কলকাতা: জিএসটি’র বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এদিন বিকেলে নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে জিএসটি নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, প্রাপ্য টাকা থেকে রাজ্যকে বঞ্চিত করা হচ্ছে৷ কেন্দ্রের এই বঞ্চনা আমরা কেন মানব?
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জিএসটি কাউন্সিলে প্রথমে ঠিক করা হয়েছিল, পাঁচ বছর জিএসটি’র ক্ষতিপূরণ পাবে রাজ্য৷ অথচ এই কঠিন সময়ে দাঁড়িয়ে বলা হচ্ছে জিএসটি’র বকেয়া দিতে পারব না৷ রাজ্যকে সমস্ত টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে৷ যে টাকা আগে রাজ্য নিজে পেত, সেই টাকাটাও এখন কেন্দ্র নিয়ে যাচ্ছে৷
আরও পড়ুন- পানীয়ের গ্লাস ঠুকে বলুন ‘চিয়ার্স’! অবশেষে খুলে গেল শহরের পানশালা
গত বছরের তুলনায় এই বছর জিএসটি আদায়ের হার প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে৷ ফলে সমস্যায় পড়েছে কেন্দ্রও৷ এই পরিস্থিতিতে রাজ্যগুলিকে জিএসটি ক্ষতিপূরণ দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। এরপরই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠান মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, এই সিদ্ধান্তে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা হচ্ছে৷ এর ফলে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের সংঘাত ঘটবে৷ জিএসটি বাবদ ক্ষতিপূরণ দিতে না পারায় রাজ্য সরকারগুলিকে বাড়তি ঋণ নিতে বলা হচ্ছে৷ আমরা এই প্রস্তাব মানতে নারাজ৷
এদিন জেইই নিয়েও কেন্দ্রের প্রতি উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, ছাত্রছাত্রীরা খুবই সমস্যার মধ্যে রয়েছেন৷ কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে বহু ছাত্রছাত্রীকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে৷ অধিকাংশ পড়ুয়াই জেইই পরীক্ষায় বসার সুযোগ পর্যন্ত পাননি৷ সংবাদপত্রের রিপোর্ট অনুযায়ী, ৫০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় বসতে পারেননি৷ করোনা আবহে কেন পরীক্ষা নেওয়া হল? প্রশ্ন তোলেন মমতা৷
আরও পড়ুন- বাড়িতে 4G টাওয়ার বসিয়ে আয় করতে চান? ফাঁদে পা দেওয়ার আগে সাবধান
তিনি আরও জানান, করোনা পরিস্থিতির জেরে আমাদের রাজ্যে ৭৫ শতাংশ ছাত্রছাত্রী জেইই পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে পারেননি৷ বঞ্চিত হতে হয়েছে ছাত্রছাত্রীদের৷ তিনি বলেন, ‘‘কটা দিন পরীক্ষা পিছলে কী ক্ষতি হত? এত জেদ কেন? এত অহংকার কীসের? ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করার অধিকার কে দিয়েছে?’’ তাঁর কথায়, ছাত্ররা একবারও বলেনি তাঁরা পরীক্ষা দেবে না৷ তাঁদের আর্জি ছিল পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরীক্ষার দিন পিছিয়ে দেওয়া হোক৷ কিন্তু সে কথা শোনা হয়নি৷ যার মাশুল গুণতে হচ্ছে ৭৫ শতাংশ ছাত্রছাত্রীকে৷ যাঁরা পরীক্ষায় বসতে পারেননি তাঁদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত গোটা বিষয়টি পুনরায় খতিয়ে দেখা৷ কোন কোন রাজ্যে কতজন পড়ুয়া পরীক্ষায় বসতে পেরেছেন, তা দেখা হোক৷ তাঁদের কথা ভেবে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক৷