সুব্রত থেকে লকেট, প্রণব-প্রয়াণে আবেগ বিহ্বল বাংলার রাজনৈতিক মহল

সুব্রত থেকে লকেট, প্রণব-প্রয়াণে আবেগ বিহ্বল বাংলার রাজনৈতিক মহল

 

কলকাতা: প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়লেন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়৷ এক সময় প্রণববাবুর ছত্রছায়ায় কাজ করেছেন তিনি৷ প্রণববাবু কখনও ছিলেন সভাপতি কখনও বা দলের সিনিয়র৷ কংগ্রেসের ‘ক্রাইসিস ম্যানেজার’-এর স্নেহধন্য ছিল সুব্রতবাবু৷ তিনি বললেন, ‘‘তাঁর মৃত্যুতে এক বর্ণময় অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটল৷ অসম্ভব স্মৃতিশক্তি ছিল তাঁর৷ ইন্দিরা গান্ধী তাঁকে কম্পিউটার মেমরি বলতেন৷ ছিলেন ইন্দিরার আশীর্বাদধন্য৷’’  

আরও পড়ুন- এবার পুজোয় প্রণব-কণ্ঠে বাজবে চণ্ডীপাঠ, মণ্ডবে সত্যজিৎ গড়বেন পথের পাঁচালি!

 

যে কতিপয় লোক তাঁকে প্রণব দা বলে ডাকতেন তার মধ্যে অন্যতম তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মানস ভুঁইয়া। প্রণববাবুর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি৷ ২০১২ সালে রাজ্যসভার সাংসদ মানস ভুঁইয়ার আমন্ত্রণে সবংয়ে এসেছিলেন প্রণববাবু৷ তিনি বললেন, ‘‘দেখা করতে গেলেই প্রণব দা বলতেন, মেদিনীপুরের লোক এসেছে৷ মুড়ি দে৷’’  পিতৃতুল্য প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সশ্রদ্ধ প্রণাম জানিয়ে  বলেন, ‘‘ভারতবর্ষকে রক্ষা করার মানুষ চলে গেলেন।’’ প্রণব মুখোপাধ্যায়কে অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাষ্ট্রনায়ক বলেই মনে করেন মানসবাবু৷  

আরও পড়ুন- প্রণব-রাজনীতির প্রথম অধ্যায় লেখা হয়েছিল হাওড়ার এই বাড়িতে

 

তৃণমূল কংগ্রেসের তাত্ত্বিক নেতা নির্বেদ রায়ও একসময় কংগ্রেসের অন্যতম নেতা ছিলেন। সেই সময় খুব কাছ থেকেই প্রণববাবুকে দেখেছেন তিনি। একজন বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ, রাষ্ট্রনেতা, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ও বাঙালীর গর্বই  নয়, প্রণববাবু ছিলেন অত্যন্ত পণ্ডিত মানুষ৷ প্রণববাবু একসময় এশিয়াটিক সোসাইটির লাইব্রেরিতে বসে নির্বেদ রায়কে বলেছিলেন, ‘‘এই লাইব্রেরিতে বসে সারাজীবন কাটিয়ে দিতে পারলেই ভালো হতো৷’’ আন্তর্জাতিক স্তরের এহেন এক রাজনীতিবিদের সাহিত্য ও শিক্ষার প্রতি যে অনুরাগ, সেটা অন্য অনেকের থেকে আলাদা করে তুলেছে তাঁকে।

আরও পড়ুন- করোনা জয়ের পথে বাংলা! আশার আলো জ্বালিয়ে কমছে মৃত্যুর হার

প্রণববাবুকে স্মরণ করেছেন বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়কে৷ তিনি বলেন, ‘‘তাঁর বার্তা চিরকাল সবার মনের মধ্যে থেকে যাবে৷ তিনি বাঙালীর গর্ব৷ বীরভূম থেকে যাত্রা শুরু করে দেশের সর্বোচ্চ নাগরিকের পদে আসীন হয়েছিলেন তিনি৷’’ লকেট আরও বলেন, ‘‘রাজনীতির উর্ধে উঠে সকলের সঙ্গে যে আলোচনা করা যায়, সকলকে যে সুপরামর্শ দেওয়া যায়, সেটা তিনি বিশ্বাস করতেন৷ এই বিষয়ে তাঁর দলের অন্দরে অনেক বিতর্ক হলেও, প্রণববাবু প্রণববাবুই ছিলেন, থাকবেন৷ কংগ্রেসের পরিবারতন্ত্রের জন্যই যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও একজন বাঙালি তাঁর উপযুক্ত স্থান পাননি৷ তবে প্রধানমন্ত্রী না হয়েও রাজনীতিতে তাঁর যে অবদান, তা চিরকাল মানুষ মনে রাখবে৷’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − 11 =