করোনা-মুক্ত স্ত্রীকে ঘরে ফেরাতে নারাজ স্বামী, হতবাক এনআরএস কর্তৃপক্ষ

করোনা-মুক্ত স্ত্রীকে ঘরে ফেরাতে নারাজ স্বামী, হতবাক এনআরএস কর্তৃপক্ষ

efd500b3e7da0d50fca605de5cbb0a4b

 কলকাতা: করোনা সংক্রমণ যত বাড়ছে, ততই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে উঠেছে সাধারণ মধ্যবিত্ত জনতা৷ পরিস্থিতি এমন, দাম্পত্য জীবনে কার্যত ফাটল ধরেছে করোনা সংক্রমণের আতঙ্ক৷ পরিবারের বাকি সদস্যদের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে করোনামুক্ত স্ত্রীকে ঘরে আশ্রয় দিতে নারাজ স্বামী৷ খাস কলকাতায় এমন ঘটনায় তৈরি হয়েছে চরম বিতর্ক৷ গোটা বুঝে হতবাক এনআরএস কর্তৃপক্ষ৷

করোনা আক্রান্ত রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হলেও,  তাঁকে বাড়িতে ফিরে নিয়ে যেতে নারাজ পরিবার৷ উল্টে রোগীর স্বামী হাসপাতালে দাবি করেছে, তাঁর বাড়িতে মাত্র একটি ঘর৷ বাড়িয়ে রয়েছে দু’টি শিশু৷ ফলে স্ত্রী করোনামুক্ত হলেও তাঁকে তিনি বাড়িতে নিয়ে যেতে পারবেন৷ পাছে শিশুদের মধ্যেও করোনা ছড়িয়ে পড়ে৷ বরং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিকল্প কোনও থাকার ব্যবস্থা করে দিক৷ নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে৷

জানা গিয়েছে, বেলেঘাটার বরফকল এলাকার বাসিন্দা এক পৌঢ়ের স্ত্রী গত ৩০ আগস্ট করোনা আক্রান্ত হন৷ রিপোর্ট পজেটিভ মেলায় ভর্তি করা হয় এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে৷ দীর্ঘ চিকিৎসার পর করোনামুক্ত হয়েছেন ওই পৌঢ়া৷ করোনামুক্ত হওয়ার পর আজ তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা করা হয়৷ কিন্তু স্বামী রাজি না হয় আপাতত ওই রোগীকে হাসপাতালে রাখা হয়েছে৷ গোটা বিষয়টি হাসপাতালে স্বাস্থ্যভবনে খবর পাঠানো হয়েছে হাসপাতাল সূত্রে খবর৷

বেশ কিছুদিন স্ত্রী এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কোভিদ ওয়ার্ডে ভর্তি ছিলেন৷ তিনি করোনা মুক্ত হয়েছেন৷ আজ হাসপাতাল থেকে ছুটি লিখে দেওয়া হয়৷ হাসপাতাল থেকে তার করোনা মুক্ত হয়ে বাড়ি ফেরার কথা ছিল৷ কিন্তু, পরিবারের সদস্যরা রোগীকে বাড়িতে নিয়ে যেতে নারাজ৷ তার কারণ, তাঁদের বাড়িতে একটি মাত্র ঘর৷ সেই ঘরে দু’টি শিশু ও এক তরুণী থাকেন৷ সেখানেই থাকেন ওই দম্পতি৷ ফলে একটি ঘরের মধ্যে করোনামুক্ত স্ত্রীকে আইসোলেশনে রাখা সম্ভব নয়৷ ফলে, বিকল্প ঘরে ব্যবস্থা দাবি জানিয়েছেন ওই বৃদ্ধ৷ ইতিমধ্যেই তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে স্ত্রীকে থাকার ব্যবস্থা করে দাওয়ার আর্জি জানান৷ এনআরএস কর্তৃপক্ষের কাছে সাফ জানিয়ে দিয়েছে, এরকম কোন বন্দোবস্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করে দিতে পারবে না৷ তবে, বিষয়টি স্বাস্থ্য ভবনে জানানো হয়েছে বলে খবর৷

আতঙ্কিত স্বামী চাইছেন, যেহেতু তাঁরা একটিমাত্র ঘরে থাকেন, ফলে, করোনামুক্তি স্ত্রীকে নিয়ে দুই শিশু ও এক তরুণী-সহ থাকতে পারবেন না৷ যদি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিছুটা নমনীয় হয়ে স্ত্রীকে আরও কয়েকদিন রেখে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়, তাহলে বাকিদের সংক্রমণের আশঙ্কা কমতে পারে৷ কেননা, করোনা মুক্ত হওয়ার পরও নতুন করে সংক্রমণের নজির এর আগেও রয়েছে৷ কোন রকম সেফ হোমে ব্যবস্থা করে দেওয়া যায় কি না, তার আর্জিও হাসপাতালে জানিয়েছেন তিনি৷ তবে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তারা এই ব্যবস্থা করে দিতে পারবে না৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *