কলকাতা: সদ্য জেল থেকে মুক্তি পেয়ে তৃণমূলের গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতে স্থান পেয়েছেন জঙ্গলমহলে একাদা ‘বেতাজ বাদশা’ ছত্রধর মাহাত৷ রাজনীতিতে উত্থান ঘটলেও বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না জঙ্গলমহলের তৃণমূল নেতাকে কেন্দ্র করে৷ ছত্রধরের জেলমুক্তির পর পুরোদমে মাঠে নেমে পড়ছে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ৷ ২০০৯ সালের লালগড়ে ২ সিপিএম কর্মীকে খুনের ঘটনায় ছত্রধর-সহ ৫ জনকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়ে ইতিমধ্যেইন আর্জি জানিয়েছে এনআইএ৷ তদন্তের গতি বাড়তেই আচমকা করোনা আক্রান্ত ছত্রধর৷ ছত্রধরের করোনা রিপোর্টে প্রকাশ্যে আসতেই সংশয় প্রকাশ করে ফের কোভিড পরীক্ষার আর্জি জানিয়েছে এনআইএ৷
করোনা আক্রান্ত হওয়ায় খুনের মামলায় অভিযুক্ত ছত্রধর এনআইএ আদালতে হাজির হতে পারেননি৷ তাঁর সংস্পর্শে আসা বাকি ৪ জন অভিযুক্ত আদালতে গরহাজির৷ কেন হাজিরা এড়ালেন ছত্রধর? তৃণমূল নেতার আইনজীবী আদালতে ছত্রধরের মেডিক্যাল রিপোর্ট জমা দিয়ে দাবি করেছেন, করোরা কারণে ছত্রধর এখন গৃহপর্যবেক্ষণে৷ ফলে, তাঁর অনুপস্থিতিতে মামলার শুনানি চেয়েও করা হয়েছে আবেদন৷
ছত্রধরের আইনজীবীর এই দাবি ঘিরে সংশয় প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ৷ আদালতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, অভিযুক্তকে হোম অ্যারেস্ট করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মাধ্যমে তাঁর করোনা-সহ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক৷ সব পক্ষের সওয়ালের পর শুনানির দিন ধার্য হয়েছে আগামী ১২ অক্টোবর পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়৷ ওইদিন ছত্রধর সহ বাকি ৫ জনের চিকিৎসা সংক্রান্ত রিপোর্ট আদালতে পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক৷
এনআইএর তরফে ইতিমধ্যেই আবেদনের জানানো হয়েছে, ২০০৯ সালের লালগড়ে ২ সিপিএম কর্মীকে খুনের ঘটনায়৫ অভিযুক্তকে হেফাজতে নেওয়ার প্রয়োজন৷ প্রয়োজনে ইউএপিএ আইন লাগুর করার আবেদনও জানানো হয়৷ পৃথক পৃথক পিটিশনও দাখিল হয়েছে৷ এনআইএর পদক্ষেপে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে ছত্রধরের আইনজীবী জানিয়েছেন, অভিযুক্তরা গরহাজির৷ ফলে, এই ধরনের আবেদনের শুনানি আইনসিদ্ধ নয়৷
অন্যদিকে, এনআইএ বিশেষ আদালতে অভিযুক্তদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন করেছে? এনআইএ’র আইনজীবী আদালতে আগেই জানিয়েছিলেন, এই খুনের মামলার তদন্তের জন্য ওই ৫ জনকে হেফাজতে নেওয়াটা জরুরি৷ অভিযুক্তদের বক্তব্য শোনা প্রয়োজন৷ সম্প্রতি এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ২৭ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছে৷ স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে হাজিরও দিয়েছিলেন ছত্রধর৷ কিন্তু হঠাৎ অসুস্থ বোধ করায় আদালত ছেড়ে বেরিয়ে যান তিনি৷ পরে ইএম বাইপাসের বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকের পরামর্শও নেন তিনি৷ পরে, শুনানিতে আচমকা ছত্রধরের করোনা আক্রান্ত হওয়ার দাবি ঘিরে চরম সংশয় প্রকাশ করেছে এনআইএ৷ নতুন করে করোনা পরীক্ষারও আর্জি জানানো হয়েছে৷ খুনের মামলায় অভিযুক্তদের হেফাজতে চেয়ে এনআইএর আর্জির পরপর ছত্রধরের করোনা, হাজিরা এড়ানোর কৌশল? ভাবাচ্ছে আধিকারিকদের৷