কলকাতা: কৃষকরা ইচ্ছামত ফসল বিক্রি করতে পারবেন। তারা খোলা বাজারে বিক্রি করতে পারেন। তারা আপনার ঘরে এসেও বিক্রি করতে পারবেন। তারা স্বাধীনতা পাবেন। কেউ তাকে বাধ্য করতে পারবে না। মত প্রকাশ করেছেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। মোদি সরকারের কৃষিবিল নিয়ে সারা দেশে চর্চা চলছে। পশ্চিমবঙ্গেও চলছে। সায়ন্তনের বক্তব্য, ‘‘জনগণকে ভুল বুঝিয়ে, মিডিয়াকে ভুল বুঝিয়ে মিথ্যা প্রচার হচ্ছে। কেউ বলছেন নীল চাষীদের মত অবস্থা হবে বাংলার কৃষকদের। কেউ বলছেন, সাধারণ কৃষকরা চাষ করতে পারবেন না। আদানিরা চাষ করবে। কেউ বলছেন কৃষক বিদ্রোহ করতে হবে।’’
তিনি বলেছেন, “টিভি তে শুনলাম একটি বনধ ছিল। কিছুই বুঝতে পারিনি। অন্তত শিলিগুড়ি তল্লাটে কিছু বুঝতে পারিনি। তিনটে বিল সংসদে সংশোধন হয়েছে। আইনে পরিবর্তণ হয়েছে।” The farmers’ produce trade and commerce (promotion and fecilitation ) bill 2020 , The farmers (empowerment and protection ) agreement for price assurence and firm service bill 2020 , Essential Commodoties Amendment Bill 2020- এই তিনটি বিল নিয়ে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি প্রবল আপত্তি তুলেছে। এন ডি এ থেকে বেরিয়ে গিয়েছে অকালী দল। সংসদে এবং রাজ্যে এই বিলের বিরোধিতায় নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
সায়ন্তনের বক্তব্য, ‘‘বলা হচ্ছে, কৃষকদের খোলা বাজারে কৃষিপণ্য বিক্রি করতে বাধ্য করা হবে। আমি দায়িত্ব নিয়ে এই বিল পড়ে জানাচ্ছি যে এটা সর্বৈব মিথ্যা কথা। ১৯৯১ সালে আমাদের অর্থনীতিতে উদারিকরণ করা হয়েছিল। কৃষকদের পণ্য বিক্রি করা নিয়ে যে পরাধীনতা ছিল, সেই শিকল থেকে তাদের মুক্ত করা হল। তারা যেখানে চাইবে, সেখানে বিক্রি করতে পারবেন। তারা যদি কৃষক মণ্ডিতে চান তাহলে সেখানে বিক্রি করতে পারবেন। তারা খোলা বাজারে বিক্রি করতে পারেন। তারা আপনার ঘরে এসেও বিক্রি করতে পারবেন। কেউ তাকে বাধ্য করতে পারবে না৷’’
সায়ন্তনের দাবি, ‘‘দুর্ভাগ্য হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের আশ্রিত কিছু ফোঁড়ে, যাদের অন্য ভাষায় দালাল বলা হয়, তারা কৃষকদের কম দামে পণ্য তাদের কাছে বিক্রি করতে বাধ্য করে। সেই পণ্য তারা চওড়া দামে খোলা বাজারে বিক্রি করে। বঙ্গের অধিকাংশ কৃষক প্রান্তিক কৃষকের তালিকায় আসতে পারে। তারা গরীব। তৃণমূলের গুণ্ডা এবং ফোঁড়েদের ভয়ে তটস্থ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তাদের জন্য কিছুই করতে পারেনি।’’
বিজেপি দাবি করেছে, এবছর মার্চ-এপ্রিল মাসে বঙ্গের আলু চাষিরা কিলো প্রতি ৮ – ১০ টাকা দাম পেয়েছে। খোলা বাজারে তা ৪০ টাকা কিল বিক্রি হয়েছে। এদিকে পশ্চিমবঙ্গ আলু উৎপাদনে দেশের অন্যতম সেরা। মধ্যস্বত্বভোগী, ফোঁড়েদের দৌলতে প্রতি কিলোতে ২০-২৫ টাকা বাড়তি যোগ হচ্ছে। যা আমি জনতার পকেটে চিমটি কাটছে। রাজ্যে প্রতিমাসে আলুর চাহিদা ৫ লক্ষ মেট্রিক টন। অর্থাৎ প্রতি কিলোতে ২০ টাকা বাড়তি যোগ হলে তা হয় ১০০০ কোটি। বলা যেতে পারে, পশ্চিমবঙ্গে আলু কেলেঙ্কারি চলছে – দাবি বিজেপির। মোদি সরকারের এই আইনগুলির ফলে তা বন্ধ হবে৷