রান্নাপুজোর আগেই বাঙালির ঘরে পদ্মার ইলিশ, আসবে আরও ১৪৩৮ মেট্রিক টন

রান্নাপুজোয় ইলিশ মাছ একটি বাধ্যতামূলক পদ বললে ভুল হয় না। অনেকের আবার জোড়া ইলিশ রাঁধবার নিয়ম থাকে। গতকাল, সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার পেট্রাপোল সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ থেকে বাংলায় এসেছে ১২ মেট্রিক টন পদ্মার ইলিশ। পাশাপাশি আরও ১৪৩৮ মেট্রিক টন পদ্মার ইলিশ ঢুকবে বাংলায় পর্যায়ক্রমিক ভাবে।

 

‌কলকাতা: এ বছর শুরু থেকেই সময়টা খুব খারাপ যাচ্ছে সবার। করোনা-লকডাউনের লকডাউনের ফলে রাজ্য তথা দেশের আর্থিক কোষাগার অনেকটাই ধাক্কা খেয়েছে। সবচেয়ে দুঃখজনক গোটা আবিশ্ব জুড়ে কয়েকলক্ষ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন অতিমারীর জেরে। কিন্তু এসবের বাইরে বাঙালির উৎসবের দিন শুরু হচ্ছে। আগামী বৃহস্পতিবার বিশ্বকর্মা পুজো এবং রান্নাপুজো এবছর একই সঙ্গে পালন হচ্ছে। হিন্দুশাস্ত্র মতে রান্নাপুজোয় রান্না করে রাখতে হয় আগের দিন রাতেই। আর রান্নাপুজোয় বাঙালির অন্যতম প্রিয় খাদ্য ইলিশ মাছ। প্রতি বছরের মতো এবছরেও বাংলাদেশ থেকে ইলিশ এসে গিয়েছে বাংলায়। তাই হাজার যন্ত্রণার মধ্যেও সুখবর একটাই খুব জমিয়ে পুজো না হলেও সুন্দর সুন্দর পদ তো থাকবেই রান্নাপুজোর উৎসবে।

রান্নাপুজোয় ইলিশ মাছ একটি বাধ্যতামূলক পদ বললে ভুল হয় না। অনেকের আবার জোড়া ইলিশ রাঁধবার নিয়ম থাকে। গতকাল, সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার পেট্রাপোল সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ থেকে বাংলায় এসেছে ১২ মেট্রিক টন পদ্মার ইলিশ। পাশাপাশি আরও ১৪৩৮ মেট্রিক টন পদ্মার ইলিশ ঢুকবে বাংলায় পর্যায়ক্রমিক ভাবে। সুতরাং আসন্ন বাঙালির প্রাণের পুজো দুর্গাপুজোয় পেটপুজোর ক্ষেত্রে ইলিশের ভাটা দেখা যাবে না। বাড়িতে বসে কিংবা সোশ্যাল ডিসটেন্স মেনে রেস্তোরাঁয় গিয়ে জমিয়ে ভাপার স্বাদ নিতে পারবে বাঙালি।

২০১৯ এর দুর্গাপুজোয় বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে পুজোর আগে ৫০০ মেট্রিক টন ইলিশ ঢুকেছিল। এবার তার পরিমান তিন গুণের কাছাকাছি। ইলিশ রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার ব্যবসায়ীদের আবেদনে সাড়া দিয়ে পরিমান এতটা বাড়িয়েছেন। লকডাউনের জেরে নদীপথ পরিষ্কার থাকায় পাশাপাশি এ বছর বেশ ভাল পরিমান বৃষ্টিপাত হওয়ায় আশা করা হয়েছিল নদীতে বেশ নধর ইলিশ ধরা পড়বে। কিন্তু দেখা গিয়েছে তা হয়নি। এবারে সেরকম কোনও ইলিশ পশ্চিমবঙ্গের নদীতে ধরা পড়েনি। ফলে বাজারে বর্তমানে ইলিশের দাম আকাশ ছোঁয়া। কিন্তু বাংলাদেশের পদ্মা থেকে আগত ইলিশের জেরে এবার সেই আশা পূরণ হতে চলেছে বাঙালির। পুজোয় পাত পেড়ে ইলিশের স্বাদ নেওয়ার তোরজোর বাঙালি এবার শুরু করল বলে।

পদ্মার পাশাপাশি মেঘনা ও যমুনা নদীতেও এবছর প্রচুর পরিমানে 'হিলসা' ধরা পড়েছে। অন্যান্য বছর গুলির তুলনায় এবছর এত বেশি পরিমান ইলিশ পাওয়ার জন্যে আদতে বৃষ্টিপাত এবং লকডাউনই দায়ী। বাংলাদেশের বাজারে বর্তমানে ইলিশের দামও খুব কম। ৮০০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিকোচ্ছে। এর কম ওজনের ইলিশের দাম মাত্র ৬০০ টাকা। বাংলাদেশের মোট ৯ জন ইলিশ রপ্তানিকারককে সরকার অনুমোদন দিয়েছে বাংলায় ইলিশ রপ্তানির জন্যে। তাহলে আর দেরী কেন আজ ও কাল দু'দিন সময় আছে, সোশ্যাল ডিসটেন্স বজায় রেখে ও মাস্ক পরে বাজারে ইলিশ কিনতে শুরু করে দিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ten + 13 =