নিজস্ব প্রতিনিধি, ক্যানিং: কেরলের ব্যাকওয়াটার্সে বসন্তে ওনামের সময় হয়ে থাকে নৌকা দৌড়। জলে জঙ্গলে ভরা ব্যাকওয়াটার্স দিয়ে সর্পিল গতি চলা বড় বড় নৌকা একে অন্যের সঙ্গে গতির প্রতিযোগিতায় তাক লাগিয়ে দেয় মানুষকে। নদী নালায় ভরা বাংলায় এবার সেই নৌকার দৌড়ের দেখা মিলল দক্ষিণ ২৪ পরগনার নিকারীঘাটা অঞ্চলে বোগরামারি গ্রামের ঠাকুরানি খালে।
গ্রামবাসীদের উদ্যোগে একদিনের এক অনবদ্য বাইচ বা নৌকা প্রতিযোগিতা হয়ে গেল বৃহষ্পতিবার দুপুরে। প্রতিযোগিতার শর্ত হল, একসঙ্গে দুই বা তার বেশি নৌকা খালের মধ্যে দিয়ে হাল বেয়ে মাঝিরা নিয়ে যাবেন নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রায়। যে নৌকাটি সবচেয়ে বেশি গতিতে নির্দিষ্ট সীমানা অতিক্রম করবে সেই নৌকা জয়ী ঘোষিত হয়। তবে প্রতিযোগিতা দেখতে আসা মানুষের মধ্যে করোনা সচেতনতার বিন্দুমাত্রও দেখা মেলেনি এদিন।
অষ্টম বর্ষের এই বাইচ খেলাকে ঘিরে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের হাজার হাজার মানুষজন ভীড় জমান মাতলা নদীর এক শাখানদী এই ঠাকুরানি খালের দুই তীরে। এবছরের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে ১৪ টি নৌকাসহ ১৪০ জন মাঝি। গ্রামবাসী আবুল কাসেম মোল্লা, আলাউদ্দিন মোল্লা বলেন করোনা আবহ চলায় দীর্ঘদিন ধরেই সাধারণ মানুষজন মনের কষ্টে সময় কাটাচ্ছেন। রুজি রোজগারের ঠিকানা নেই তাই সাধারণ মানুষের মধ্যে শান্তি নেই।
প্রত্যন্ত গ্রাম্য এলাকায় বসবাস ফলে সারা বছরে তেমন কোন অনুষ্ঠান বা খেলাধূলা হয় না। এর ওপর করোনার দাপটে খেলাধুলা একপ্রকার প্রায় বন্ধ রয়েছে। হতাশা থেকে রেহাই পেতে গ্রামের মানুষজন একত্রিত হয়ে যাতে আনন্দ উপভোগ করতে পারে সেজন্য বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
প্রতিযোগিতার শেষে প্রতিযোগিতায় জয়ীদের হাতে আর্থিক পুরস্কার ও সুদৃশ্য ট্রফি তুলে দেন আয়োজক কমিটির কর্মকর্তারা। করোনা আতঙ্কে একেই জীবন্মৃত অবস্থা মানুষের। তার মধ্যেই কিছুটা হলেও প্রাণশক্তি বাড়ানোর উদ্যোগেই এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হলেও উদ্যোক্তারা সেভাবে করোনা বিধির প্রয়োজনীয়তা যে অনুভব করেননি তা কিন্তু এদিন দেখতে পাওয়া গেল। কোনও বিধি না মেনেই গায়ে গায়ে মিশে প্রতিযোগিতা দেখতে ভিড় করেন মানুষজন। এমনকি মুখে মাস্কও ব্যবহার করেননি অধিকাংশ মানুষই।