কলকাতা: অতিমারীর ফলে বিশ্বজুড়ে ৯ লক্ষ ৫৬ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এখনও চলছে করোনা তাণ্ডব। ভ্যাকসিন নিয়ে আশাবাদী মানুষ পেটের দায়ে করোনার ভয়কে সঙ্গী করেই কাজে বেরোচ্ছেন। যদিও সুস্থতার হার ক্রমবর্ধমান। আক্রান্তের সংখ্যা যেমন বেড়েছে তেমনই সুস্থও হচ্ছে একাধিক মানুষ প্রতিদিন। সম্প্রতি কন্টেনমেন্ট জোনের সংখ্যা কমল কলকাতা ও হাওড়া শহরে। অতিমারীর শুরুর দিকে হাওড়া জেলার করোনা সংক্রমণ হার ছিল শীর্ষে। এখন অনেকটাই সেই সংক্রমণ মাত্রা কমেছে। রাজ্য সরকারের মাইক্রোপ্ল্যানিং ও নাগরিক সচেতনতার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
সংক্রমণকে একটি নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে এনে ফেলতে সক্ষম হয়েছেন প্রশাসনিক কর্তারা। বর্তমানে শুধুমাত্র সেই সমস্ত এলাকাই কন্টেনমেন্ট জোন হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। রাজ্য প্রশাসন ও নাগরিকদের সচেতনতার সঙ্গে স্বাস্থ্য দফতর, পুলিশ কর্মী ও পুরনিগমের কর্মীদের মিলিত চেষ্টায় করোনা তাণ্ডবকে কিছুটা বেগতিক করা গিয়েছে। বর্তমানে কলকাতা পুরসভার একটি তালিকায়, মাত্র ৩টি কন্টেনমেন্ট জোন রয়েছে শহরে। যার মধ্যে বরো ৮’য়ের ৮৭ এবং ৯০ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে ১টি করে কন্টেনমেন্ট জোন। ১৬ নম্বর বরোর ১২৬ নম্বর ওয়ার্ডে টালিগঞ্জ ও রবীন্দ্র সরোবর এলাকার দুটি আবাসন কন্টেনমেন্ট জোন হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। ক্ষুদিরাম পল্লি ও সখের বাজার এলাকার দুটি বস্তির নাম ওই তালিকায় রয়েছে।
কলকাতা পুরসভা প্রধান ফিরহাদ হাকিমের কথায়, শহরে বর্তমানে করোনাকে অনেকটাই বসে আনা গিয়েছে। ৩টি মাত্র কন্টেনমেন্ট জোন রয়েছে শহরে। যেখানে তুলনামূলকভাবে সংক্রমণ মাত্রা বেশি। তাই সেগুলিকে গণ্ডিবদ্ধ করে সংক্রমণ আটকানোর প্রয়াস জারি রয়েছে। করোনা সংক্রমণের প্রথম থেকেই দেখা গিয়েছিল প্রশাসনের তরফে মাইক্রোপ্ল্যানিং করে সংক্রমিত এলাকা গুলিকে বাঁশ বা গার্ড্রেল দিয়ে ঘিরে ফেলে ওই সমস্ত এলাকার মানুষদের বাড়িতেই আটকে রাখা হচ্ছিল যাতে তাদের দেহরস থেকে ভাইরাস ছড়িয়ে না পড়ে। গত ১১ মে তারিখে শহরে কন্টেনমেন্ট জোনের সংখ্যা ছিল ৩৩৮টি, যা গত ৫ সেপ্টেম্বর নেমে গিয়ে হয় মাত্র ১টি।
বর্তমানে হাওড়া পুরসভা অঞ্চলে মোট ৫টি মাত্র কন্টেনমেন্ট জোন রয়েছে। জানা গিয়েছে, বর্তমানে বালি ও বেলুড় এলাকায় একটিও সংক্রমিত এলাকা নেই। আনলক পর্বে সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই হাওড়া জেলার জনজীবন ফিরছে স্বাভাবিক ছন্দে। এখন হাওড়ার উলুবেড়িয়া অঞ্চলেই কেবলমাত্র সংক্রমিত এলাকার সংখ্যা একটু বেশি, ৩৫টি। তালিকা থেকে জানা গিয়েছে, হাওড়া পুর এলাকার ১, ৬, ১৭, ২৯ ও ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডে এখন মাত্র ১টি করেই এলাকা কন্টেনমেন্ট জোন হিসাবে চিহ্নিত রয়েছে। বর্তমানে বিপুল সংখ্যায় করোনা পরীক্ষা চলছে। সংক্রমণের মাত্রাও কমছে। এই সফলতাকে ধরতে রাখতে হবে স্থানীয় প্রশাসন ও নাগরিকদের, এমনটাই মতবাদ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।