কলকাতা: দুর্গাপুজোর আর কয়েকদিন বাকি। প্রতি বছর দুর্গাপুজোর আগে বৈঠক ডাকেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবছরও তার ব্যতিক্রম হল না। কিন্তু এ বছরের পরিস্থিতি আলাদা। বক্তব্যের শুরুতে মমতা বলেন এ বছর বেশ কয়েকটি উৎসব হয়ে গেল। কিন্তু কোনও উৎসবে অভিযোগ আসেনি। এ বছর রাজ্যজুড়ে ৩৭ হাজার পুজো হচ্ছে। এর মধ্যে আবাসনের পুজো অবশ্য বাদ। রাজ্যে পুজো হচ্ছে ৩৪ হাজার ৪৪৭টি। কলকাতায় ২ হাজার ৫০৯টি। গোটা রাজ্যে মহিলা পরিচালিত ১ হাজার ৭০৬টি পুজো হচ্ছে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন এ বছর পুজোয় অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে। মানুষ যাতে কোনও বিপদে না পড়েন সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। উদ্যোক্তাদের তিনি খোলা মণ্ডপ তৈরি করার কথা বলেন। মায়ের চালা ঢেকে রেখে চারপাশ খালি রাখার কথাও বলেন। প্রয়োজনে ছাদ ঢেকে আপপাশটা খেলা রাখা যেতে পারে বা আশপাশটা ঢেকে ছাদ খেলা রাখা যেতে পারে। প্যান্ডেলে যেন শারীরিক দূরত্ব বজায় থাকে, সে কথাও বলেন তিনি। ভিড় এড়াতে আলাদা এন্ট্রি ও এগজিট করার কথা বলেন। সম্ভব হলে ভলেন্টিয়ারদের চক দিয়ে গোল করে যেন দর্শনার্থীদের জন্য দাগ কেটে দেন। প্যান্ডেলে হ্যান্ডন্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক মজুত রাখতে হবে। প্যান্ডেল থেকে ১ কিলোমিটারের বা অন্তত ৫০০ মিটারের মধ্যে গেলে মাস্ক ও স্যানিটাইজার বাধ্যতামূলক। পুলিশ ও ক্লাবে মাস্ক রাখার অনুরোধও করেন মুখ্যমন্ত্রী। পুজো প্যান্ডে বেশি ভলেন্টিয়ার রাখতে হবে এ বছর। তাঁদের জন্য মাস্ক ও স্যানিটাইজার ও শিল্ডেরর ব্যবস্থা করতে হবে ক্লাবগুলোকে।
পুজোর অতি গুরুত্বপূর্ণ হল অঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ ও সিঁদুর খেলা। ভিড় এড়াতে এ বছর মাইকে অঞ্জলি দেওয়ার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। সম্ভব হলে সাধারণ মানুষ ফুল ও বেলপাতা যেন বাড়ি থেকে নিয়ে যান। প্রসাদ বিতরণের সময়ও শারীরিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। একসঙ্গে অনেকজন মিলে সিদুর খেলা যাবে না। এর জন্য দু-তিনটে টাইমিং রাখতে হবে। প্রয়োজন পড়লে সবাইকে কয়েকটি গ্রুপে ভাগ করে দিতে হবে। পুলিশের সঙ্গে ক্লাবের কো-অর্ডিনেশন তৈরি থাকা বাঞ্ছনীয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন তিনি। কারণ বেশি লোক জমে গেলে কোভিড বাড়বে।
এদিন তিনি বলেন, পুরস্কার দেওয়ার জন্য যাঁরা কনভয় নিয়ে আসবেন তাঁদের কাছে অনুরোধ একসঙ্গে দুটোর বেশি গাড়ি নিয়ে ঢোকার কথা বলেন। সম্ভব হলে ভার্চুয়ালি দেখে নিতে হবে। বিশ্ব বাংলার তরফে এ বছর ভার্চুয়ালি দেখে প্রাইজ দেওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। দরকার হলে ভিডিওগ্রাফি করে নেওয়ার পরামর্শও দেন তিনি। এর জন্য সময় অ্যাডজাস্ট করার কথাও বলেন। সকাল ১০টা থেকে ৩টের মধ্যে পুরস্কার প্রদানকারীদের মণ্ডপে যাওয়ার সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সোশ্যাল অ্যাওয়ারনেস ক্যাম্পেনিং করতে বলেন মিডিয়াকে। ক্লাবগুলি যেন অ্যানাউন্সমেন্ট করেন হরদম।
বিসর্জনের সময় অল্প লোক যেন থাকে। একই দিনে যেন বিসর্জন না হয়। এ প্রসঙ্গে আইসি নজর রাখবেন। ঘাটগুলোতে আলোর বন্দোবস্ত থাকতে হবে ও ঘাটগুলি স্যানিটাইজ করে রাখতে হবে। কোনও এমার্জেনিসি হলে হেল্থ, পুলিশ, ফারার ব্রিগেড কো-অর্ডিনেশন থাকতে হবে। কোভিডের হেল্পলাইন নম্বর যেন এই সময় কাজ করে। হেল্থ ডিপারটমেন্ট ভলেন্টিয়ার বাড়াতে হবে।