদের বিবাহের বয়স বৃদ্ধি করা হলে ‘বিয়ের বয়সের ক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্য’ দূর হবে৷ পুরুষদের বিয়ের বর্তমান বৈধ বয়সও ২১ বছর৷ তিনি বলেন, ‘‘এটি একটি প্রশংসনীয় পদক্ষেপ৷ কারণ রিপোর্ট বলছে আমাদের দেশে প্রতি ২০ মিনিটে সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে বা গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের মৃত্যু হয়৷ ভারতে মাতৃত্ব মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি৷ বিয়ের ন্যূনতম বয়স বৃদ্ধি করা হলে মেয়েদের উপর থেকে সামাজিক চাপও কমবে৷’’