ট্রেনে-বাসে নয়, এখানকার মানুষ অফিসে যান প্রাইভেট প্লেনে চেপে! কোথায় আছে এমন দেশ?

ট্রেনে-বাসে নয়, এখানকার মানুষ অফিসে যান প্রাইভেট প্লেনে চেপে! কোথায় আছে এমন দেশ?

কলকাতা: সকালের ব্যস্ততম সময়৷ অফিস যাওয়ার তাড়াহুড়ো৷ এরই মাঝে রাস্তায় লম্বা যানজট৷ এদিকে, তীব্র গরমে ঘেমে নেমে একাকারকাণ্ড৷ ট্রেনে-বাসে একেবারে বাদুর ঝোলা অবস্থা৷ সেই সময় অনেকেরই মনে হয় নিজের একটা গাড়ি থাকলে ভালোই হত৷ বড় বড় শহরে অনেকেই প্রাইভেট গাড়ি নিয়ে যাতায়াত করেন৷ রাস্তার পাশে সারি দিয়ে গাড়ি দাঁড়ানোর ছবি আমাদের অচেনা নয়৷ শহর কলকাতা তো বটেই, দেশ-বিদেশের যে কোনও বড় শহরেই এমন দৃশ্য আকছাড় দেখা যায়৷ কিন্তু রাস্তার ধারে কখনও সারি দিয়ে বিমান দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছেন? ভাবছেন, এমন আবার হয় নাকি? রুপোলি পর্দার কোনও গল্প হবে হয়তো! শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও, বাস্তবে এমন একটি শহর কিন্তু রয়েছে যেখানকার বাসিন্দারা বাড়ি থেকে বেরিয়ে গাড়িতে ওঠেন না৷ বরং বিমানে চেপে যান অফিস-কাছারি৷ 

রাস্তার ধারে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা সেই বিমানের ছবি অন্তর্জালে ভাইরাল। তবে বলে রাখি, এই বিমানগুলি কিন্তু কোনও সংস্থার নয়। বরং স্থানীয় বাসিন্দাদের নিজস্ব মালিকানাধীন৷ এই শহরের বাসিন্দারা প্রাইভেট গাড়ির মতোই ব্যবহার করে থাকেন নিজস্ব বিমান। কিন্তু, কোথায় আছে এমন জায়গা?

ক্যালিফোর্নিয়ার ক্যামেরন এয়ারপার্ক হল, এমন এক শহর যেখানকার বাসিন্দারা প্রায় সকলেই প্রাইভেট জেটের মালিক। যাতায়াতের সুবিধান জন্য তাঁদের বাড়ির সামনে দাঁড় করানো থাকে একটি করে প্রাইভেট বিমান। ক্যালিফোর্নিয়ার সেই শহরটিও সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। বাইরের মানুষ বিনা অনুমতিতে সেখানে পা রাখতে পারেন না। স্থানীয় কোনও বাসিন্দা বাইরের কাউকে আমন্ত্রণ জানালে, তবেই সেখানে প্রবেশ করা যায়।

কিন্তু কেন ক্যামেরন এয়ারপার্ক আর পাঁচটা জায়গার থেকে আলাদা? কেন এমন নিয়ম? আসলে এর পিছনে লুকিয়ে রয়েছে এক ইতিহাস। জানা যায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকার বেশ কয়েক জায়গায় এয়ারফিল্ড তৈরি করা হয়েছিল। অপরিবর্তিত সেই এয়ারফিল্ড বা সামরিক বিমান ঘাঁটিগুলি দিয়েই পরে রেসিডেন্সিয়াল এয়ার পার্ক গড়ে তোলা হয়। এভাবেই গড়ে ওঠে ক্যামেরন এয়ারপার্ক৷ অবসরপ্রাপ্ত মিলিটারি পাইলটদের জন্যই ওই এয়ারপার্ক তৈরি করা হয়েছে। প্রথমে গুটিকয়েক পাইলট থাকলেও, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাইলটদের সংখ্যা অনেকটাই বেড়ে যায়। 

১৯৬৩ সালে গড়ে ওঠে এই শহর। বর্তমানে ক্যামেরান এয়ারপার্কে থাকেন ১২৪ জন বাসিন্দা৷ মোটামুটি সকল বাসিন্দার কাছেই রয়েছে বিমান ও হ্যাঙ্গার।‌ বাড়ির দোরগোড়া থেকে বিমান যাতে কোনও বাধা ছাড়া উড়তে এবং নামতে পারে, সেই জন্য এখানকার রাস্তাও ১০০ ফুট চওড়া করা হয়েছে। টিকটক ভিডিয়োর মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ক্যামেরন এয়ারপার্কের কথা। এছাড়া নিকসন ও তাঁদের সহযোগীদের ক্যামেরন এয়ারপার্ক নিয়ে একটি ইউটিউব ভিডিয়োও ইন্টারনেটে ভাইরাল।