নিজস্ব প্রতিনিধি, সাগর: সমুদ্রের জল দিয়েছিল রুটিরুজির সন্ধান। সেই সমুদ্রের জলই দিল শেষ বয়সে সঙ্গতি। এককথায় সমুদ্রের দৌলতেই ভাগ্য ফিরল বৃদ্ধা পুষ্পরানি করের। সমুদ্রের বিশালাকৃতি মাছ ধরে রাতারাতি ভাগ্যের চাকা ঘুরে গেল তাঁর। ঘটনাটি ঘটে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগর থানার চকফুলডুবি গ্রামে। বৃদ্ধা পুষ্পরানি করের স্বামী বেশ কয়েক বছর আগে মারা গেছেন।
নদীতে মাছ ধরে কোনমতে তার সংসার চলে। ছোট ভাই গোবিন্দ মালের কাছে থাকেন নিঃসঙ্গ পুষ্পরানি। একদিকে ঘূর্ণিঝড় আমফানের দাপটে বিধ্বস্ত সুন্দরবন অপরদিকে করোনার আবহে পুষ্পরানীর জীবনে নেমে আসে গভীর অন্ধকার। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তার। কোনরকমে সমুদ্রে মাছ ধরে রোজকার জীবনযুদ্ধে নিজেকে টিঁকিয়ে রাকার লড়াইটুকু চালাচ্ছেন তিনি। কিন্তু হঠাৎই বদলাল সময়, বদলে গেল পরিস্থিতি। সমুদ্রের একটি বিশালাকৃতির তেলে ভোলা মাছ ধরে রাতারাতি ভাগ্যের চাকা ঘুরে গেল পুষ্পরানি করের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে জাহাজে ধাক্কা লেগে সমুদ্রের একটি বিশাল আকৃতির তেলে ভোলা মাছ আহত অবস্থায় চলে আসে সমুদ্রের পাড়ে। ঠিক সেই সময় সমুদ্রে মাছ ধরতে জাল পেতেছিলেন পুষ্পরানি কর। সমুদ্রের চড়ে ওই বিশালাকৃতির তেলে ভোলা মাছকে আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। এরপর ভাই গোবিন্দ মালের সহায়তায় মাছটিকে বাড়িতে নিয়ে আসেন বৃদ্ধা।
তেলে ভোলা মাছটির ওজন মেপে দেখা যায় তা ৬০ কেজি। সবকিছু বাদ দিয়ে মাছের মোট ওজন হয় ৫৩ কেজি ৬০০ গ্রাম। ৬২০০ টাকা কিলো দরে মাছটি বিক্রি হয় কাকদ্বীপের বীরেন্দ্র মার্কেটের মা শিবানী মৎস্য আড়তে। ফলে মাছ বাজারে বিক্রি করে মোট ৩ লক্ষ ৩২ হাজার ৩২০ টাকা আয় হয় পুষ্পরানি করের। মাছ ধরে একসময় বেঁচে থাকার সামান্য জোগাড়টুকু করতে পেরেছিলেন পুষ্পরানি। সেই মাছই তাঁকে লক্ষ্মীর মুখ দেখালো শেষজীবনে।