আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব! যাবজ্জীবন সাজা শুনে হুংকার স্বামী খুনে দোষী অনিন্দিতার

আমি এর শেষ দেখে ছাড়ব! যাবজ্জীবন সাজা শুনে হুংকার স্বামী খুনে দোষী অনিন্দিতার

নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: আইনজীবী রজত দে হত্যা মামলায় অবশেষে দোষী সাব্যস্ত স্ত্রী অনিন্দিতা দের বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণা করল আদালত৷ সাজা ঘোষণার পর এজলাস থেকে বেরিয়ে হুংকার অনিন্দিতার৷ আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে যাওয়ার প্রস্তুতি অনিন্দিতার আইনজীবীর৷

২০১৮ সালের নভেম্বরে নিউটাউনে নিজের ফ্ল্যাটেই খুন হন আইনজীবী রজত দে৷ নিহত রজত বাবুর পরিবারের তরফে সরকারি আইনজীবী বিভাস চ্যাটার্জী জানিয়েছেন, বিবাহ বিচ্ছেদ চেয়েছিলেন অনিন্দিতা। নিজেও পেশায় আইনজীবী ছিলেন তিনি৷ দিনের পর দিন বিবাহ বিচ্ছেদের দাবিতে স্বামীর ওপর চাপ সৃষ্টি করে আসছিলেন তিনি৷ রজত বাবু স্ত্রী-র এই দাবি মেনে নিতে পারেননি৷ আর তারই মূল্য দিতে হয় জীবন দিয়ে৷

গুগল সার্চ কৌশল রপ্ত করে স্বামীকে খুনের পর পুলিশকে সমানে বিভ্রান্ত করেন অনিন্দিতা৷ পরে, তদন্তে নেমে গোটা ঘটনার পর্দাফাঁস করে পুলিশ৷ গ্রেফতার করা হয় আইনজীবীর স্ত্রীকে৷ মঙ্গবার দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর আজ নিউটাউনে আইনজীবী খুনের ঘটনায় দোষী স্ত্রী অনিন্দিতাকে যাবজ্জীবনের সাজা ঘোষণা করে বারাসত আদালত৷ যাবজ্জীবনের সাজা ঘোষণা পরও একটু ভেঙে পড়েননি অনিন্দিতা৷ এজলাস ছেড়ে বেরনোর সময় অনিন্দিতা জানান, তিনি তাঁর জীবনের শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত এই মামলার বিরুদ্ধে লড়াই করবেন৷ তিনি নির্দোষ বলেও দাবি করে৷ সরাসরি উচ্চ আদালতে যাওয়ার জন্যও হুংকার ছাড়তে থাকেন তিনি৷ জানান, তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে৷ যেহেতু তাঁর ছোট্ট শিশু আছে, নতুন করে জীবন শুরু করার সুযোগ আছে, ফলে তাঁকে আরও একবার সুযোগ দেওয়া হোক৷ যাবজ্জীবনের সাজা হওয়ার পর অনিন্দিতার পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেখে স্তম্ভিত আদালত৷

জানা গিয়েছে, ৩৪ বছর বয়সী লম্বা চওড়া দেহের রজতকে মুখে চাদর চাপা দিয়ে, মোবাইল চার্জারের তার গলায় জড়িয়ে নৃশংসভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন স্ত্রী অনিন্দিতা। এরপর তদন্তে নেমে বিধাননগর পুলিশের হাতে উঠে আসে ষড়যন্ত্র এবং প্রমাণ লোপাটের মত তথ্য। সেবছরই ১ডিসেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়  অনিন্দিতাকে। এরপর এপর্যন্ত চলে দীর্ঘ শুনানি পর্ব। একত্রিশ জন সাক্ষী ছিলেন এই শুনানিতে। অবশেষে সোমবার স্বামীকে হত্যার দায়ে অনিন্দিতাকে দোষী সাব্যস্ত করে বারাসাত আদালত। ছেলেকে খুন করার অভিযোগে পুত্রবধূ অনিন্দিতা দোষী সাব্যস্ত হতেই আনন্দে কেঁদে ফেললেন রজত দে'র বাবা সমীর কুমার দে। ছেলের এই হত্যার জন্য অনিন্দিতার চরমতম সাজাই প্রাপ্য বলে উল্লেখ করেন তিনি। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 + 10 =