কলকাতা: করোনা অতিমারির মধ্যেই রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প নিয়ে অসন্তোষ দানা বাঁধতে শুরু করেছে প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে৷ শুরু হয়েছে এই প্রকল্প থেকে বেরিয়ে আসার হিড়িক৷ স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প থেকে নাম কাটাতে গত কয়েক মাসে কয়েক হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন বলে বিজেপি টিচার্স সেলের দাবি৷ রাজ্যের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে তীব্র বিরোধিতা জানাল বিজেপি টিচার্স সেল৷
আরও পড়ুন- পুরসভাকে ১০০০ পিপিই, ৩৫০০ লিটার স্যানিটাইজার দিলেন IMA রাজ্য সম্পাদক
যে সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হননি তাঁদের জন্য নতুন পে-কমিশনে মেডিক্যাল অ্যালাউন্স ৩০০টাকা থেকে বাড়িয়ে মাত্র ৫০০টাকা করা হয়েছে৷ এর বিরোধিতা করে বিজেপি টিচার্স সেলের প্রাথমিক শাখার রাজ্য কো-ইনচার্জ সব্যসাচী ঘোষ বলেন, ‘‘নতুন পে-কমিশনে মেডিক্যাল অ্যালাউন্স ৩০০টাকা থেকে বাড়িয়ে ন্যূনতম ১,৫০০ টাকা করা উচিত। আমরা জানি বছরে ৬,০০০ টাকা প্রিমিয়ামে বেসরকারি কোনও স্বাস্থ্য প্রকল্পে মেডিক্লেম করা যায় না। মাসিক মেডিক্যাল অ্যালাউন্স যদি ন্যূনতম ১,৫০০টাকা করা হয়, তবে বছরে ১৮,০০০ টাকায় প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকারা পছন্দমতো মেডিক্লেমে যুক্ত হতে পারবেন।’’ তাই প্রাথমিক শিক্ষকদের মেডিক্যাল অ্যালাউন্স অবিলম্বে ৫০০টাকা থেকে বাড়িয়ে ন্যূনতম ১,৫০০টাকা করার দাবি জানিয়েছে বিজেপি টিচার্স সেলের প্রাথমিক শাখা৷ তাঁদের দাবি না মানা হলে সংগঠনের পক্ষ থেকে বাংলা জুড়ে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন সংগঠনের সদস্যরা৷
আরও পড়ুন- ফের ডামাডোল বিশ্বভারতীতে, প্রাক্তন উপাচার্য-সহ তিন আধিকারিককে বরখাস্ত করল কর্তৃপক্ষ
বিজেপি টিচার্স সেলের রাজ্য কনভেনার দিপল বিশ্বাস বলেন, ‘‘সমগ্র ভারতবাসীর জন্য ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্প চালু করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ অথচ আমাদের রাজ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে দেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বদলে স্বাস্থ্য সাথী নামক একটি জঘন্য স্বাস্থ্য প্রকল্প চালিয়ে যাচ্ছেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের সুবিধা সমগ্র রাজ্যবাসীর জন্য নয়৷ শুধুমাত্র অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মচারীদের জন্য৷ কিন্তু আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে সমগ্র রাজ্যবাসী বিনামূল্যে দেশের যে কোনও রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা পাবে।’’
আরও পড়ুন- ৮ লক্ষ টাকায় পার্টি অফিস বেচে দিলেন তৃণমূল নেতা! সেচের জমি জবরদখল?
দিপলবাবুর কথায়, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যের বেহাল স্বাস্থ্য পরিষেবা ফুটে উঠেছে৷ অন্যান্য রাজ্যে যেখানে বিনামূল্যে করোনার চিকিৎসা করা হচ্ছে, সেখানে পশ্চিমবঙ্গে করোনা আক্রান্ত রোগীকে লক্ষ লক্ষ টাকার বিল ধরানো হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতেও তৃণমূলের নেতারা করোনা আক্রান্ত রোগীর কাছ থেকে ঘুরপথে কাটমানি খাচ্ছে।’’ বাংলার মানুষের স্বার্থে অবিলম্বে রাজ্যে ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্প চালু করার দাবিও জানিয়েছে বিজেপি টিচার্স সেল৷
এছাড়াও দিপলবাবু জানান আশা কর্মী, অঙ্গনওয়াড়ী কর্মী, সিভিক পুলিশ এবং অন্যান্য অসংগঠিত কর্মচারীদের যেখানে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, সেখানে এই প্রকল্পের অন্তর্গত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মেডিক্যাল অ্যালাউন্সের টাকা বেতন থেকে কাটা হচ্ছে। অসংগঠিত কর্মচারীদের সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের যুক্ত করে তাঁদের অপমান করা হচ্ছে৷ বেতন থেকে মেডিক্যাল অ্যালাউন্স কাটার জন্য তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।