ঝাপসা চোখে প্রণবের স্মৃতিতে পুরোনো দিনের ফিরলেন বন্ধু-পল্টু

ঝাপসা চোখে প্রণবের স্মৃতিতে পুরোনো দিনের ফিরলেন বন্ধু-পল্টু

নিজস্ব প্রতিনিধি, বোলপুর: রাষ্ট্রপতি ছিলেন তিনি। কিন্তু তারও আগে তিনি ছিলেন বন্ধু। কলেজ জীবনের বন্ধুর মৃত্যুর পর বারবার অতীতের ছবি ফিরে ফিরে আসছিল প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ষষ্ঠীকিঙ্কর দাসের স্মৃতিচারণায়। বন্ধুর কথা বলতে গিয়ে শোকে বিহ্বল হয়ে পড়ে বীরভূমের সিউড়ি শহরের শিক্ষক ষষ্ঠীকিঙ্করবাবু। ঝাপসা হয়ে আসছিল চোখের দৃষ্টি, উদাস হয়ে যাচ্ছিল মন। চোখের পাতা ভিজে ভিজে যাচ্ছিল বারবার। মন চলে যাচ্ছিল সেই সময়টাতে যখন বন্ধু থাকতো পাশে। গল্পে, আড্ডায় পেরিয়ে যেতো সময়। অতীতের সেই জীবন যেন পিছু ডাকছিল।

সিউড়ির বিদ্যাসাগর কলেজে একসঙ্গে পড়তেন দুজনে। দিল্লির রাজনীতিতে সক্রিয় প্রণববাবু বীরভূমে এলেই তলব পড়তো প্রিয় বন্ধু ষষ্ঠীর। প্রয়াত বন্ধু পল্টুর কথা বলতে গিয়ে ষষ্ঠীবাবু জানালেন ধীর স্থির এবং শান্ত পড়ুয়া ছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। তবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত বন্ধুবৎসল। নিঃসঙ্গতা তিনি পছন্দ করতেন না। সবসময়ই হইহুল্লোড় করে কাটাতেন সবার সঙ্গে।

স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভের পর রাজনীতি আঙিনায় পা দেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। অজয় মুখার্জির বাংলা কংগ্রেসে যোগদান করেন তিনি। পরবর্তী সময়ে বোলপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হন এবং বাম প্রার্থী শরদীশ রায়ের কাছে পরাজিত হন। তবু সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াননি। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বুদ্ধিদীপ্ত বক্তৃতা জনগণ এবং রাজনৈতিক মহলকে মুগ্ধ করে। সেই সময়ই ইন্দিরা গান্ধী তাকে রাজ্যসভায় নিয়ে গিয়ে সাংসদ করেন। দেশের মানুষের সেবার জন্য রাজ্য থেকে জাতীয় রাজনীতির দরজা খুলে যায় তাঁর সামনে। তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ বীরভূম জেলা কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ।
এই রাজনৈতিক টানাপোড়েনের সময় প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু একটি অপূরণীয় ক্ষতি বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এই মৃত্যুকে একটি যুগের অবসান বলেও উল্লেখ করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *