রাজা মানেই রাবন। রাজত্ব মানেই লঙ্কা। বিষয়টা অনেকটাই এরকমই। সে শিক্ষক নিয়োগের এককালের রাজা পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে বীরভূমের ক্ষমতাচ্যুত রাজা অনুব্রত মণ্ডল হোক না কেন। হোয়াইট হাউসের প্রাক্তন রাজা ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষেত্রেও একই কথা উপযুক্ত। ফাড়াক শুধুই টাকা আর নথির। বা ক্ষমতারও।ফাড়াক আরও একটি বিষয়ের আর তা হল উন্নত ও উন্নয়নশীল প্রশাসন বা শক্তির। তাই হয়ত হোয়াইট হাউস থেকে সোজা পশ্চিমবঙ্গের অন্দরে গেলে তফাত্ টা চোখে পড়ে। মিলের মধ্যে একটাই আর তা হল – শাসক যখন চোর। সবমিলিয়েই প্রশ্ন সত্যিই কি শাসন হাতে পাওয়া মানেই লোভের সূচক বেড়ে যাওয়া।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কয়েক কোটির কেলেঙ্কারি থেকে বীরভূমের একদা বাঘ অনুব্রত মণ্ডলের গরু পাচার কাণ্ডে কয়েক কোটির লেনদেন, সব মিলিয়ে টাকাই শেষ কথা বলে এসেছে। বীরভূমের এককালে রক্ষক ব-কলমে শাসক, তিনি যখন পাচারকাণ্ডে গ্রেফতার, তখন দেখা গেল তাঁর সম্পত্তির বহর। যা দেখে চক্ষু চড়ক তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের। উন্নয়নশীল ভারতের কয়েক কোটি মানুষের বসবাসের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের লাল মাটির জেলা বীরভূমে বসেই অনুব্রত মণ্ডলের বিস্তৃত সাম্রাজ্যের ইতিকথা শেষ না হওয়ার মতোই।
ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে ছিলেন আমেরিকার প্রথম তালিকায় থাকা ব্যবসায়ী।হোয়াইট হাউসের মসনদে বসার পর নতুন করে টাকা নয় বরং ট্রাম্পের কাছে একনায়ক মনোভাব ছিল বেশি আকর্ষনীয়। বিশ্লেষকদের মত, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসডিন্ট হিসেবে হোয়াইট হাউসে নিজের একচ্ছত্র ক্ষমতার দামামা বাজিয়েছিলেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করেই হয়ত উদ্বাস্তু ইস্যুতে পাঁচিল তুলেছিলেন বিভেদের। প্রেসিডেন্ট পদ হারানোর পর সামনে এল হোয়াইট হাউস থেকেও চুরি করেছেন ট্রাম্প। না টাকা বা গয়না নয়, ট্রাম্প নাকি আমেরিকার নিরাপত্তা সংক্রান্ত নথি চুরি করে নিজের ফ্লোরিডার বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছেন। ১০০ নথি চুরির অভিযোগ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে।
নথি ও টাকার মধ্যে ফাড়াক অনেক। যেখানে তিহার জেলে বসে নিজের অসুস্থতাকে সামনে রেখে বার বার অনুব্রত আর্জি শাস্তি কমানো হোক। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আর্জি তিনি দোষ করেননি। ট্রাম্পের সাফ কথা, বাইডেন দুর্নীতিগ্রস্ত, তাই তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ। অর্থাত্, শাসক ক্ষমতা হারিয়ে টাকা, দুর্নীতি, কেলেঙ্কারির মাঝেও বলে ওঠেন চুরি তো তাঁরা করেননি। প্রশ্ন ওঠে, তাহলে চুরি করল কে? আম আদমি?