কলকাতা: করোনার জেরে যানবাহন চলেনি টানা ৩ মাস। এরপর আনলক পর্বে তা চালু হলেও আগের মতো মিলছে না যাত্রী৷ এই পরিস্থিতিতে ওলা উবেরের মতো অ্যাপ ক্যাবগুলির চালকরা পড়েছেন সমস্যায়৷ যাত্রী তো হচ্ছেই না, এদিকে ডিজেলের দাম বাড়ছে উত্তরোত্তর। অ্যাপ ক্যাব কোম্পানিগুলিকে চালকদের প্রতি যাত্রায় ২৫ শতাংশ শতাংশ কমিশন দিতে হচ্ছে। ফলে চূড়ান্ত আর্থিক সমস্যার শিকার হয়েছেন তাঁরা। এই নিয়ে কিছু দাবিদাওয়া পেশ করে আজ উবের দফতরে বিক্ষোভ দেখায় কলকাতা ওলা-উবের অ্যাপক্যাব অপারেটর অ্যান্ড ড্রাইভারস ইউনিয়ন বা সিটু।
বর্তমানে সব মিলিয়ে গাড়ি চালিয়ে মাত্র ১০০ টাকাও রোজগার করা কঠিন হয়ে পড়ছে চালকদের। পাশাপাশি ২০ শতাংশ কোম্পানির কমিশন ও ৫ শতাংশ জিএসটি দিতে হচ্ছে তাঁদের। অন্যদিকে কোম্পানিগুলি গাড়ি স্যানিটাইজেশনের কাজও ঠিক মতো করছে না। বেশিরভাগ গাড়িতেই চালক ও যাত্রীদের মধ্যে কোনও আড়াল নেই। এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মত এখন সমস্ত সিটেই যাত্রীরা বসছেন। চালকের পাশের সিটেও যাত্রীদের বসাতে বাধ্য হচ্ছেন চালক। ফলে অনেক চালক সংক্রমিত হচ্ছে করোনায়। পাশাপাশি লকডাউনের সময় গাড়ি না চললেও রোড ট্যাক্স দিরে রাজ্য সরকারকে। এই সমস্ত একাধিক কারণেই চালকদের বেহাল অবস্থা।
এই সমস্ত কারণগুলির পরিপ্রেক্ষিতে আজ তাঁরা ইউনিয়নের পক্ষ থেকে উবের দফতরের সামনে হাজির হয়ে একাধিক দাবি পেশ করেন। তাঁদের দাবি, ১. ওলা উবের সহ সমস্ত অ্যাপ ক্যাবকে ২০ টাকা প্রতি কিমি হিসাবে ভাড়া দিতে হবে। ২. প্রতিটি ক্যাব চালককে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এবং কোম্পানির তরফে কোভিড বিমার অর্ন্তভুক্তি করতে হবে। ৩. অ্যাপ ক্যাব কোম্পানিগুলির কমিশন কমাতে হবে। এই বিষয়ে সরকারি হস্তক্ষেপ দাবি করেছে ইউনিয়ন। ৪. সংক্রমণ রুখতে অবিলম্বে সব গাড়িতে স্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি চালকের সঙ্গে যাত্রীর ব্যারিয়ার লাগাতে হবে। ৫. উবের কোম্পানি যাত্রীদের থেকে যে অতিরিক্ত ৬ টাকা বুকিং চার্জ নিচ্ছে, সেই তাকা দিয়ে চালকদের বোনাসের ব্যবস্থা করতে হবে। এবং ৬. অকারণে চালকদের আইডি ব্লক করা যাবে না।
কিন্তু ইউনিয়নের পক্ষ থেকে অফিসে অভিযান চালানোর পর দেখা যায় শহরের সমস্ত অফিস আজ বন্ধ রেখেছিল কোম্পানি। এমনকি ইউনিয়ন আগাম জানিয়ে রাখলেও কোম্পানির তরফে কোনও প্রতিনিধি অফিসে উপস্থিত ছিলেন না। ফলে ইউনিয়নের কথায়, চূড়ান্ত পর্যায়ে অসম্মান করা হয়েছে তাঁদের কোম্পানির পক্ষ থেকে। প্রায় দেড়শো চালক আজ এর ফলে পথ অবরোধ করে ক্ষোভ উগরে দেন। ইউনিয়ন এর সভাপতি ইন্দ্রজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘সমস্যার সমাধান না হলে আগামী দিনে বড় লড়াই হবে।’’ এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সংক্ষিপ্ত সভাও করা হয়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন, মানষ চৌধুরী, জয় বোস, মহম্মদ আজম ও সহ সম্পাদক মহম্মদ মনু সহ ইউনিয়নের একাধিক সদস্যরা।