সিউড়ি: নিজের বুথের বেহাল রাস্তার দাবি তুলে ধরতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ বেহাল হয়ে পড়ল সিউড়ি ২ নম্বর ব্লকের দমদমা গ্রাম পঞ্চায়েতের মাঝিগ্রামের বুথ সভাপতি গণেশ রায়ের। ১৯৯৮ সাল থেকে রাজনীতিতে থাকা গণেশবাবু বীরভূম তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ব্লক প্রতিনিধি সম্মেলনে যান। সেখানে তিনি এলাকার মানুষের দাবি দাওয়া তুলে ধরতে গিয়ে খোদ জেলা সভাপতির সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন।
গণেশবাবুর দাবি মাঝিগ্রাম থেকে হাতোড়া যাওয়ার গ্রামের প্রধান রাস্তাটির হাল একেবারে খারাপ। গ্রামের মানুষ নিত্যকার সমস্যা এই রাস্তা এলাকায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভের কারণ। তাঁর দাবি প্রধান রাস্তাটিতে সিপিএমের আমলে সাইকেল চললেও এখন তা মানুষের যাতায়াতের অযোগ্য। তাঁর আরও দাবি গ্রামের মানুষ রাস্তা ছাড়াও শৌচালয়ের কাজ নিয়েও দলের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ।
একের পর এক এই দাবি প্রসঙ্গ তুলতে থাকায় তাঁর বচসা বেধে যায় অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে। একসময় অনুব্রতবাবু তাঁকে বলেন, যতই দেওয়া হোক তাঁকে খুশি করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন এভাবে তিনি ভোট করতে পারবেন না। তৃণমূলের প্রকল্পগুলির প্রসঙ্গ তুলে তিনি বারবার গণেশবাবুকে প্রশ্ন করতে থাকেন সেগুলি বাম আমলে ছিল কিনা। গণেশবাবু সে প্রসঙ্গে না বলতেই অনুব্রতর পরের প্রশ্ন ছুটে আসে- আর কী চাই?
একুশের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর মাসে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ডাকে জেলার বিভিন্ন পঞ্চায়েতের বুথ ভিত্তিক কর্মীসভার আয়োজন করা হয়েছে। আর এই প্রথম কর্মী সভা ছিল বুধবার সিউড়ি দু'নম্বর ব্লকের পুরন্দরপুর বান্ধব সমিতির মাঠে।
এদিন দমদমা, কেন্দুয়া এবং পুরন্দরপুর এই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বুথের কর্মীদের নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক করেন জেলা তৃণমূল সভাপতি। এই সভাতে এলাকার মানুষের দাবির কথা নেতার কানে তুলে তার সমাধান আদায়ের কথা ভেবেছিলেন প্রবীণ গণেশবাবু। দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে রাজনীতি করে আসা এই নেতা বোধহয় ভুলেই গেছিলেন রাজনীতির সেই অমোঘ মন্ত্র, রাজা যা বলেন তাই ঠিক।